ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জন্মবার্ষিকীর আলোচনা

ক্যাপ্টেন মনসুর আলীর জীবনাদর্শ অনুসরণযোগ্য

প্রকাশিত: ১০:২৫, ২১ জানুয়ারি ২০২০

  ক্যাপ্টেন মনসুর আলীর জীবনাদর্শ  অনুসরণযোগ্য

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ‘জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনাদর্শ বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য অনুসরণযোগ্য। তিনি ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশ্বস্ত সহচর। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর খুনী মোশতাক তাকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু মনসুর আলী সেই প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছেন, জাতির পিতার সঙ্গে বেইমানি করেননি।’ সোমবার রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর ১০৩তম জন্মবার্ষিকীর আলোচনা সভায় জাতীয় নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। শহীদ এম মনসুর আলী স্মৃতি সংসদ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, স্বাধীনতার পর খাদ্যের অভাবে কেউ মারা না যাওয়ার কৃতিত্বের দাবিদার এম মনসুর আলী। তখন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার এটা সম্ভব হয়েছিল। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের অপর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত আস্থাভাজন ছিলেন জাতীয় চার নেতা। বঙ্গবন্ধু যখনই কোন আস্থার জায়গা খুঁজতেন, তখনই তাদের ওপর নির্ভর করতেন। তিনি বলেন, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার জাতীয় চার নেতার মধ্যে একমাত্র এম মনসুর আলীকেই প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন খুনী মোশতাক। কিন্তু মনসুর আলী সেই প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন এবং মৃত্যুতে আলিঙ্গন করেন। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ছাত্রজীবন থেকে আমি মনসুর আলীসহ জাতীয় চার নেতাকে নিবিড়ভাবে দেখেছি। তাদের আদরে-¯েœহে আর রাজনৈতিক শিক্ষায় সমৃদ্ধ হয়ে জীবন আমার ধন্য। জাতীয় চার নেতা জীবন দিয়েছেন, কিন্তু বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বেইমানি করেননি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট যেদিন জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করা হয়, আমরা সেদিন নিঃস্ব হয়ে গিয়েছি। যাঁর নেতৃত্বে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি, যাঁর জন্ম না হলে এ দেশ স্বাধীন হতো না, তাঁকে বাংলার মাটিতে এভাবে জীবন দিতে হবে, এটা আমরা কখনোই ভাবিনি। শহীদ এম মনসুর আলীর সন্তান ও আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম এমপি বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট হত্যাকান্ডের পর আমার বাবা মনসুর আলীকে খোন্দকার মোশতাক প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ঘৃণাভরে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এম মনসুর আলী বলেছিলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রী হতে চাই না। জীবন দেব, তবুও তোমার মতো বেইমানের সঙ্গে হাত মেলাব না।’ কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক বলেন, আমি নিজেকে গর্ববোধ করি এই জন্য যে, আমি খুনী মোশতাকের মতো বেইমানের সন্তান নই। জাতীয় এ নেতাকে অনুসরণ করে এগিয়ে যাওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি আরও বলেন, মুজিববর্ষে একাত্তর-পঁচাত্তরের খুনীদের আশ্রয়দাতাদের দখলে দেয়া যেতে পারে না। আইন করে সিটি নির্বাচনে আমাদের মুখ বন্ধ করা হয়েছে, কিন্তু হৃদয় বন্ধ করতে পারেনি। হৃদয় দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির বিজয় নিশ্চিত করা হবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সফলতা হিমালয়ের মতো। দেশের উন্নয়নের জন্য শেখ হাসিনার বিকল্প শেখ হাসিনাই। আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, বিরল গুণের অধিকারী শহীদ এম মনসুর আলী ধমক দিয়ে উচ্চকণ্ঠে কখনও কারও সঙ্গে কথা বলতেন না। তার আদর্শ অনুসরণযোগ্য। খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য মোজাফফর হোসেন পল্টু, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম প্রমুখ।
×