ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

৮০৬ কোটি টাকার ৭ ক্রয় প্রস্তাব মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদন

প্রকাশিত: ১০:৫৯, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০

৮০৬ কোটি টাকার ৭ ক্রয় প্রস্তাব মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ রাশিয়া থেকে এক লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন এমওপি সার আমদানির প্রস্তাবসহ সাতটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ৮০৬ কোটি ৭৪ লাখ ১০ হাজার টাকা। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির পঞ্চম সভায় এ প্রস্তাবগুলোর অনুমোদন দেয়া হয়। সভা শেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজস্ব আদায় কমেনি। গত বছরের তুলনায় এ বছর এখন পর্যন্ত ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে আমরা লক্ষ্যমাত্রা বেশি করে ধরি, তাই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অর্জন কিছুটা কম। সভা শেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে সাতটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রস্তাবগুলো হলো- রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে রাশিয়ার জেএসসি ফরেন ইকোনমিক এ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় এক লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে সরকারের ব্যয় হবে ৩৯০ কোটি ৭৬ লাখ ১৫,০৫০ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের বাজার মূল্য ২৫৫.৫৫ মার্কিন ডলার। প্রস্তাবটি বাস্তবায়ন করবে বিএডিসি। তিনি বলেন, গোপালগঞ্জে এসেনসিয়াল ড্রাগস লিমিটেডের (ইডিসিএল) তৃতীয় প্রকল্প সিভিল কনস্ট্রাকশন এ্যান্ড প্লাম্বিং ওয়ার্কের অন্তর্গত নন টেন্ডার আইটেমের ভেরিয়েশন কাজের প্রস্তাব অনুমোদন। প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ চলাকালে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের নির্দেশনা মোতাবেক ডিজাইন, ড্রয়িং অনুযায়ী কাজের উপযোগিতা, সৌন্দর্য্য ও গুণগত মান বৃদ্ধি করাসহ কিছু নন টেন্ডার আইটেমের কাজ যুক্ত হওয়ায় ভেরিয়েশন বাবদ ৫ কোটি ১২ লাখ ৫৭ হাজার ৬৮৬ টাকা ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। মূল চুক্তিতে ছিল ৯৭ কোটি ২১ হাজার ৫১৫ টাকা। সর্বমোট প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১০২ কোটি ১২ লাখ ৭৯ হাজার ২০১ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে ইডিসিএল। বৈঠকে নেত্রকোনা-কেন্দুয়া-আঠারবাড়ি-ঈশ্বরগঞ্জ জেলা মহাসড়ক উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পটির পূর্ত কাজের প্রস্তাব অনুমোদন। যৌথভাবে কাজটি পেয়েছে তাহের ব্রাদার্স লিমিটেড, রানা বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেড ও মাজাহার এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেড। এতে মোট ব্যয় হবে ১১৫ কোটি ৫৯ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর। বৈঠকে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধীন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজি ফর দ্য ডেভেলপমেন্ট অব স্টাটিস্টিকস (এনএসডিএস) ইমপ্লিমেন্টেশন সাপোর্ট প্রজেক্টের ‘টিইউনিং পাটর্নারশিপ ফর ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজি ফর দ্য ডেভেলপমেন্ট অব স্টাটিস্টিকস ইমপ্লিমেন্টেশন সাপোর্ট প্রজেক্ট’ শীর্ষক পরামর্শক নিয়োগের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন। এতে ব্যয় হবে ৫৬ কোটি ৬৫ লাখ ২০ হাজার ৯৭৫ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। এলজিইডি গৃহীত জলবায়ু সহিষ্ণু অবকাঠামো প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় ‘ক্লাইমেট রিসাইলেন্ট লোকাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার সেন্টার’ এর জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন। যৌথভাবে এ্যামবেরো কনসালটিং জিএমবিএইচ লিড পার্টনার, কমো কনসাল্ট পার্টনার, ট্রেনিং এ্যান্ড টেকনোলজি ট্রান্সফার লিমিটেড পার্টনার (সাব কন্ট্রাক্টর প্রানোন গ্লোবাল লিমিটেড) কে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৬৭ কোটি ১৮ লাখ ৮২ হাজার ৮৯২ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর। একই প্রকল্পের আওতায় অপর একটি প্রস্তাবে ম্যানেজমেন্ট, ডিজাইন এ্যান্ড সুপারভিশনের জন্য পরামর্শক নিয়োগের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন। যৌথভাবে ফার্ম জিআইটিইসি-আইজিআইপি, জিএমবিএইচ (লিড পার্টনার), রিসোর্স প্লানিং এ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্স লিমিটেড এবং ডেভেলপমেন্ট ডিজাইন কনসালটেন্স লিমিটেডকে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৭৪ কোটি ৪১ লাখ ৩৫ হাজার ৯২৯ কোটি টাকা। এছাড়া শর্তসাপেক্ষে ঢাকা ওয়াসার আওতাধীন ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের একটি প্রকল্পে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগের প্রস্তাব সায় দিয়েছে সরকার। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ। মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয় বড় আকারের, যাতে এটি অর্জন করার জন্য সবাই চেষ্টা করে। এ বিষয়ে আমাদের প্রকাশনাগুলো দেখবেন, সারা বিশ্বের অবস্থা দেখবেন, তারপর বলবেন আমরা কেমন আছি। রাজস্ব আহরণ গত বছরের তুলনায় এ বছর কমেনি। আপনারা (সাংবাদিকরা) যে পদ্ধতিতে হিসাব করেন, সেই পদ্ধতিতে হিসাব করা নিয়ম না।’ ব্যাংক কোম্পানি আইনের খসড়ায় প্রস্তাব করা হয়েছে যে, প্রাইভেট ব্যাংকের ডিরেক্টর, এমডি, ডিএমডি নিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি নিয়োগ পর্ষদের মাধ্যমে অনুমোদন করলে তাদের নিয়োগ দেয়া হবে। নতুন ব্যাংক কোম্পানি আইনে এ-সংক্রান্ত ধারা সংযুক্ত হচ্ছে। এটি কি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে-এমন প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, খসড়া ব্যাংকিং কোম্পানি আইনের নতুন ধারা আছে একটি। ব্যাংকিং কোম্পানি আইনের খসড়াটি এখনও আমি পাইনি। আমার কাছে খসড়া এলে বলতে পারব।
×