ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মাদারীপুরে বাল্য বিয়ের কবল থেকে রক্ষা পেলো চম্পা রায়

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ২৩ জানুয়ারি ২০২০

 মাদারীপুরে বাল্য বিয়ের কবল থেকে রক্ষা পেলো চম্পা রায়

নিজস্ব সংবাদদাতা,মাদারীপুর ॥ বিয়ের সব আয়োজন সম্পন্ন। চারদিকে ধুমধাম, কোথাও কোন কমতি নেই। কলাগাছ আর রঙ্গিণ কাগজ দিয়ে বিয়ের মন্ডব সাজানো হয়েছে। বাতাসে ভাসছে সানাইয়ে সুর। আগত অতিথিদের পদভারে সরগরম বিয়েবাড়ি। শিশুদের আনন্দ উল্লাস। পুরোহিত এসে হাজির। কনে সাজিয়ে বসানো হলো পিঁড়িতে। বাড়ির লোকজনের তাড়াহুড়ো, লগ্ন যে বয়ে যায়। এমন সময় বাঁধলো বিপত্তি। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা পুলিশ নিয়ে বিয়ে বাড়ি হাজির। নিমিষে সব আনন্দ বিষাদে পরিণত হলো। আনন্দমুখর বিয়েবাড়ি এখন শুনশান নীরবতা। কনের বয়স না হওয়ায় বিয়ে ভেঙ্গে দিল প্রশাসন। ঘটনাটি ঘটেছে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নের দামেরচর গ্রামে বুধবার রাত ৯টার দিকে। জানা গেছে, ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার নুরুল্যাপুর ইউনিয়নের উচ্চাবাজার এলাকার অচিন্ত রায় তার মেয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী চস্পা রায় (১৫) কে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার উমেদপুর এলাকার সুশান্ত রায়ের সাথে গোপনে তার নানা বাড়ি পার্শ্ববর্তী রাজৈর উপজেলার দামেরচর গ্রামে বসে বিয়ে দিচ্ছিলেন। এ সময় রাজৈর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার গোপন খবরের ভিত্তিতে পুলিশ নিয়ে বিয়ে বাড়ি হানা দেন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কনে দৌড়ে ঘরের মধ্যে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে বর বিয়ে বাড়িতে পৌছাতে সাহস পায়নি। মাঝ পথ থেকে বর সুশান্ত রায় সহযাত্রীদের নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে অনেক খোঁজা খুজির পর কনে পাওয়া গেল। চম্পা রায় বলেন, “আমি এবার এসএসসি পরীক্ষা দেব। আমি বিয়ে করতে চাইনি। বাবা মা জোর করে আমাকে বিয়ে দিচ্ছিল। আমি পড়াশুনা করতে চাই।” রাজৈর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার বলেন, “গোপন খবরে জানতে পারি এস এসসি পড়ুয়া এক ছাত্রীকে জোর করে তার বাবা-মা বিয়ে দিচ্ছে। পরে পুলিশ নিয়ে রাতে বিয়ে বাড়ি গিয়ে এ বাল্য বিয়ে ভেঙ্গে দেই। বাল্য বিয়ের দায়ে কনের বাবা-মাকে আটক করি। পরে মুচলেকা দেয়ায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।”
×