ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এ আদেশে ফুটে উঠল প্রকৃত সত্য

প্রকাশিত: ১০:৪৫, ২৪ জানুয়ারি ২০২০

 এ আদেশে ফুটে উঠল প্রকৃত সত্য

মোয়াজ্জেমুল হক, চট্টগ্রাম অফিস ॥ মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর উপর সে দেশের সেনা ও উগ্রবাদী সন্ত্রাসীরা যে বর্বরতা চালিয়েছে তা নিয়ে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত আইসিজে (ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস) এ গাম্বিয়ার দায়েরকৃত মামলার অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ মিয়ানমার সরকারের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে নেতিবাচক ও বিব্রতকর। এ আদেশ রোহিঙ্গাদের ওপর ঘটে যাওয়া প্রকৃত সত্য ঘটনার একটি উদাহরণ। বৃহস্পতিবার এ আদালত পর্যবেক্ষণে এবং দিক নির্দেশনায় যা বলেছেন তা অব্যাহত মিথ্যাচারে লিপ্ত মিয়ানমার সরকারের প্রতি বড় ধরনের চপেটাঘাতও বটে। এছাড়া রোহিঙ্গা ইস্যুর শান্তিপূর্ণ এবং সফল সমাধানে বাংলাদেশ শুরু থেকে যে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে আসছে তার অগ্রগতিতে এ রায় ব্যাপক সহায়ক ভূমিকা রাখার সম্ভাবনাই বেশি। বৃহস্পতিবার নেদারল্যান্ডসের হেগের আন্তর্জাতিক এ বিচারাদালতে (আইসিজে) অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ ঘোষিত হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলে এমন আলোচনারই জন্ম দিয়েছে। উখিয়া টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে দোয়া ও মোনাজাত হয়েছে শুকরিয়া আদায়ের মাধ্যমে। ঘটনার পর থেকে বাংলাদেশ সরকার মিয়ানমারকে তাদের এসব নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়ার জন্য কূটনৈতিক তৎপরতাকেই প্রাধান্য দিয়েছে। বর্তমানে সে তৎপরতা চলমান এবং তা আরও গতি পেয়েছে। জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন ফোরামে বাংলাদেশের পক্ষে রোহিঙ্গা ইস্যুর সফল সমাধানে বক্তব্য দেয়া হয়েছে। যেসব দেশ রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারকে সমর্থন জুগিয়েছে তাদের প্রতিও যৌক্তিক আবেদন তুলে ধরার পর তাতে ইতিবাচক প্রভাব বয়ে এসেছে। এমনিতর পরিস্থিতিতে গত বছরের নবেম্বর মাসে পশ্চিম আফ্রিকার ছোট্ট দেশ গাম্বিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক বিচারাদালতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ চেয়ে মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলায় বিবাদী হিসাবে মিয়ানমার শুনানিতে অংশ নেয়। বাংলাদেশ এ ইস্যুর একটি সফল ও শান্তিপূর্ণ সমাধানে যে কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে এক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব নিশ্চিতভাবে বয়ে আনবে বলেও আলোচনা চলছে। উল্লেখ করা যেতে পারে, ১৯৪৯ সালে গৃহীত গণহত্যা সনদে মিয়ানমার ও গাম্বিয়া উভয়ে স্বাক্ষরকারী দেশ। সঙ্গত কারণে আইসিজের যে কোন ধরনের রায় বা সিদ্ধান্ত স্বাক্ষরকারী দেশসমূহের পক্ষে মেনে চলা বাধ্যতামূলক হিসাবেই প্রতিভাত। কিন্তু ইতোমধ্যেই এ বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের ভিন্ন ভিন্ন মতও রয়েছে। এরপরও রোহিঙ্গা ইস্যুটি সারাবিশে^ আলোচিত এবং মিয়ানমারের ঘৃণ্য বর্বর তৎপরতার বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে নিন্দিত। সঙ্গত কারণে আলোচনায় উঠে এসেছে আইসিজের বৃহস্পতিবারের অন্তর্বর্তীকালীন আদেশসমূহ মিয়ানমারকে বড় ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতি বয়ে আনবে।
×