ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

৪৫ ভাগ শেয়ার বিক্রি ও ইজারায় পরিচালনার বিধান রেখে সংসদে বিআরটিসি বিল পাস

প্রকাশিত: ০৭:৫৮, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০

৪৫ ভাগ শেয়ার বিক্রি ও ইজারায় পরিচালনার বিধান রেখে সংসদে বিআরটিসি বিল পাস

সংসদ রিপোর্টার ॥ জনগণের কাছে ৪৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রি এবং রাষ্ট্রায়াত্ব বিআরটিসি বাস বা ট্রাক দীর্ঘ মেয়াদে ইজারায় পরিচালনার বিধান রেখে সংসদে পাস হয়েছে ‘বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন আইন (বিআরটিসি) ২০২০’। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্বে একাদশ সংসদের ষষ্ঠ অধিবেশেন মঙ্গলবার বিলটি সংসদে স্থিরকৃত আকারে কন্ঠভোটে পাস হয়। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ‘রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন অর্ডিন্যান্স ১৯৬১’ রহিত করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন আইন ২০২০ বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন। এরআগে বিলের ওপর আনীত জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ, ফখরুল ইমাম, পীর ফজলুর রহমানের কয়েকটি সংশোধনী গ্রহণ করা হয়। তবে জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও অপর সংশোধনীর প্রস্তাব কন্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। বিলটি পাসের যৌক্তিতা তুলে ধরে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিআরটিসি একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। সাশ্রয়ী মূল্যে পরিবহণ সেবা প্রদান করে বিআরটিসি এরমধ্যে জনগণের আস্থা অর্জন করেছে। দেশের ৪২৮টি রুট ও ৫টি আন্তর্জাতিক রুটে বিআরটিসি পরিচালিত হচ্ছে। নতুন আরো দু’টি আন্তর্জাতিক রুট শীঘ্রই চালু হবে। বর্তমানে বিআরটিসিতে ১ হাজার ৮৩০টি বাস রয়েছে। এরমধ্যে ১ হাজার ৩৩২টি সচল রয়েছে। ভারতের লাইন অব ক্রেডিটে ১ হাজার ২৮টি নতুন বাস ও ৫শ’ ট্রাক কেনা হয়েছে। বিলে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন’-এর জন্য এক হাজার কোটি টাকা মূলধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই মূলধন একশ’ কোটি সাধারণ শেয়ারে বিভক্ত হবে। ৫১ শতাংশ শেয়ার সরকারের মালিকানায় থাকবে। অবশিষ্ট ৪৫ শতাংশ শেয়ার জনগণের কাছে বিক্রির বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া বিলে বিআরটিসি বাস বা ট্রাক দীর্ঘ মেয়াদে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে ইজারায় পরিচালনার বিধান রাখা হয়েছে। বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশের স্বাধীনতা উত্তর ক্ষতিগ্রস্থ ’দ্য ব্যাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন (বিআরটিসি)’ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রত্যক্ষ দিক নির্দেশনায় পুনগর্ঠিত হয়ে আজ এ পর্যায়ে এসেছে। এক্ষেত্রে উক্ত অর্ডিন্যান্সের অধীনে কর্পোরেশনের ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে ‘রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন অর্ডিন্যান্স ১৯৬১’ রহিত করে ‘বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন নামে নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। আগের আইনের ৩৫টি ধারা যুগোপযোগী করে ২৯ ধারা সমন্বয়ে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন আইনটি মন্ত্রিসভায় পাস হয়। বিলে সরকারের পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে এক বা একাধিক কোম্পানী গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। বিলে বাংলাদেশের যে কোন স্থানে বা বিদেশে কর্পোরেশনের অফিস, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, মেরামত কারখানা বা ডিপো স্থাপন করার বিধান রাখা হয়েছে। বিলে হরতাল পরিবহণ ধর্মঘট, জরুরী অবস্থা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রাষ্ট্রীয় জরুরী প্রয়োজনে, বিশ্ব ইজতেমা, মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ এবং অনুরূপ পরিস্থিতিতে বিশেষ পরিবহণ সেবা প্রদানের বিধান রাখা হয়েছে। বিলে মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ করে বাণিজ্যিকভাবে পরিচালনা লাভজনক নহে এরূপ বাস বা ট্রাক দীর্ঘ মেয়াদে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে ইজারায় পরিচালনার বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া বিলে ২৩ সদস্য বিশিষ্ট ‘বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন পরিচালনা পরিষদ’ গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। এতে স্থানীয় সরকার, মন্ত্রিপরিষদ, অর্থ, সড়ক পরিহবণ ও মহাসড়ক এবং জননিরাপত্তা বিভাগ, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, ডিটিসিএ, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, শেয়ার হোল্ডারদের প্রতিনিধি এবং প্রশাসনিক বিভাগের প্রতিনিধি থাকবেন।
×