ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সুস্থ সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়তে ৩৮ অঙ্গীকার

প্রকাশিত: ১০:২৩, ২৭ জানুয়ারি ২০২০

  সুস্থ সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়তে ৩৮ অঙ্গীকার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘সবাই মিলে সবার ঢাকা; সুস্থ, সচল, আধুনিক ঢাকা’ এই স্লোগান সামনে রেখে ‘সুস্থ ঢাকা, সচল ঢাকা, আধুনিক ঢাকা’ গড়ার প্রত্যয়ে ত্রিমুখী নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম। সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়ে তুলতে ৩৮ অঙ্গীকার করেছেন আতিকুল ইসলাম। নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আতিকুল ইসলাম নির্বাচিত হলে এসব অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করবেন বলেও নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণায় উল্লেখ করেন। রবিবার সকালে গুলশানের একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ ইশতেহার ঘোষণা করেন। এ সময় আতিক বলেন, আমার প্রধান লক্ষ্য আনিস ভাইয়ের কাজগুলো এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। আমি নির্বাচিত হলে কাউন্সিলরদের প্রতিবছর সম্পদের হিসাব দেয়ার ব্যবস্থা করব। একটি বাস্তবসম্মত নির্বাচনী ইশতেহার দেয়াকেই চমক হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। অনুষ্ঠানে পূর্বের নয় মাসের মেয়র হিসেবে কাজের একটি ভিডিও দেখানো হয়। সবাইকে মুজিববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে আতিকুল ইসলাম বলেন, এ জাতিকে স্বাধীন সার্বভৌম সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম এবং ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন হয় আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত ভঙ্গুর দেশের দায়িত্ব নিয়ে মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার কাঠামো দাঁড় করাতে সক্ষম হয়েছিলেন। শুরু হয়েছিল দেশ বিনির্মাণের অভিযাত্রা। কিন্তু ১৯৭৫ সালে জাতির পিতার মর্মন্তুদ হত্যাকা-ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। আমাদের প্রগতিশীলতা, উন্নয়ন-অগ্রগতি-সবকিছুকেই স্তব্ধ করে দেয়া হয়েছিল।’ আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোটের শাসনকাল সীমাহীন দুর্নীতি-সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের কারণে, বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি শুধু স্থবিরই হয়নি, অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছিল। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু-কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আবারও বাংলাদেশের মানুষ সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে।’ অতিকুল ইসলাম আতিক বলেন, ‘১১ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ আজ আলোয় উদ্ভাসিত। উন্নয়ন-অগ্রগতির মহাসড়কে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদূরপ্রসারী নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বে এসডিজি (সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল) পূরণে এক রোল মডেল। উন্নয়নের এ অগ্রযাত্রায় অংশ নিতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নির্দেশে, আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে আমি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ২০২০-এ অংশ নিচ্ছি।’ আতিক বলেন, ‘আজ সবাই মিলে সবার ঢাকা গড়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে আপনাদের সামনে এসেছি। আমি বিশ্বাস করি, সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে সততা-নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করলে, সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়তে পারব। ৪০০ বছরের পুরনো শহর ঢাকা, যার বাঁকে বাঁকে ঐতিহ্য, ইতিহাস, সংগ্রাম আর বিনির্মাণের গল্প। মহান মুক্তিযুদ্ধের পর ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী। রাজধানী ঢাকাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ বিকশিত হয়েছে। বিশ্বের জনবহুল শহরের মধ্যে ঢাকা অন্যতম। ঘনবসতিপূর্ণ এ শহরের মানুষের যাপিত-জীবনে নানা সীমাবদ্ধতা থাকলেও এ শহর আমাদের কাছে বড় আবেগের, বড় ভালবাসার।’ তিনি আর বলেন, ‘আপনারা জানেন, ২০২০ সালের ১৭ মার্চ উদ্যাপিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী। এরইমধ্যে এ উপলক্ষে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত সময়কে ‘মুজিববর্ষ’ ঘোষণা করা হয়েছে। আবার ২০২১ সালের ২৬ মার্চ আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। বঙ্গবন্ধু-কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বসভায় সমাদৃত। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। সেই উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এই মহোৎসব দু’টির অপেক্ষায় গোটা বাঙালী জাতি।’ আতিক আরও বলেন, আমি বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। ইতোমধ্যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিগত ১০/১১ বছরে রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধির মধ্য দিয়ে এগিয়ে বর্তমানে এসে উপস্থিত হয়েছে। সেই অগ্রযাত্রার দিশারী আমাদের প্রিয় শহর ঢাকা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার রাজধানী ঢাকার উন্নয়নে বহু কাজ করেছে। আরও বহু কর্মসূচী বাস্তবায়িত হচ্ছে।’ মেয়র প্রার্থী আতিক বলেন, ‘একটি শহরের প্রাণ হচ্ছে শহরের পাড়া ও মহল্লাগুলো। সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়তে গেলে প্রতিটি এলাকা, পাড়া ও মহল্লাকে আলাদাভাবে নজর দিতে হবে। প্রতিটি এলাকাভিত্তিক সমস্যা শনাক্ত করে সেগুলোর স্থায়ী সমাধানের মধ্য দিয়ে এলাকার উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন করাটা অত্যন্ত জরুরী। এই এলাকাভিত্তিক পরিবর্তনই নগরীর সামগ্রিক পরিবর্তন নিয়ে আসবে। যার ফলে এই নগরীতে বসবাস করা মানুষগুলো সব নাগরিক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। আমার প্রধান লক্ষ্য, এই নগরীকে কেবল বসবাস উপযোগী নয়, বরং নগরবাসীর জীবনমানেরও উন্নতি সাধন করা।’ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে ২০১৯ সালের উপ-নির্বাচনে দেয়া ইশতেহারের অধিকাংশ কাজই শুরু হয়েছে উল্লেখ করে আতিক বলেন, আমার গত ৯ মাসের অভিজ্ঞতা এবং উপলব্ধিকে কাজে লাগিয়ে আগামীর ঢাকা গড়ার লক্ষ্য অর্জনে পেশ করেছি আমার ত্রিমুখী ইশতেহার। নির্বাচনী ইশতেহারে দেখা গেছে সুস্থ ঢাকা গড়তে ১৩টি অঙ্গীকার, সচল ঢাকা গড়তে ১৩টি এবং আধুনিক ঢাকা গড়তে ১২টি অঙ্গীকার রয়েছে। সুস্থ ঢাকা গড়ার ইশতেহার একটি সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়ার পরিকল্পনা তুলে ধরে নৌকার প্রার্থী আতিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের এই নগরী কোটি মানুষের আশ্রয়স্থল। এই শহরের বসবাস করা নাগরিকদের সুস্থতা নির্ভর করে এই শহরের সুস্থতার ওপর। একটি সুস্থ ঢাকা নিশ্চিত করতে হলে দ্রুত কিছু পদক্ষেপ বাস্তবায়ন জরুরী যা বাস্তবায়ন হলে ঢাকাবাসী গর্বের সঙ্গে বলতে পারবে এটি পৃথিবীর অন্যতম সুস্থ শহর। একটি সুস্থ ঢাকা গড়ার জন্য প্রস্তাবনা দিয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, ১. উন্নত বিশ্বের মতো ওঠগ (Integrated Vector Management) পদ্ধতিতে উঘঈঈ, উঝঈঈ ডঅঝঅ, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, পার্শ্ববর্তী সিটি কর্পোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে সঙ্গে নিয়ে বছরব্যাপী মশক নিধন কার্যক্রম বাস্তবায়ন। ২. সবার জন্য নানা সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন এলাকাভিত্তিক দৃষ্টিনন্দন উন্মুক্ত পার্ক ও আধুনিক খেলার মাঠ নির্মাণ। ৩. টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমিনবাজারে জজঋ (Resource Recovery Facilities) স্থাপনের মাধ্যমে বর্জ্য অপসারণ ও জ্বালানি শক্তিতে রূপান্তর। ৪. নগরীর বিভিন্ন এলাকায় আধুনিক পশু জবাইকেন্দ্র স্থাপন। ৫. তরুণদের অনুপ্রাণিত করতে এবং প্রতিবশীদের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি বাড়াতে শহরের সব ওয়ার্ডে নিয়মিত পাড়া উৎসব উদ্যাপন। ৬. ডিএনসিসি’র প্রতিটি স্থাপনায় মাতৃদুগ্ধ কক্ষ নির্মাণ। ৭. বস্তিবাসীদের জন্য নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণ। ৮. বিশেষভাবে সক্ষম এবং নারী-পুরুষ-শিশু নির্বিশেষে সবার জন্য পর্যাপ্ত আধুনিক পাবলিক টয়লেট নির্মাণ। ৯. প্রতিটি এলাকার জলাশয় দখলমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন করে নাগরিকদের কাছে ফিরিয়ে দেয়া। ১০. ঢাকা উত্তরের উন্নয়ন প্রকল্পসহ বিভিন্ন জায়গায় ‘মিস্ট ব্লুয়ার’ এবং অন্যান্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যম বায়ুদূষণ কমানো। ১১. ডিএনসিসি’র বর্ধিত এলাকায় নারীবান্ধব CRHCC (Comprehensive Reproductive Health Care Center) এবং চঐঈঈ (Primary Health Care Center) নির্মাণ। ১২. ডিএনসিসি প্রতিটি ওয়ার্ডে নানাবিধ সুবিধাসংবলিত ওয়ার্ড কমপ্লেক্স তৈরি করা। ১৩. মিরপুরে ডিএনসিসি’র নিজস্ব জায়গায় বৃক্ষ ক্লিনিক ও পোষ্যপ্রাণী ক্লিনিক নির্মাণ। সচল ঢাকা গড়ার প্রস্তাবনা একটি সচল ঢাকার প্রস্তাবনা দেয়ার আগে আতিকুল বলেন, ঢাকা শহরের বাসিন্দারা পাড়া মহল্লায় সকল রাস্তাঘাটে চলতে গেলে নানা বাধার সম্মুখীন হন। রাস্তা পাড় হতে গিয়ে অনেকেই দুর্ঘটনার শিকার হন। প্রতিটি এলাকায় পরিকল্পিত ফুটপাত, ফুট ওভারব্রিজ, জেব্রা ক্রসিং, সাইকেল/মোটরসাইকেল লেন, আধুনিক ট্রাফিক সিগনাল না থাকায় নগরবাসীর অবাধ চলাচল ব্যাহত হয়। তাই ঢাকাকে সচল নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা দেন নৌকার প্রার্থী। সচল ঢাকা নির্মাণে আতিকুলের পরিকল্পনা তুলে ধরে বলেন, ১. ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ফুটপাথ দখলমুক্ত করে এলাকাভিত্তিক পথচারীবান্ধব ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের জন্য ফুটপাথ নেটওয়ার্ক তৈরি করা। ২. হকারদের পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। ৩. যানজট নিরসনে ডিএমপি, ডিটিসিএ, বিআরটিএ, ডিএসসিসি, পরিবহন মালিক সমিতিসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে সমন্বিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা। ৪. প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের অসমাপ্ত পরিকল্পনা-ঢাকা বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশনের কাজ সরকারের উচ্চপর্যায়ের সবাইকে নিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সম্পন্ন করা। ৫. নিরাপদ পথচারী পারাপারের জন্য ঢাকা উত্তরে বিভিন্ন জেব্রা ক্রসিং-এ ডিজিটাল পুশ বাটন সিগন্যাল স্থাপন করা। ৬. নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়ন প্রয়োজন অনুযায়ী অধিকাংশ স্থানে এস্কেভেটরসহ নতুন ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। ৭. আধুনিক নগর-পরিবহন ব্যবস্থার জন্য ডিজিটাল ই-টিকেটিং সেবা প্রদান, এ্যাপনির্ভর সময়সূচী প্রবর্তন এবং সুনিয়ন্ত্রিত ও নারীবান্ধব গণপরিবহন নিশ্চিত করা হবে। ৮. সাইকেলের জন্য আলাদা লেন (যেখানে সম্ভব) এবং সাইকেল পার্কিং তৈরি করা। ৯. স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য পরিবহন ব্যবস্থা প্রবর্তন। ১০. নাগরিকদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য পরিকল্পিত স্মার্ট বাস স্টপ ও বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ। ১১. বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন নাগরিকদের জন্য গণস্থাপনা এবং গণপরিবহন নিশ্চিতকরণ। ১২. প্রতিটি মহল্লার ড্রেনেজ ব্যবস্থার উনয়ন, জলাবদ্ধতা নিরসন এবং সেন্সরের মাধ্যমে জলাবদ্ধতার স্থান ট্র্যাক করে সমাধান করা। ১৩. নগরীর ব্যস্ততম এলাকায় বহুতল ও আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। আধুনিক ঢাকা গড়ার প্রত্যয় আধুনিক ঢাকা গড়ার বিষয়েও কথা বলেন আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, উন্নয়নের এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। উন্নত বিশে^র রাজধানীর মতো ঢাকার আধুনিকায়ন না হলে বর্তমান বিশ্বের সঙ্গে আমরা তাল মেলাতে পারব না। কাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি প্রযুক্তিগত উন্নয়ন অপরিহার্য। ঢাকার আধুনিকায়ন হলে নগরীর সকল শ্রেণী পেশার মানুষের জীবনযাত্রা বদলে যাবে। আধুনিক ঢাকা নির্মাণে আতিকুলের পরিকল্পনা তুলে ধরে ইশতেহারে বলেন, ১. সবার ঢাকা এ্যাপ এর মাধ্যমে নাগরিকের অভিযোগ গ্রহণ ও সার্বক্ষণিক তদারকিসহ সব নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা, যেখানে মেয়রের সঙ্গে নাগরিকদের সরাসরি যোগাযোগের ব্যবস্থা থাকবে। ২. বায়ুদূষণ রোধে ইলেক্ট্রিক বাস সার্ভিস চালু করা হবে। ৩. ডিজিটাল পদ্ধতিতে অনলাইন হোল্ডিং ট্যাক্স, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্সসহ অন্যান্য নাগরিক সেবা প্রদান। ৪. ব্যবসায়ী সমাজের ভোগান্তি কমাতে ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে হেল্প ডেস্ক তৈরি। ৫. ব্যবসায়ীদের অসুবিধা না করে ডিএনসিসি মালিকানাধীন কাঁচাবাজার ও মার্কেটগুলোর আধুনিকায়নের জন্য চলবে স্ট্রাকচারাল আপগ্রেডেশন। ৬. স্মার্ট সিটি গড়তে প্রাথমিকভাবে কয়েকটি এলাকাকে ‘স্মার্ট নেইবারহুড’ হিসেবে গড়ে তোলা, পর্যায়ক্রমে প্রতিটি পাড়া-মহল্লাকে এই উদ্যোগের আওতায় আনা। ৭. একটি সার্বক্ষণিক ডিজিটাল কমান্ড সেন্টার তৈরি; যার মাধ্যমে শহরের নিরাপত্তা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ‘স্মার্ট নেইবারহুড’ পরিচালনা ইত্যাদি সম্পন্ন হবে। ৮. তারুণ্যকে অনুপ্রাণিত করতে প্রতিটি এলাকায় সাংস্কৃতিক ও সেবাকেন্দ্র গঠন; যেখানে থাকবে হেল্প-ডেস্ক, ট্রেনিং সেন্টার, স্টার্ট-আপ কো-ওয়ার্কিং স্পেস, লাইব্রেরি, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড ও অন্যান্য সুবিধা। ৯. নগরের সার্বিক উন্নয়নে নগর পরিকল্পনাবিদসহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞের সহায়তায় সার্বিক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ। ১০. প্রতিটি এলাকার কমিউনিটি সেন্টারগুলো আধুনিকায়ন ও বহুমুখী ব্যবহার হবে। ১১. সকল লেক-খালের সংস্কার, উন্নয়ন ও সৌন্দর্যবর্ধনের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা নিরসন, মশা নিয়ন্ত্রণ, পাবলিক স্পেস বৃদ্ধি করা, টেকসই পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন নিশ্চিত করা। ১২. জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ‘জনতার মুখোমুখি মেয়র’ শীর্ষক মতবিনিময় ও ওয়ার্ড ভিত্তিক সমস্যার সমাধান করা হবে। এসময় আতিকুল ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, যে বঙ্গবন্ধুর জন্য দেশ পেলাম স্বাধীনতা পেলাম সেই বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষীকিতে নৌকার বিজয় উপহার দেই। একটি আধুনিক সচল ঢাকা গড়তে নৌকার বিজয়ে ভোটারদের ভালবাসা সহযোগিতা কামনা করেন। ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সুচিত্র ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এ আরাফাত। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পেশাজীবী, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, চলচ্চিত্র অভিনেতা অভিনেত্রী ছাড়াও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
×