ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

আসামি পাগলা মিজান, কারাগারে তোতলা মিজান

প্রকাশিত: ০৪:০২, ২২ জানুয়ারি ২০২০

আসামি পাগলা মিজান, কারাগারে তোতলা মিজান

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ বিস্ফোরক মামলার আসামি পাগলা মিজান। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে গিয়ে না পেয়ে দিনমজুর তোতলা মিজানকে গ্রেফতার করেছে। পরে তাকে কারাগারেও পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার যশোর সদর উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে। গ্রেফতার দিনমজুর তোতলা মিজান যশোর সদর উপজেলার খোলাডাঙ্গা গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে। আর বোমা বিস্ফোরণ মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি পাশের গ্রাম সুজলপুর হঠাৎপাড়ার নূরুল হাওলাদারের ছেলে মিজানুর রহমান ওরফে পাগলা মিজান। এর আগেও গত বছর ১৭ ফেব্রুয়ারি যশোরে মিঠু শেখ হত্যা মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি জনির পরিবর্তে সবুজ বিশ্বাস নামে নিরাপরাধ এক যুবককে ধরে জেলে দেয় পুলিশ। সবুজের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে আদালতের বিচারক এ ঘটনায় তদন্ত কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিলেন। এছাড়া গেল ৯ ডিসেম্বর যশোরের চৌগাছায় আসামির সঙ্গে নামের মিল থাকায় মরহুম আহাদ আলী দফাদারের ছেলে আব্দুল আজিজকে কারাভোগ করতে হয়। নামের মিল থাকায় পুলিশ মূল আসামিকে না ধরে বৃদ্ধ আজিজকে ধরে কারাগারে পাঠায়। আর সর্বশেষ গ্রামের নাম আলাদা হলেও পুলিশ মিজান নামে একজনকে বোমা বিস্ফোরণ মামলায় কারাগারে প্রেরণ করেছে। মামলা সূত্র মতে, ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি শহরতলীর সুজলপুর জামতলা আকবর মিয়ার রড ফ্যাক্টরির সামনে খোলাডাঙ্গা গ্রামের সাগর, তাহের, সুজলপুরের হঠাৎপাড়ার মিজানুর রহমান ওরফে পাগলা মিজান, নাজু, জাহাঙ্গীর, রিপন, রনি ও রবিউলসহ ১০/১২ জনে নাশকতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে লেখা কিছু পোস্টার টানাতে যান। এ সময় সুজলপুর গ্রামের আব্দুস সালাম মিঠু তাদের পোস্টার লাগাতে নিষেধ করেন। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আব্দুস সালাম মিঠুকে লক্ষ্য করে কয়েকটি বোমা নিক্ষেপ করে। মিঠুর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে সাগর ও তাহেরকে দুটি বোমাসহ আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। এ ঘটনায় আব্দুস সালাম মিঠু বাদী হয়ে আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও দুইজনের বিরুদ্ধে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন। প্রথমে মামলাটি তদন্ত করেন কোতোয়ালি থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) সোলায়মান আক্কাস। সর্বশেষ মামলাটি তদন্ত করে আটজনের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন উপপরিদর্শক (এসআই) হায়াৎ মাহমুদ খান। মামলার এজাহারে এবং চার্জশিটে আসামির নাম মিজানুর রহমান ওরফে পাগলা মিজান। বাবার নাম নূরুল হাওলাদার ও গ্রামের নাম সুজলপুর হঠাৎপাড়া উল্লেখ করা হয়। অথচ মঙ্গলবার ভোররাতে খোলাডাঙ্গা গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে মিজানুর রহমান ওরফে তোতলা মিজানকে গ্রেফতার করেন কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের এএসআই আল মিরাজ খান। এ সময় মিজান জাতীয় পরিচয়পত্র দেখাতে চাইলেও তিনি শুনেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী মিজান আদালতের বারান্দায় সাংবাদিকদের জানান, তিনি স্যানেটারি মিস্ত্রির কাজ করে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে দিনাতিপাত করেন। তার বিরুদ্ধে কোনো দিন মামলা হয়নি। কিন্তু পুলিশ কোনো কথাই না শুনে তাকে গ্রেফতার করেন। এ ব্যাপারে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×