ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দেশের কোথাও মেয়েদের নিরাপত্তা নেই : রংপুরে মেনন

প্রকাশিত: ০৭:০৫, ২৫ জানুয়ারি ২০২০

দেশের কোথাও মেয়েদের নিরাপত্তা নেই :  রংপুরে মেনন

নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুর ॥ মেয়েরা সবসময় নির্যাতন, হয়রানি ও ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন ফলে দেশের কোথাও মেয়েদের কোন নিরাপত্তা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে ওয়ার্কার্স পার্টির বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আমাদের সরকারের নেতৃত্বে নারী থাকলেও নারীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যার্থ সরকার। তারা প্রতিনিয়ত নির্যাতন- হয়রানির শিকার হচ্ছে। ফসলের ন্যায্য দাম না পেয়ে কৃষক বাধ্য হয়ে ক্ষেতে আগুন দেয় বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, কৃষকরা অনেক কষ্টে আবাদ করলেও ফসলের ন্যায্য মূল্য পায়না। দালালদের খপ্পড়ে পরে ন্যাযমূল্যে ধানও বিক্রি করতে পারেনা। সবখানে দুর্নীতির আধিপত্য বিরাজ করছে। তিনি বলেন, আমরা চাই সবখানে সামাজিক ন্যায়বিচার, সমতা প্রতিষ্ঠিত হোক। কিন্তু আজ সবখানে বৈষম্য। উন্নয়নের সাথে বৈষম্যের সম্পর্ক সমান্তরাল। তিনি রংপুরে পাইপ লাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ, কৃষিভিত্তিক কলকারখানা গড়ে তোলার দাবি জানিয়ে বলেন, রংপুরকে আর কত অবহেলা সহ্য করতে হবে। এই অঞ্চলের মানুষ অবহেলার ফলে উন্নতির স্বাদ পাচ্ছেনা। আশ্বাসেই আটকে আছে তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষর কিন্তু এর কোন বাস্তবায়ন নাই। মেনন প্রশ্ন রাখেন, তিস্তা নিয়ে মানুষ আর কতকাল অপেক্ষা করবে। পশ্চিম বঙ্গেও অন্য সকল বিষয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার হস্তক্ষেপ করলেও তিস্তার বেলায় নয় কেন? ভারতের নাগরিকত্ব বিল বিষয়ে সকল দল ও মানুষের মতামত উপেক্ষা করে কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নিতে পারলে, তিস্তার চুক্তি সই প্রশ্নে কেন পশ্চিমবঙ্গের উপর চাপিয়ে দেয়া হবে। তাই স্পষ্ট কথা উত্তরাঞ্চলের জীবন রেখা তিস্তা বাঁচাতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকেই এই চুক্তি সম্পাদন করতে হবে। সমাবেশে রাশেদ খান মেনন আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু সারা জীবন বৈষম্যের বিরুদ্ধেই লড়েছেন। জন্ম শতবর্ষের ক্ষণ গণণনার প্রাক্কালে এই মহান নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলছি, যদি মুজিব বর্ষে সত্যিকার ভাবে বঙ্গবন্ধুকে সম্মান জানাতে হয়, তবে বৈষম্য অবসানে রাজনৈতিক পদক্ষেপ নিতে হবে। সেটাই হবে বঙ্গবন্ধুর প্রতি যথার্থ শ্রদ্ধার্ঘ। আমি বলবো, বঙ্গবন্ধুকে প্রকৃত সম্মান জানাতে হলে ধনী-গরিবের বৈষম্য কমান, মানুষে-মানুষে বৈষম্য কমান, রংপুর বিভাগের দারিদ্র ও বৈষম্য কমাতে পাইপ লাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ করে এই অঞ্চলে কৃষিভিত্তিক শিল্পকলকারখানা গড়ে তুলুন, কৃষকের ফসলের ন্যায্যমূল্য দিন এবং বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তীর ধনুক, বল্লম নিয়ে ক্যানন্টনমেন্ট ঘেরাও রংপুরের মানুষ উন্নয়নে পিছিয়ে রয়েছে। বৈষম্য কমিয়ে রংপুর বিভাগের উন্নয়ন করার জন্য সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। সমাবেশে পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি বলেন, পাকিস্তান আমলের আন্দোলন এবং আমাদের স্বাধীনতার মূল লক্ষ ছিলো আঞ্চলিক বৈষম্য এবং ধনী বৈষম্য কমানো অথচ স্বাধীন বাংলাদেশে আমরা দেখতে পাচ্ছি উন্নয়নের সাথে সমান্তরালে বাড়ছে বৈষম্য। ধনী-গরীবের মধ্যে বৈষম্য বাড়ছে। অঞ্চলভেদেও বৈষম্য বাড়ছে। বলা হচ্ছে দারিদ্রের হার গড় ২১ শতাংশে নেমে এসেছে। অথচ কুড়িগ্রামসহ রংপুর বিভাগের দারিদ্রের হার ৪৬.৬৬। কুড়িগ্রাম জেলায় এই হার ৭০ শতাংশ। বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টির রংপুর জেলার সভাপতি ও পলিটবুরো সদস্য নজরুল ইসলাম হক্কানীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টির পলিটবুরো সদস্য মাহমুদুল হাসান মানিক, আমিনুল ইসলাম গোলাপ, কেন্দ্রীয় সদস্য মোছাদ্দেক হোসেন লাবু, তপন কুমার রায়, রুহুল আলম, অশোক সরকারসহ রংপুর বিভাগের আট জেলার নেতৃবৃন্দ। বিভাগীয় সমাবেশের পূর্বে গণসংগীত পরিবেশিত হয়।
×