ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কেজিতে ২-৫ টাকা বেড়েছে চালের দাম

প্রকাশিত: ০৮:৩৯, ২৪ জানুয়ারি ২০২০

  কেজিতে ২-৫ টাকা বেড়েছে চালের দাম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই কেজিতে ২ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে চালের দাম। জাত ও মানভেদে প্রতিকেজি নাজিরশাইল ও মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২-৬০ টাকায়। স্বর্ণা ও চায়না ইরিখ্যাত মোটা চাল খুচরা বাজারে ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজের দাম সামান্য কমলেও বেড়েছে ছোলা, রসুনের দাম। সরবরাহ বাড়ায় আরও কমেছে শীতকালীন সবজির দাম। মাছ ও মাংসের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও দাম বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির। শুক্রবার রাজধানীর কাপ্তান বাজার, কাওরান বাজার, ফার্মগেট বাজার, মিরপুর সিটি কর্পোরেশন মার্কেট ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে, চালের দাম বাড়ায় স্বল্প ও নিম্ন আয়ের মানুষের উদ্বেগ বেড়েছে। হঠাৎ কোন কারণ ছাড়াই বাজারে সব ধরনের চালের দাম বেড়ে গেছে। চালের দাম বাড়ার পেছনে অসাধু ব্যবসায়ীদের হাত রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ বছর আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকের ন্যায্যদাম নিশ্চিত করতে সরকার নির্ধারিত দামে ধান চাল সংগ্রহ করেছে। এছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণ ধানের মজুদ রয়েছে দেশে। এ কারণে এ মুহূর্তে চালের দাম বাড়ার কোন কারণ নেই। অথচ মিলগেটে বস্তাপ্রতি চালের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে ২০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত। রাজধানীর পাইকারি বাজারগুলোতে গত সপ্তাহ থেকে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে চাল। ইতোমধ্যে খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। সরু নাজিরশাইল ও মিনিকেট চাল ৫২-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সাধারণ মানের পাইজাম ও লতা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৮ টাকায়। এ প্রসেঙ্গ কাপ্তান বাজারের চাল বিক্রেতা মো. নুরুল ইসলাম নূরু জনকণ্ঠকে বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরেই বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে চাল। প্রতিকেজি মোটা চাল ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারিতে দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে খুচরা বাজারে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ ক্রেতারা কিছুটা বিরক্ত। অন্য পণ্যের দাম বাড়লেও কেউ চালের বাড়তি দাম মানতে চায় না। জানা গেছে, মসলা জাতীয় পণ্য পেঁয়াজের দাম সামান্য কমলেও এখনো বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি দেশী পেঁয়াজ ৯০-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আমদানিকৃত পেঁয়াজ মানভেদে ৬৫-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। রাষ্ট্রীয় বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা টিসিবির ট্রাক থেকে ভোক্তারা ৩৫ টাকা দরে পেঁয়াজ কিনতে পারছেন। মূলত এই পেঁয়াজে ভরসা পাচ্ছে সাধারণ ভোক্তারা। এ কারণে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সাধারণ ভোক্তাদের দীর্ঘ লাইন দেখা যায় টিসিবির ট্রাকের সামনে। এদিকে, বাজারে নতুন উঠা দেশী পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়তে শুরু করেছে। তবে সেইভাবে দাম কমার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বিক্রেতারা বলছেন, দাম কমাতে হলে দেশী পেঁয়াজের সরবরাহ ও উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে। এ প্রসঙ্গে কাওরান বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা মো. দেলোয়ার হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, দেশী পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়তে আর মাসখানেক অপেক্ষা করতে হবে। রাখী পেঁয়াজ বাজারে না আসা পর্যন্ত দাম আর কমার তেমন কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। তবে এ বছর বেশি দামের আশায় সারাদেশে ব্যাপক রাখী পেঁয়াজের আবাদ বাড়ানো হয়েছে। ওই পেঁয়াজ বাজারের ভরসা। তিনি বলেন, রাখী পেঁয়াজ উঠতে আরও মাসখানেক সময় লাগবে। এদিকে, রোজা আসার কয়েক মাস আগে বাজারে বাড়তে শুরু করেছে ছোলার দাম। প্রতিকেজি ছোলায় ৫ টাকা দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৮০ টাকায়। এছাড়া দাম বেড়ে ব্রয়লার মুরগি ১১০-১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। দাম বেড়ে রসুন ১৩০-১৫০, দারুচিনি ৪২০-৪৫০, আদা ১১০-১৬০, সয়াবিন তেল লুজ ৯০-৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতিকেজি চিনি ৬০-৬৫, ফার্মের ডিম হালী ৩৩-৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। এছাড়া বাজারে বেড়েছে সব ধরনের দেশী মাছের দাম। জাতীয় মাছ ইলিশের ছড়াছড়ি বাজারগুলোতে। এর আগের কোন শীতে এবারের মতো এত ইলিশ আর দেখা যায়নি। প্রতিকেজি ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০-১২শ’ টাকায়। এছাড়া সরবরাহ বাড়লে দেশী মাছ ভোক্তাদের বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। বোয়াল, আইর মাছ সাড়ে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। এদিকে, বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ বেড়েছে। আলু, টমেটো, শালগম, মূলা, ফুলকপি, বাধাকপি, শিম ও অন্যান্য শাকসবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কমেছে।
×