ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রাজারহাটে কলেজের অধ্যক্ষের দুর্নীতির বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দফা তদন্ত শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০

রাজারহাটে কলেজের অধ্যক্ষের দুর্নীতির বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দফা তদন্ত শুরু

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ রাজারহাট সরকারি মীর ইসমাইল হোসেন কলেজে স্পেশাল ক্লাসের নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। আজ শনিবার দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের নির্দেশে কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সরেজমিনে তদন্ত করেন। অন্যদিকে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাত ও অনিয়মের একটি অভিযোগ মাউশির মহাপরিচালকের নির্দেশে রংপুর অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক ড. একেএম সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে ৩সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত করছেন। অভিযোগে জানা গেছে, জাতীয়করণকৃত মীর ইসমাইল হোসেন কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান জহুরুল ইসলাম উক্ত কলেজের অধ্যক্ষ সফিকুল ইসলাম রানার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা সহ প্রায় এক কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে গত বছরের নবেম্বর মাসে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নিকট একটি ও স্পেশাল ক্লাশের নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের ঘটনায় দিনাজপুর বোর্ডের চেয়ারম্যানের নিকট আর একটি অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, কলেজটি জাতীয়করণের পূর্বে জাতীয়করনের কথা বলে অধ্যক্ষ শিক্ষক/কর্মচারীগণের কাছ থেকে প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে বিভিন্ন দপ্তরে দেয়ার কথা বলে সমুদয় অর্থ আত্মসাৎ করেন। তিনি জ্যেষ্ঠতা লংঘন করে বাংলা ও দর্শন বিভাগে কনিষ্ট শিক্ষকদের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব অর্পনের ও অভিযোগ করা হয়। এছাড়াও অধ্যক্ষ সফিকুল ইসলাম রানা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে কলেজ জাতীয়করণ সংক্রান্ত ফাইল পাঠানোর নামে দু’দফায় ২ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকা এবং মাউশির সহকারি পরিচালককে উৎকোচ দেয়ার কথা বলে শিক্ষকদের নিকট থেকে আবারো ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা উত্তোলন করেন অভিযোগ করা হয়। এদিকে চতুর্থ বর্ষ অনার্স বিভাগের বাংলা, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, দর্শন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, হিসাববিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনাসহ ৬টি বিষয়ে প্রতি শিক্ষার্থীদের জন্য ২ হাজার ৭০০ টাকা সরকারি ভাবে নির্ধারণ করা হলেও অধ্যক্ষ নিয়মনীতি উপেক্ষা করে বিভিন্ন খাত দেখিয়ে শিক্ষার্থী প্রতি ৫ হাজার ৮০০ টাকা করে আদায় সহ প্রায় কোটি টাকা আত্মসাতের এবং বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ করা হয়। এরপ্রেক্ষিতে গত বছরের ২৩ডিসেম্বর থেকে রংপুর অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক ড. একেএম সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে ৩সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি অধ্যক্ষ সফিকুল ইসলাম রানার অনিয়মের তদন্ত শুরু করেন।যা এখনো তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানা যায়। অপরদিকে গতকাল শনিবার দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের নির্দেশে কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শামসুল আলম স্পেশাল ক্লাসের নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে করেন। মীর ইসমাইল হোসেন কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান জহুরুল ইসলাম জানান,অভিযোগের পক্ষে মাউশির তদন্ত কমিটির নিকট লিখিত বক্তব্য দিয়েছি। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকেও স্বাক্ষ্য প্রমাণ প্রদান করা হয়েছে। তিনি লিখিত বক্তব্য প্রদানের জন্য সময় দিয়েছেন। কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শামসুল আলম জানান,দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের নির্দেশে অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছি। অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত ব্যক্তি দু’পক্ষেই উপস্থিত তাদের স্বপক্ষে বক্তব্য দিয়েছেন। তবে আরো কিছু কাগজপত্রের বিষয়ে তারা দু’পক্ষেই সময় নিয়েছেন। মাউশির তদন্ত কমিটির কমিটির প্রধান অধ্যাপক ড. একেএম সিরাজুল ইসলাম জানান, ২৩ ডিসেম্বর থেকে রাজারহাট মীর ইসমাইল হোসেন কলেজে তদন্তের কাজ শুরু হয়েছে। শ্রীঘ্যই তদন্ত সম্পন্ন করে ঢাকায় রিপোর্ট প্রদান করবেন করা হবে। এ ব্যাপারে রাজারহাট সরকারি মীর ইসমাইল হোসেন কলেজের অধ্যক্ষ সফিকুল ইসলাম রানা তদন্তের সত্যতা স্বীকার করে জানান, নীতিমালা অনুযায়ী সব করা হয়েছে। তদন্তকারীকে আমি সব দেখিয়েছি।
×