ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মিয়ানমার ও গাম্বিয়াকে আইনি যুক্তি উপস্থাপনে সময় দিল আইসিজে

প্রকাশিত: ২২:৩৫, ২৯ জানুয়ারি ২০২০

মিয়ানমার ও গাম্বিয়াকে আইনি যুক্তি উপস্থাপনে সময় দিল আইসিজে

অনলাইন ডেস্ক ॥ রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগের মামলায় অভিযোগকারী গাম্বিয়া এবং অভিযুক্ত মিয়ানমারকে তাদের আইনি যুক্তি দাখিলের জন্য সময় বেঁধে দিয়েছে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত আইসিজে। গাম্বিয়াকে আগামী ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে তাদের অভিযোগের বিষয়ে আইনি যুক্তিগুলো উপস্থাপন করতে হবে। অন্যদিকে অভিযোগের মুখে থাকা মিয়ানমার তার নির্দোষিতার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপনের জন্য সময় পাচ্ছে আগামী বছরের ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে) মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার কথা জানায়। গাম্বিয়ার করা এই মামলায় রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় মিয়ানমারকে জরুরি ভিত্তিতে চার দফা অন্তর্বর্তীকালীন পদক্ষেপ নিতে গত সপ্তাহে নির্দেশ দিয়েছিল আইসিজে। নির্দেশে বলা হয়, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী বা কোনো পক্ষ এমন কিছু করতে পারবে না, যা গণহত্যা হিসেবে পরিগণিত হতে পারে। গণহত্যার অভিযোগের সমস্ত আলামত তাদের সংরক্ষণ করতে হবে। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার করা আবেদনে আইসিজের প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আবদুলকাভি আহমেদ ইউসুফ নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের পিস প্যালেস থেকে এই আদেশ ঘোষণা করেন। তাতে এই আইনি লড়াইয়ে গাম্বিয়ার প্রাথমিক বিজয় আসে, যা বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়ে থাকা ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গার অনিশ্চিত জীবনে একটুখানি আনন্দের উপলক্ষ আনে। দুই বছর আগে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযানে যে বর্বরতা চালানো হয়, তার মধ্য দিয়ে ১৯৮৪ সালের আন্তর্জাতিক গণহত্যা কনভেনশন দেশটি ভঙ্গ করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে আইসিজেতে। দ্য হেগের পিস প্যালেসে গত ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর এ মামলার ওপর প্রাথমিক শুনানি হয়। তাতে গাম্বিয়ার পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির বিচার বিষয়ক মন্ত্রী আবুবকর তামবাদু। অন্যদিকে মিয়ানমারের নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চি। রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগ নিয়ে জাতিসংঘের এই সর্বোচ্চ আদালতের চূড়ান্ত রায় আসতে কয়েক বছরও লেগে যেতে পারে। ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত এক দেশ অন্য দেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গের অভিযোগ তুলতে পারে। এ আদালত কোনো ব্যক্তিবিশেষকে সাজা দিতে পারে না, যেমনটি পারে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। আইসিসি আলাদাভাবে রোহিঙ্গা গণহত্যার ঘটনা তদন্ত করছে। আইসিজেতে মামলা হলে আদালতের সিদ্ধান্ত মানার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে সদস্য দেশগুলোর ওপর। আর সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করার কোনো সুযোগ নেই। তবে সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য করার কোনো ক্ষমতা নেই এ আদালতের। সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করারও বহু উদাহরণ রয়েছে।
×