ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আগামিকাল উদ্বোধন করা হবে ঢালার চর এক্সপ্রেস ট্রেন

প্রকাশিত: ০৪:৫৫, ২৫ জানুয়ারি ২০২০

আগামিকাল উদ্বোধন করা হবে ঢালার চর এক্সপ্রেস ট্রেন

স্টাফ রিপোর্টার, ঈশ্বরদী ॥ ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন ও রেলসেবা জনগনের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দিতে এবং দেশের অর্থনীতিকে তরান্বিত করতে ঈশ্বরদীসহ পাবনা ও নাটোর জেলার মানুষের ঢাকাকে হাতের মুঠোয় এনে দিতে আগামিকাল উদ্বোধন করা হবে মাঝগ্রাম-ঢালার চর এক্সপ্রেস ট্রেন। রবিবার সকাল দশটায় গণভবন থেকে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢালার চর এক্সপ্রেস ট্রেনের উদ্বোধন করবেন। ১৭৩৭ দশমিক ১৭৮১ কোটি টাকা ব্যয়ে মাঝগ্রাম থেকে শুরু করে ঢালার চর পর্যন্ত ৭৮ কিলোমিটার নতুন রেলপথের নিকটস্থ রেলে ভ্রমনেচ্ছুক বিভিন্ন বয়সী মানুষ অপেক্ষার পালা গুণছেন। তাদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ জন্য রেলপথ মন্ত্রী এ্যাড.নুরুল ইসলাম সুজনের নেতৃত্বে পশ্চিমাঞ্চল রেলের পক্ষ থেকে জিএম. মিহির কান্তি গুহ, প্রধান প্রকৌশলী আল ফাত্তা মোঃ মাসুদুর রহমান, প্রধান পরিবহণ কর্মকর্তা মোঃ শহিদুল ইসলাম, পাকশী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক আসাদুল হক ও প্রকল্পের পিডি আব্দুর রহিমসহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সহায়তায় সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। জানাযায়,বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তৎকালীন আওয়ামীলীগ সরকার আমলে (১৯৭২-৭৩ সালে ) ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে নগরবাড়ী পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের কাজ হাতে নেয়া হয়। এ উদ্যেশ্যে মাঝগ্রাম থেকে পাবনা পর্যন্ত জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু করা হয় এবং আংশি জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন করা হয়। ১৯৭৫ সালে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের কারণে প্রকল্পটি পরিত্যক্ত ঘোষিত হয় এবং ১৯৭৯ সালে প্রকল্পটি স্থগিত ঘোষণা করা হয়। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ রেলওয়ের ব্যাপক উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রকল্পটির কাজ পুণরায় শুরু করা হয়। ইতি মধ্যে সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় পদ্মা বহুমুখী সেতর নির্মাণ কাজও দ্রুত গতিতে চলমান রয়েছে। প্রস্তাবিত পদ্মা সেতু রেললিংক প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। মাঝগ্রাম-ঢালার চর পর্যন্ত ৭৮ কিলোমিটার রেল পথে ৭ টি স্টেশন,মেজর ব্রীজ নির্মাণ ৯ টি মাইনর ব্রীজ নির্মাণ ৮০ টি লেভেল ক্রসিং গেট ৬০ টি এ্যাপ্রোচ রোড ১১০০ দশমিক ৮৬ বর্গ মিটার, স্টাফ ব্যারাক নির্মাণ ৫৯৮ দশমিক ৩৮১ বর্গমিটার নির্মাণ করা হয়েছে। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ৪৫ সাল নাগাদ রেলের উন্নয়নে দিক নির্দেশনা মূলক যে মাস্টার প্লাণ করা হয়েছে সেই দিক নির্দেশনার আলোকে ঈশ^রদী-ঢালার চর ৭৮ কিলোমিটার রেলপথটি পদ্মা নদীর উপর প্রস্তাবিত নতুন রেল কাম রোড ব্রীজ দিয়ে রাজবাড়ী রেল রাইনের সাথে সংযুক্ত হবে। ফলে ঈশ্বরদী-মাঝগ্রাম-ঢালার চর-রাজবাড়ী-ফরিদপুর-ভাঙ্গা-পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকা পর্যন্ত একটি নতুন রেল রুট তৈরী হবে। প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য পাবনা জেলা শহরকে রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনা এবং সহজভাবে ঢাকার সাথে যোগাযোগ স্থাপনসহ ঐ এলাকার জনগনের আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন সাধন করা। এছাড়া ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে এবং আঞ্চলিক সংযোগের ক্ষেত্রে একটি বিকল্প রেলপথ স্থাপন করা হবে। নতুন এ রেলপথটি চালু হলে যাত্রী ও পণ্য পরিবহণের মাধ্যমে রেলওয়ের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান পরিবহণ কর্মকর্তা মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, সুষ্ঠভাবে ট্রেন পরিচালনাকে সামনে রেখে অস্থায়ীভাবে লোক নিয়োগ করা হয়েছে। ঝুঁকিমুক্ত ভাবে ট্রেন চলাচলের স্বার্থে রেল ক্রসিংগুলোতে এসব লোক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আপাতত এক জোড়া ট্রেন চলাচল করবে। ভবিষ্যতে প্রয়োজন মতে আরও ট্রেন বাড়ানো হবে। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী আল ফাত্তাহ মোঃ মাসুদুর রহমান বলেন, সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামি ৪৫ সাল নাগাদ রেলের উন্নয়নের দিক নির্দেশনা মূলক একটি মাস্টার প্লাণ করা হয়েছে। সেই দিক নির্দেশনার একটি পার্ট হলো মাঝগ্রাম-ঢালার চর প্রকল্প বাস্তবায়ন। ধাপে ধাপে সকল প্রকল্প বাস্তবায়নের পর রেল একটি রিমার্কেবল পজিশনে যাবে এবং দেশের প্রতিটি জেলায় রেল সংযোগ দৌয়া হবে। সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ৪৫ সাল নাগাদ রেলের উন্নয়নে দিক নির্দেশনা মূলক যে মাস্টার প্লাণ করা হয়েছে সেই দিক নির্দেশনার একটি পার্টৃ এ মাঝগ্রাম-ঢালার চর প্রকল্প। ধাপে ধাপে সকল প্রকল্প বাস্তবায়নের পর রেল একটি রিমার্কেবল পজিশনে যাবে এবং দেশের প্রতিটি জেলায় রেল সংযোগ হবে। দেশের প্রত্যেকটি জেলায় রেলসেবা পৌঁছে দেওয়ার ৪৫ বছরের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মানসে উন্নয়নের অভিযাত্রার অংশ হিসেবে আগামীকাল রবিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢালার চর এক্সপ্রেস ট্রেনের উদ্বোধন করবেন। এজন্য গত শুক্রবার রেলপথমন্ত্রী এ্যাড.নুরুল ইসলাম সুজনের নেতৃত্বে প্রধান মন্ত্রীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সফল করতে পশ্চিমাঞ্চল রেলের বিভিন্ন বিভাগের প্রধান কর্মকর্তারা ঈশ্বরদী, পাবনা, ঢালারচর, রাজবাড়ী, ভাঙ্গা-ফরিদপুর পরিদর্শন করে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। ঢালারচরে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সফল করতে এবং উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপভোগ করার জন্য ঢালারচর স্টেশনে পৃথক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। স্থানীয় এমপি ফিরোজ কবীর, রেলের উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, পাবনা জেলা প্রশাসক ফিরোজ কবীরসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও পুলিশ প্রশাসনের প্রতিনিধিসহ উৎসুক জনতা অংশ নেবেন। এদিকে নতুন রেলপথে নতুন ট্রেন উদ্বোধনের খবর শুনে মাঝগ্রাম ও ঢালার চর স্টেশন গত কয়েক দিন থেকেই এলাকার উৎসুক জনতা ভিড় করছে।
×