ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতীয় উদ্যোক্তাদের জন্য পৃথক অর্থনৈতিক জোন হবে ॥ শিল্পমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৭:০৯, ২২ জানুয়ারি ২০২০

ভারতীয় উদ্যোক্তাদের জন্য পৃথক অর্থনৈতিক জোন হবে ॥ শিল্পমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতীয় উদ্যোক্তাদের জন্য একটি পৃথক অর্থনৈতিক অঞ্চল করতে সব ধরনের সুবিধা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। অন্যদিকে ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাশ বলেছেন বন্ধু প্রতীম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রায় ভারতের অংশীদারিত্ব বাড়বে। এলক্ষ্যে ভারত ভবিষ্যতে বাংলাদেশে সরাসরি বিনিয়োগ বাড়াবে। বুধবার রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য প্রদর্শনী ‘ইন্ডি বাংলাদেশ-২০২০’ এর উদ্বোধন করা হয়। বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনের সহায়তায় ভারতের ইঞ্জিনিয়ারিং এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিল (ইইপিসি) এই প্রদর্শনীর আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে শিল্পমন্ত্রী এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে রীভা গাঙ্গুলী দাশ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মুনতাকিন আশরাফ, ভারতের ইঞ্জিনিয়ারিং এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান রভি শেহগাল ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মহেশ কে দেশাই। শিল্পমন্ত্রী বলেন, দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ বাড়াতে দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ দিন দিন বাড়ছে। আর এ কারণেই ভারতের জন্য একটি পৃথক অঞ্চলের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে সরকার। তিনি বলেন, এ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করে উৎপাদিত পণ্য ভারতে রফতানির সুবিধা নিতে নিতে সেদেশের উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে। এতে তারা সবচেয়ে বেশি লাভবান হতে পারবেন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার দেশি-বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে বাংলাদেশ অত্যন্ত উদার নীতি গ্রহণ করেছে। ফলে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। বিদেশী বিনিয়োগ বাড়াতে সরকার আকর্ষণীয় প্রণোদনাসহ ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রাথমিক তথ্য সেবা থেকে শুরু করে নিবন্ধন পর্যন্ত সর্বত্মক সহায়তা দিচ্ছে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিডা। তিনি বলেন, ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় অনেক স্বনামধন্য উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। এর ফলে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশে ভারতীয় বিনিয়োগ ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাশ বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ক্রমেই বাড়ছে এবং ব্যবসা ও বিনিয়োগের জন্য নতুন নতুন ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। তিনি বাংলাদেশের ধারাবাহিক ও টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রশংসা করে বলেন, গত অর্থবছরে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশ উদীয়মান অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়েছে। ভারতীয় হাইকমিশনার আরও বলেন, বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রায় ভারতের অংশীদারিত্ব বাড়বে। এ লক্ষ্যে ভারত ভবিষ্যতে বাংলাদেশে সরাসরি বিনিয়োগ বাড়াবে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির ধারাকে এগিয়ে নিতে প্রকৌশল শিল্পের বিকাশ গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরণের প্রদর্শনী আয়োজন দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা জোরদারের পাশাপাশি বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইনে অংশীদারিত্বের সুযোগ শক্তিশালী করবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। প্রসঙ্গত, তিন দিনব্যাপী এ প্রদর্শনী ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। এতে ভারতের শতাধিক প্রকৌশল উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদিত পণ্য ও প্রযুক্তি প্রদর্শন করছে। এ প্রদর্শনী প্রতিদিন সকাল ১১ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
×