ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পর্দা নামছে জনপ্রিয় ফায়ার প্রযুক্তি মেলার

প্রকাশিত: ০৭:২৪, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০

 পর্দা নামছে জনপ্রিয় ফায়ার প্রযুক্তি মেলার

ইলেকট্রনিক্স সেফটি এন্ড সিকিউরিটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ইসাবের উদ্যোগে এ বছর ৭ম বারের মত অনুষ্ঠিত হচ্ছে তিন দিনব্যাপী ইন্টারন্যাশনাল ফায়ার সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি এক্সপো-ইফসি-২০২০। গত ১৩ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি-২০২০ বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী, এমপি। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রি: জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন, এনডিসি। তিনদিনব্যাপী ইন্টারন্যাশনাল ফায়ার সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি এক্সপো-ইফসি-২০২০ এর ৭ম আসরে বরাবরের মত এবারও কো-পার্টনার বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স। সহযোগী পার্টনার র‌্যাপিড এ্যাকশান ব্যাটালিয়ান-র‌্যাব, এনএফপিএ-ইউএসএ, বিজিএমইএ, বিটিএমইএ, বেসিস, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি, ফায়ার ফাইটিং ইকিউপমেন্ট বিজনেস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ পাইপ এন্ড টিউবওয়েল মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন। এক্সপোতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি, তাইওয়ান, তুরস্ক, ইউএই, পর্তুগাল, স্পেন, পোল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ভারতসহ ২৫টি দেশের বিভিন্ন ব্রান্ডের ফায়ার সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি সরঞ্জাম পণ্য প্রদর্শন করে, এক্সপোতে মোট স্টল ছিলো ৭৫টি। ইফসি-২০২০ তে ফায়ার প্রোটেকশন, ফায়ার ডিটেকশন, সিসিটিভি এবং ভিডিও সার্ভিলেন্স, বিল্ডিং ম্যানেজমেন্ট, অ্যাক্সেস কন্ট্রোল, পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেমসহ, রেসকিউ এবং ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট এর অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তি প্রদর্শিত হয়। তিনদিনব্যাপি ইভেন্টটিতে সর্বশেষ প্রযুক্তি, পণ্য, নেটওয়াকিং এবং ব্যবহারকারীদের সচেতনতা, প্রতিযোগিতামূলক পণ্য পেতে এবং উপযুক্ত সরবরাহকারীদের সাথে পরিচিতি লাভের একটি সর্বোত্তম প্লাটফর্ম। মূল লক্ষ্য ছিলো ব্যবহারকারী এবং নির্মাতাদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরী করে এর মাধ্যমে অগ্নি নিরাপত্তা, নিরাপত্তা যন্ত্রপাতি ও সংশ্লিষ্ট ও সেবা বাজার আরও বেশি সহজলভ্য করা, যাতে নিরাপত্তা সুরক্ষার পাশাপাশি আগুনের ভয়াবহ বিপদ থেকে দেশ ও জাতি সুরক্ষিত থাকে । অন্যদিকে, এই প্রদর্শনীতে সামাজিক সচেতনতাও নিশ্চিত করে ইসাব। এই আয়োজনটিতে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক নির্মাতাগণের, ব্যবসায়ী এবং সিস্টেম ইন্টিগ্রেটারদের কাছ থেকে আশা ব্যাঞ্জক মেলায় সাড়া ফেলেছে। ২০১৯ সালের এক্সপোতে দর্শনার্থীদের সংখ্যা ছিল ৮০০০ হাজার। এই ধারাবাহিকতায় এবারের এক্সপোতে আমরা ১০,০০০ হাজারেরও বেশি দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে। দর্শনার্থীরা নাম রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে কোন ধরণের ফি ছাড়াই প্রদর্শনীতে অংশ নিতে নিয়েছে। এই মেলার কনভেনার জাকির উদ্দিন আহমেদ জনকন্ঠকে বলেন যে এই মেলার মাধ্যমে আমরা অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়ে সামাজিক সচেতনতা তৈরির প্রচেষ্টা করছি যা আগামী দিনে অব্যহত থাকবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা বিষয় নিয়ে আগামীতে আরও বড় কাজ করব আমরা। আমাদের স্বপ্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই মেলার উদ্ধোধন করবেন একদিন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের তথ্যমতে ২০১৯ সালে ছোট বড় মিলিয়ে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে মোট ২৪০৭৪টি। এতে নির্মম মৃত্যু হয়েছে ১৮৫ জনের আর আহত হয়েছেন ৫৮৬ জন। সম্পদহানী হয়েছে ৩৩০ কোটি ৪১ লাখ ২৮ হাজার ৭৪৪ টাকার। মানবসম্পদ ও অর্থসম্পদের এই বিশাল ক্ষতি অপূরনীয়। ক্রেতাদের চাপে তৈরি পোশাক শিল্পে অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করলেও এর ব্যবস্থাপনায় আরো দক্ষ হওয়া জরুরী বলে আমরা মনে করি। এছাড়া অন্যান্য শিল্প কারখানা সুউচ্চ ভবন থেকে শুরু করে বাসাবাড়িসহ সর্বত্রই অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার করা সময়ের দাবি। বর্তমান সরকারের অন্যতম সেরা উপহার ডিজিটাল বাংলাদেশ। প্রযুক্তির মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ ঘটিয়ে আধুনিক ও নিরাপদ জীবন উপহার দেয়াই যার প্রধান লক্ষ। এর সুফলও মিলেছে। তবে আধুনিক সিকিউরিটি ব্যবস্থা নিশ্চিত করার উদ্যোগ জোরালে ভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছেনা বলেই আমরা মনেকরি। সিলেট ও চট্টগ্রাম সিটিতে স্মার্ট সিটি বাস্তবায়নের কাজ হাতে নিলেও জনবহুল রাজধানীতে এই কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়নি। এ কার্যক্রম সঠিক ভাবে বাস্তবায়ন করলে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যেমন সহজ হবে, তেমনি নাগরিকরাও পাবেন নিরাপদ জীবন। তাই রাজধানীসহ দেশের সর্বত্রই সিকিউরিটি ব্যবস্থা জোরদার করে একটি সুরক্ষিত দেশ তৈরির পদক্ষেপ নেয়া এখন সময়ের দাবি। বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার এই পথে অগ্নি নিরাপত্তা ও সিকিউরিটি ব্যবস্থা নিশ্চিতে সবাইকে সচেতনতার সঙ্গে কাজ করার প্রচেষ্টা অব্যহত রাখতে হবে। এই বিষয়গুলো নিয়ে মেলায় আলোচনার ব্যবস্থা করা হয়।
×