ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শজিমেকে মুক্তিযোদ্ধাসহ পরিবারের ৫ সদস্যকে মারপিট

প্রকাশিত: ০৮:২০, ২০ জানুয়ারি ২০২০

 শজিমেকে মুক্তিযোদ্ধাসহ পরিবারের ৫ সদস্যকে মারপিট

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাসহ তার পরিবার পাঁচ সদস্য মারপিটের শিকার হয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধা হেলাল উদ্দিন (৬৭), তার অসুস্থ স্ত্রী মাজেদা ইয়াসমিনের (৫৫) চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি ও তার স্ত্রীসহ পরিবারের পাঁচ সদস্য নির্যাতনের শিকার হন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। রবিবার দুপুর এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করে দোষীদের দৃষ্টান্তুমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে। অপর দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘটনাটিকে ভুল বোঝাবুঝি হিসেবে উল্লেখ করে হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডাঃ মুসা আল মানসুরকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। শহরের ফুলবাড়ি দক্ষিণপাড়া এলাকার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা হেলাল উদ্দিন জানান, বুকের ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়া স্ত্রী মাজেদা ইয়াসমিনকে নিয়ে শুক্রবার বিকেল থেকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মাজেদা ইয়াসমিন হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগে ভর্তি ছিলেন। শনিবার বিকেলে শ্যালক জাহিদুল রহমান ও মেয়ে মাসুমা আক্তার ছিলেন রোগীকে দেখতে যান। অভিযোগ করা হয়েছে শনিবার বিকেলে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে সেখানে দায়িত্বরত দু’জন বেড ছেড়ে চলে যতে বলেন। এতে পরিবারের লোকজন তাদের বলেন, রোগী এখনও অসুস্থ। খবর পেয়ে মুক্তিযোদ্ধা হেলাল উদ্দিন হাসপাতালে যান। বেড ছেড়ে চলে যেতে বলায় মুক্তিযোদ্ধার শ্যালকের ওপর দায়িত্বরত দু’জন ক্ষিপ্ত হন এবং কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে সেখানে ‘দায়িত্বরত ব্যক্তি’ দরজা বন্ধ করে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে অবরুদ্ধ করে ১০/১২ জন ইন্টার্ন চিকিৎসককে ডেকে আনে। পরে তারা মুক্তিযোদ্ধার ওপর চড়াও হয়ে মারপিট করতে থাকে। এতে তার স্ত্রী এবং শ্যালক রক্ষা করতে এগিয়ে আসলে তাদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। মারপিটের ঘটনায় রোগীর মেয়ে মোবাইলে ধারণ করার চেষ্টা করলে তাকেও হেনস্থা ও টানাহেঁচড়া করে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়া হয়। পুলিশের সহায়তায় মোবাইল ফোন ফেরত পাওয়া যায়। এ ঘটনায় রোগীর মেয়ে, তার দুই ভাই, মাজেদুর রহমান ও মোকসেদুর রহমানকে ফোন করে হাসপাতালে আসতে বলেন। তারা কার্ডিওলজি বিভাগে গেলে তাদের পুলিশের সামনেই বেদম মারপিট করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে। পরে মুক্তিযোদ্ধা হেলাল উদ্দিন ঘটনাটি সদর থানা পুলিশকে জানান। পুলিশের সহায়তায় নির্যাতিত পরিবারটি হাসপাতাল থেকে চলে আসতে পারেন। এ ব্যাপারে বগুড়া সদর থানার ওসি জানান, মুক্তিযোদ্ধা নির্যাতনের বিষয়টি জানার পর তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানান এবং মেডিক্যাল পুলিশের সহায়তায় নির্যাতিত পরিবারটি সেখান থেকে চলে আসেন। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দেয়া হবে বলে মুক্তিযোদ্ধার পরিবার থেকে জানানো হয়েছে বলে পুলিশ জানায়। অপর দিকে ঘটনার বিষয়ে শজিমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ আব্দুল ওয়াদুদ রবিবার জানন, বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝির কারণে হয়েছে। রোগী সুস্থ হওয়ায় তাকে পোস্ট সিসিইউ’তে পাঠানোর কথা বলায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি তদন্তে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি ঘটনা গঠন করা হয়েছে বলে তিনি জানান। উল্লেখ্য, রোগীর সঙ্গে এ ধরনের ঘটনা বগুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নতুন ঘটনা নয়। সাংবাদিকদের প্রবেশ নিয়ে সেখানে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে।
×