ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ইভিএমে ৫০% ভোট না পড়লে ব্যালটে ফের ভোটগ্রহণ করা উচিত: মাহবুব তালুকদার

প্রকাশিত: ০৯:৪৬, ২২ জানুয়ারি ২০২০

ইভিএমে ৫০% ভোট না পড়লে ব্যালটে ফের ভোটগ্রহণ করা উচিত: মাহবুব তালুকদার

অনলাইন রিপোর্টার ॥ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ৫০ শতাংশ ভোট না পড়লে ব্যালট পেপারে পুনরায় ভোটগ্রহণ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে বুধবার (২২ জানুয়ারি) লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম-৮ আসনের সাম্প্রতিক উপ-নির্বাচনে সবগুলো কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হয়। এতে ২২ দশমিক ৯৪ শতাংশ ভোট পড়েছে। একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম বিহীন ব্যালট পেপারে যে ২৯৪টি আসনে ভোট হয়েছে, ভোটের হার যেখানে ছিল শতকরা ৮০ ভাগ, সেখানে ইভিএম ব্যবহারে ২৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ কম ভোট পড়েছে। এর কারণ ইভিএম নিয়ে ভোটারদের মনে আছে ইভিএম ভীতি। অন্যদিকে ইভিএমে জাল ভোট প্রদান প্রতিহত করা এক বিরাট সমস্যা। বুথ দখল করে বা গোপন কক্ষে গিয়ে জাল ভোট প্রদানের ঘটনা অবশ্যই প্রতিহত করতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও অন্যান্য নির্বাচন কর্মকর্তাদের সম্মিলিতভাবে গোপন কক্ষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আবশ্যক। বর্তমান সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার কমিশনের জন্য এক অগ্নিপরীক্ষা। নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি বৃদ্ধিও একান্ত অপরিহার্য উল্লেখ করে মাহবুব তালুকদার বলেন, এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য। ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সাফল্যের ওপর নির্ভর করছে এই যন্ত্রটির ভবিষ্যত। এই নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার প্রশ্নবিদ্ধ হলে শুধু নির্বাচন নয়, ইভিএম যন্ত্রটির ভবিষ্যতও অনিশ্চিত হয়ে যেতে পারে। আমার মতে যে কোনো নির্বাচনে শতকরা ৫০ ভাগ ভোট না পড়লে নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। এজন্য বিশ্বের অনেক দেশে ৫০ শতাংশের কম ভোট পড়লে পুনরায় ভোটগ্রহণ করা হয়। ইভিএম সম্পর্কে আমার বক্তব্যের বটম লাইন হলো, ইভিএম-এ যদি ৫০ শতাংশ ভোট না পড়ে, তাহলে ব্যালট পেপারে পুনরায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। এজন্য নির্বাচনি বিধি-বিধান পরিবর্তন প্রয়োজন হতে পারে। ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের কার্যকালের সর্বাধিক গুরুত্বসম্পন্ন নির্বাচন। এই নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। একজন প্রার্থীতো সংসদ সদস্যের পদত্যাগ করে এই নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচনকে ঘিরে রাজধানীবাসীর উৎসুক ও উদ্বেগ অন্তহীন। দেশবাসী ও বিশ্ববাসীর দৃষ্টি এই নির্বাচনের দিকে নিবন্ধ। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার একমাত্র অবলম্বন। সংবিধানের রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি ‘গণতন্ত্র ও মানবাধিকার’ অংশে বলা হয়েছে- “প্রশাসনের সকল পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হইবে”। এজন্য অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ আইনানুগ নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন এত গুরত্বপূর্ণ। যারা সত্য মূল্য না দিয়ে অবৈধভাবে নির্বাচিত হন, তাদের দ্বারা প্রশাসনে ‘জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ’ নিশ্চিত হতে পারে না। সংবিধানের প্রতিটি নির্দেশ প্রজাতন্ত্রের সকল নাগরিকের পরিপালন বাধ্যতামূলক।
×