ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

টাঙ্গাইলের সখীপুরে দুইবার পরীক্ষা দিয়েও ফলাফলে অনুপস্থিত ১৪ শিক্ষার্থী

প্রকাশিত: ০৪:০৭, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০

টাঙ্গাইলের সখীপুরে দুইবার পরীক্ষা দিয়েও ফলাফলে অনুপস্থিত ১৪ শিক্ষার্থী

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল ॥ বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) বিগত ২০১৭ সালের বিএ-বিএসএস কোর্সের চূড়ান্ত পরীক্ষায় বাস্তবে উপস্থিত থাকলেও ফলাফল শিটে টাঙ্গাইলের সখীপুর টিউটোরিয়াল কেন্দ্রের ১৪ শিক্ষার্থীকে এ বছরও অনুপস্থিত দেখানো হয়েছে। গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিএ-বিএসএস কোর্সের ফল প্রকাশ হলে অনলাইনে ১৪ শিক্ষার্থী শুধু ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে অনুপস্থিত দেখতে পান। এক বছর আগেও তাঁরা পরীক্ষায় অংশ নিলেও ফলাফল শিটে একই বিষয়ে তাঁদের অনুপস্থিত দেখানো হয়। এবারও অনুপস্থিত দেখানোয় তাঁরা ভেঙে পড়েছেন। ওই ১৪ জন টাঙ্গাইলের সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজ টিউটোরিয়াল কেন্দ্রের শিক্ষার্থী। জানা যায়, বিএ-বিএসএস কোর্সে ভর্তি হওয়া শতাধিক শিক্ষার্থী বিগত ২০১৮ সালে দ্বিতীয় সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেন। বিগত ২০১৮ সালের (২৭ ডিসেম্বর) প্রকাশিত ফলাফলে টিউটোরিয়াল কেন্দ্রের ১৪ শিক্ষার্থী অন্য সববিষয়ে কৃতকার্য হলেও শুধু ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে অনুপস্থিত দেখানো হয়। কেন্দ্রের হাজিরা শিটের উপস্থিতির প্রমাণ নিয়ে ১৪ শিক্ষার্থী বিগত ২০১৯ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা বিভাগে অভিযোগ করেন। অভিযোগের কোনো সুরাহা না হওয়ায় তাঁরা পুনরায় ওই বিষয়ের ফি জমা দিয়ে ফরম পূরণ করে পরের বছর পরীক্ষায় অংশ নেন। গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিএ-বিএসএস কোর্সের ফল প্রকাশ হলে তারা এবারও একই বিষয়ে অনুপস্থিত দেখতে পান। বারবার একই ধরনের ভুল হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বিপাকে ও চরম হতাশায় পড়েছেন। কেউ কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা বিভাগের এ উদাসীনতার বিরুদ্ধে মামলা করার কথাও ভাবছেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মোশারফ হোসেন, মিল্টন মিয়া, লোপা আক্তার, রুমা আক্তার ও লুৎফুন্নাহার লতা জানান, বিগত ২০১৮ সালে বাস্তবে পরীক্ষা দিয়েও ফলাফলে তাঁদের ১৪ জনকে অনুপস্থিত দেখানো হয়। উপস্থিতির প্রমাণ নিয়ে অভিযোগ করা হলেও কর্তৃপক্ষ কোনো সিদ্ধান্ত দেননি। সিদ্ধান্ত না দেয়ায় পরের বার অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তারা আবার এক বিষয়ে ফরম পূরণ করেন। এবারও আগের বছরের মতো তাঁদের অনুপস্থিত দেখানো হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, আমাদের অকৃতকার্য দেখালেও আমাদের কোনো দুঃখ ছিল না। আমরা পরীক্ষা ঠিকই দিই, অথচ আমাদের ফলাফল শিটে অনুপস্থিত দেখানো হচ্ছে। মিল্টন মিয়া নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমি এবার পাস করলে ৬ ফেব্রুয়ারি শেষ পরীক্ষার দিনে অনলাইনে শিক্ষক নিবন্ধন করতে পারতাম। বাউবির ভুলের কারণে আমাদের ভবিষ্যৎ জীবন নষ্ট হচ্ছে। সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজ টিউটোরিয়াল কেন্দ্রের সমন্বয়কারী আহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, দুই বছরই ১৪ শিক্ষার্থী ইসলামিক স্টাডিজসহ সব বিষয়েই পরীক্ষায় উপস্থিতির প্রমাণপত্র তাঁদের কাছে খুবইযত্নের সঙ্গে রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা বিভাগের ভুলের কারণে শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। তারা ও শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভিযোগ আমলে নিচ্ছে না। কিছু শিক্ষার্থীর ফলাফল শিটে অনুপস্থিত আর কিছু শিক্ষার্থীর ফলাফলের ঘরে পিআর (প্রবলেম রিলেটেড টু ওএমআর শিট ফিলাপ) লেখা পাওয়া যাচ্ছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-আঞ্চলিক পরিচালক হাফিজুর রহমান বলেন, গতবারের মতো এ বছরও ফলাফলে অনুপস্থিত দেখালে এটা খুবই দুঃখজনক। তবে এ ধরনের সমস্যা যাদের হয়েছে তাদের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর অনলাইনে অভিযোগ করতে হবে।
×