ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মৌলভীবাজারে স্ত্রী-শাশুড়িসহ ৪ জনকে হত্যার পর আত্মহত্যার ঘটনায় দুই মামলা

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ২০ জানুয়ারি ২০২০

মৌলভীবাজারে স্ত্রী-শাশুড়িসহ ৪ জনকে হত্যার পর আত্মহত্যার ঘটনায় দুই মামলা

সংবাদদাতা, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) ॥ পারিবারিক কলহের জেরে মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় স্ত্রী ও শাশুড়িসহ চারজনকে কুপিয়ে হত্যার পর ঘাতকের আত্মহত্যার ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার রাতে পাল্লাতল চা বাগানের ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন বাদী হয়ে মামলা দুটি করেন। একটি হত্যা মামলা (নং-০৯) এবং অপরটি অপমৃত্যু মামলা (০২)। তবে মামলায় কাউকে আসামি করা হয়নি। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন কানন বক্তা নামের এক মহিলা। বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসিনুল হক পৃথক দুটি মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রোববার ভোরে মৌলভীবাজারের বড়লেখায় শাহবাজপুর ইউনিয়নের পাল্লাতল চা বাগানে স্ত্রী ও শাশুড়িসহ চারজনকে কুপিয়ে হত্যার পর আত্মহত্যা করেন নির্মল কর্মকার (৩২)। বাকি নিহতরা হলেন- নির্মল কর্মকারের স্ত্রী জলি বক্তা, তার মা লক্ষ্মী ব্যানার্জি, ভাই বসন্ত বক্তা ও তার মেয়ে শিউলি বক্তা। এ সময় পালিয়ে রক্ষা পেয়েছে স্ত্রীর আগের পক্ষের মেয়ে চন্দনা (৮)। এ ছাড়া গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন একই পরিবারের আরও এক নারী। পুলিশ ও এলাকাবাসীর ভাষ্য, পারিবারিক কলহের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে। জানা গেছে, উপজেলার সীমান্তবর্তী পাল্লাতল চা বাগানের বাজার টিলার বাসিন্দা বিষ্ণু বক্তার মেয়ে বাগান শ্রমিক জলি বক্তাকে (২৮) ছয় মাস আগে বিয়ে করেন নির্মল কর্মকার। জলির আগের স্বামীর ঘরের চন্দনা নামে আট বছরের এক মেয়েও তাদের সঙ্গে থাকতো। রোববার ভোরে নির্মল ও জলির মধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া শুরু হয়। একপর্যায়ে নির্মল ধারালো দা দিয়ে জলিকে কোপাতে শুরু করলে তিনি দৌড়ে মা লক্ষ্মী ব্যানার্জির (৪৭) ঘরে গিয়ে আশ্রয় নেন। নির্মল সেখানে ঢুকে জলি, তার মা লক্ষ্মী ব্যানার্জি, ভাই বসন্ত বক্তা ও ভাইয়ের স্ত্রী কানন বক্তা এবং তাদের মেয়ে শিউলি বক্তাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। এতে ঘটনাস্থলেই চারজনের মৃত্যু হয়। এরপর নির্মল কর্মকার দা দিয়ে নিজের গলায় কোপাতে কোপাতে বসন্তের ঘরে ঢুকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরে স্থানীয়রা এসে গুরুতর আহত কানন বক্তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। এদিকে নিহত জলির সাবেক স্বামীর ঘরের মেয়ে চন্দনা ঝগড়া শুরুর পরই পালিয়ে যাওয়ায় নির্মলের হাত থেকে রক্ষা পায়। বড়লেখা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জসীম বলেন, ঘটনার নেপথ্যে অন্য কোনো কারণ রয়েছে কি না পুলিশ তা অনুসন্ধান করছে।
×