ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী

ঘুমের চক্র ফিরিয়ে আনুন আগের নিয়মে

প্রকাশিত: ০৮:২৭, ২১ জানুয়ারি ২০২০

ঘুমের চক্র ফিরিয়ে আনুন আগের নিয়মে

ভ্রমণ, শিফটকাজ, এমনকি কয়েক রাত ভাল ঘুম না হওয়া, ঘুমের চাকাকে করে দিতে পারে ওলট-পালট। দৈনন্দিন ছন্দে ঘটে চ্যুতি, যে দেহঘড়ি আমাদের নিদ্রা আর জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে সেই ঘড়ি চলে বেনিয়মে। তবে ঘুমের চাকাকে আগের মতো চলার জন্য অপনারও কিছু করার আছে। সকালে ব্যবহার করুন উজ্জ¦ল আলো দেহঘড়ি কিছু সঙ্কেত যেমন আলো বা অন্ধকারের নির্দেশে যেন স্থাপিত। যখন আহার করি বা ব্যায়াম করি এগুলোও প্রভাব ফেলে দেহঘড়ির ওপর। সঙ্কেত নির্দেশের মধ্যে সবচেয়ে জোরালো হলো আলো। এটি মগজকে বলে এটি দিন না রাত, আর বলে দেয় কখন ঘুমাতে হবে। শেষ বিকেলে আর সন্ধ্যায় ম্লান করে দিন আলো রাতে খুব বেশি আলো ঘুমের সময়কে দেয় পিছিয়ে। তাই রাতে আলো কমাতে হলে; দিনের শেষে ম্লান করে দিন আলো। মাথার ওপর উজ্জ্বল আলো অফ্্ করে দিন। ল্যাপটপ, ট্যাবলেট, সেল ফোন, টিভি রাখবেন না শয্যাঘরে। ঘুমের ঘণ্টাখানেক আগে পর্যন্ত ব্যবহার করুন। এসব ইলেকট্রনিক ড্রিল যে নীল আলো বিকিরণ করে, আমাদের চোখ এ আলোর প্রতি খুব সংবেদনশীল। রাতভর শিফটে থাকলে, কাজ শেষ করে বাড়ি যাওয়া পর্যন্ত রোদচশমা পরুন। কি করে রক্তের গড় সুগার মান থাকবে নিয়ন্ত্রণে অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী রক্তের তিন মাসের গড় সুগার মান মাপা হয় যে টেস্ট করে এর নাম ‘এআইসি’ (AIC) রক্ত পরীক্ষা। রক্তের গ্লাইকেটেড হিমোগ্লবিন পরিমাণ পরিমাপ করা হয় যন্ত্রের মাধ্যমে। আমাদের লোহিত কণিকায় আছে একটি প্রোটিন হিমোগ্লবিন। গ্লুকোজ যখন রক্তে প্রবেশ করে এটি সংযুক্ত হয় হিমোগ্লবিনের সঙ্গে তৈরি হয় ‘গ্লাইকেটেড হিমোগ্লবিন’। রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ যত বেশি হবে, গ্লাইক্রেটেড হিমোগ্লবিন তত বেশি হবে। ‘এআইসি হলো কত সুষ্ঠুভাবে ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনা চলছে এর একটি মূল্যবান সূচক। যদি এআইসি মান বেশি থাকে তাহলে একে কমাবার আছে কিছু উপায়। ১। কঠোর ব্যায়ামের ছোট ছোট সেশন। ২০১৫ সালে আমেরিকান হার্ট এ্যাসোসিয়েশনের অধিবেশনে উপস্থাপিত নিবন্ধে বলা হয়েছে টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগী যারা দিনে আধাঘণ্টা ব্যায়াম করেছেন এবং হৃদঘাত হার লক্ষ্যের ৬৫ শতাংশ অর্জন করেছেন। এদের তুলনায় যারা দিনে ১০ মিনিট দিনে তিনবার করে সপ্তাহে ৫ দিন ব্যায়াম করে হৃদঘাত হারের ৮৫ শতাংশ অর্জন করেছেন তাদের এআইসি মানের উন্নতি হয়েছে এর দ্বিগুণ। তবে কঠোর ব্যায়ামের আগে জামায়াতের পরামর্শ নিতে হবে এবং হার্টরেট মনিটর করে নিতে হবে যাতে অতিরিক্ত ব্যায়াম না হয়। ২। ডিনার প্লেটকে ছোট করতে হবে। রাতের খাবারের জন্য বড় ডিনার প্লেটের বদলে নিন ছোট স্যালাড প্লেট। প্লেট ভর্তি খাবার, অথচ ছোট প্লেট, তাই পরিমাণ হবে কম, চোখ দেখবে অনেক খাবার মগজ বুঝবে অনেক খাওয়া হলো, কম খেয়েও তৃপ্তি আসবে। ৩। গোটা খাবার খান গোটা ফল সবজি খান। ফল সবজির রস নয়। রাতের সুগার তাই তুঙ্গে উঠবে না। যখন গোটা আপেল বা কমলা খান, তখন আঁশও খাওয়া হয় তাই গ্লুকোজ শোষণ হয় ধীরে, রক্ত বাড়ে ধীরে। ফলের রসে আঁশ থাকে না, তাই সুগার সরাসরি যায় রক্তে। আর আঁশ থাকলে পেট ভরাট লাগে, তাই খাওয়া হয় কম। ৪। যথেষ্ট ঘুম হবে তবে খুব বেশি নয়। ৫। লিখে রাখুন সব প্রতিদিনের অগ্রগতি। লেখক : পরিচালক ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস বারডেম
×