ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বৃষ্টি উপেক্ষা করে তাবিথের নির্বাচনী প্রচার

প্রকাশিত: ১১:০৩, ৩০ জানুয়ারি ২০২০

বৃষ্টি উপেক্ষা করে তাবিথের নির্বাচনী প্রচার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনী প্রচার চালান ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী তাবিথ আউয়াল। বুধবার বেলা সোয়া এগারোটায় বৃষ্টির মধ্যেই তিনি বারিধারা ডিওএইচএস, কালাচাঁদপুর ও নদ্দা এলাকায় গণসংযোগ করে নির্বাচনী প্রচার চালান। অপরদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী ইশরাক হোসেন দুপুরে সোয়া বারোটায় গোপীবাগের বাসায় সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেন। এ সময় তিনি নির্বাচন কমিশন নির্বিকার বলে অভিযোগ করেন। তাবিথ আউয়ালের নির্বাচনী প্রচার বুধবার বেলা সোয়া এগারোটায় বৃষ্টির মধ্যেই তাবিথ আউয়াল বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী সঙ্গে নিয়ে ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে বারিধারা ডিওএইচএস, কালাচাঁদপুর ও নদ্দা এলাকায় গণসংযোগ করে নির্বাচনী প্রচার চালান। এরপর তিনি গুলশান, ইউনাইটেড হাসপাতাল, উত্তর বাড্ডা, সুবাস্তু টাওয়ার, শাহজাদপুর, বাঁশতলা, ক্যাম্ব্রিয়ান স্কুল এ্যান্ড কলেজ, নূরের চালা এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় বিভিন্ন পথসভায় তাবিথ আউয়াল নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ করে বলেন, ভোটাররা যাতে কেন্দ্রে গিয়ে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন সেই পরিবেশ নিশ্চিত করুন। তিনি বলেন, যেভাবে ভোটারদের মধ্যে সাড়া পাচ্ছি তাতে ধানের শীষের বিজয় ঠেকানো যাবে না। বিজয়ী হওয়ার জন্য সব ধরনের শান্তিপূর্ণ প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি। আমরা ভোট কেন্দ্রে যাব, আমাদের পোলিং এজেন্টরা যাবেন, প্রার্থী যাবেন। তাবিথ বলেন, নির্বাচন কমিশন ভালভাবেই জানেন, অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ করতে গেলে কি কি পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয়। তাই সব পরিস্থিতিতে যেন ভোটাররা নির্ভয়ে ভোট দিতে পারে তা কমিশনকেই নিশ্চিত করতে হবে। ভোটারদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আজ বৃষ্টি ও প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও আমি ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি, তাদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। ভোটাররা বৃষ্টি ও শীত উপেক্ষা করে আমার কথা শুনছেন, আমাকে আশ্বস্ত করছেন। তাই সকল অবস্থায় আপনারা প্রস্তুত থাকবেন। ভয়ের কিছু নেই। আপনারা ধানের শীষে ভোট দেবেন, আপনাদের অধিকার চর্চা করবেন। নাগরিক দায়িত্ব পালন করবেন। তাবিথ বলেন, হামলা মামলার পরও আমরা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আছি। হামলা মামলা করে সরকার আমাদের নির্বাচন থেকে সরিয়ে দিতে চাইছে। তবে যেভাবে ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে, যদি কোন অপচেষ্টাও হয় জনগণই তার বিরুদ্ধে দাঁড়াবে। এরপর খিলবাড়ির টেক, নয়ানগর, কাঁঠালদিয়া, মহাখালী কাঁচাবাজার ও মগবাজার নয়াটোলা এলাকায় গণসংযোগ করেন তাবিথ আউয়াল। সেখান থেকে গুলশান-১ ডিএনসিসি মার্কেট ও শাহ সাহেব বাড়ির মাজার এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভা করেন তিনি। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদসহ অন্য নেতারাও ছিলেন। নির্বাচন নিয়ে এখন মানুষের মধ্যে তেমন আগ্রহ নেই- ড. মোশাররফ ইশরাকের বাসায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দলীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নির্বাচন মানেই দেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে তামাশা, প্রহসন ও কেন্দ্র দখল করে সিল মারার উৎসব। কখনও কখনও দিনের ভোট আগের রাতেই সম্পন্ন করে ফেলা। হরেক রকম কারসাজি ও তামাশায় পরিপূর্ণ এখন দেশের নির্বাচন। তাই নির্বাচন নিয়ে এখন মানুষের মধ্যে তেমন কোন আগ্রহ বা উচ্ছ্বাস নেই। ড. মোশাররফ বলেন, এবার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মনোনয়ন জমাদান এবং প্রচার শুরুর প্রথম থেকেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা ক্ষমতার অপব্যবহার, অব্যাহত আচরণবিধি লঙ্ঘন, আমাদের মেয়রপ্রার্থী ইশরাক হোসেনের নির্বাচনী প্রচারাভিযানে হামলা, দলীয় নেতাকর্মীদের নামে উল্টো মামলা, গ্রেফতার, পোস্টার লাগাতে বাধাদান, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলাসহ নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়। আমরা বারবার নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করার পরও কমিশন থেকে কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না, বরং তারা বরাবরের মতোই নির্বিকার। নির্বাচনের ন্যূনতম লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এখনও ঠিক হয়নি। এ কারণে আমরা আশঙ্কা প্রকাশ করছি এই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনও বিগত সকল নির্বাচনের মতোই তামাশা ও প্রহসনে পরিণত হবে। ইশরাকের নির্বাচনী প্রচার দুপুর সোয়া ১২টায় সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখার মধ্য দিয়েই ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন তার নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন। এ সময় তিনি বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা ভোটের মাঠে সকল ধরনের দায়িত্ব পালন করবে। হামলা-মামলা হুমকি-ধমকি উপেক্ষা করে যাতে ভোট দিতে পারেন সেজন্য আমাদের কর্মীরা মাঠে থাকবেন। ইশরাক বলেন, ধানের শীষের পক্ষে একটি গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারি ধানের শীষের বিজয় ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করা হবে। প্রচার চালাতে গিয়ে অনেক বাধার সম্মুখীন হয়েছি। আমি সকল ভোটারদের বলব আপনারা সাহস নিয়ে ভোট দিতে কেন্দ্রে যাবেন। বিকেলে ইশরাক হোসেন ওয়ারী, গে-ারিয়া, সূত্রাপুরের বংশাল, নর্থ সাউথ সড়ক, তাঁতীবাজার, রায়সাহেব বাজার, ধোলাইখাল, নতুন রাস্তাসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা কামরুজ্জামান রতন, কাজী আবুল বাশার, গণফোরামের নেতা সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ। ভোট চাইলেন ইশরাকের মা সন্তানের জন্য ভোট চেয়ে গণসংযোগ করছেন অবিভক্ত ঢাকা সিটির সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার স্ত্রী ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী ইশরাক হোসেনর মা ইশমত আরা। বুধবার দুপুরে নিউমার্কেট, নিউ সুপার মার্কেট, গাউছিয়া সুপার মার্কেট, এলিফ্যান্ট রোডে বাটা সিগন্যাল হয়ে হাতিরপুল বাজার পর্যন্ত গণসংযোগ করেন।
×