ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চাল রফতানির বাজার খুঁজছে সরকার ॥ খাদ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১১:২২, ১৯ জানুয়ারি ২০২০

চাল রফতানির বাজার খুঁজছে সরকার ॥ খাদ্যমন্ত্রী

জাবি সংবাদদাতা ॥ একসময় বাংলাদেশে সাত কোটি মানুষ ছিল। তখন আমরা খাদ্যাভাবে থাকতাম এবং বিদেশ থেকে চাল আমদানি করতে হয়েছে। কিন্তু এখন আমরা বিদেশ থেকে চাল আমদানি না করেও ১৭ কোটি মানুষের পূর্ণ খাদ্যের সহায়তা দিতে পারছি। মানুষ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জমি কমেছে তারপরেও দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমরা এখন চাল রফতানির বাজার খুঁজছি। বাংলাদেশ সরকারের খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার শনিবার সকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের সেমিনার কক্ষে বাংলাদেশ বোটানিক্যাল সোসাইটির আয়োজনে ‘বার্ষিক বোটানিক্যাল সম্মেলন’ শীর্ষক সেমিনারে এ সব কথা বলেন। সরকার ভেজালের বিরুদ্ধে নিরাপদ খাদ্যের জন্য কাজ করছে উল্লেখ করে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পর সরকার এখন মানুষের কাছে ভেজাল মুক্ত পুষ্টিমান ও নিরাপদ খাবার সরবরাহের জন্য কাজ করছে। আমরা এখন চালের মধ্যে পুষ্টি সরবরাহ করছি। বিভিন্ন সরকারের সময় বহু ধরনের জটিলতার সৃষ্টি হয়ে আমরা পেছাতে পেছাতে আবার মাথা তুলে দাঁড়ানোর উপক্রম হয়েছি। একজন কৃষক চাষাবাদ করে চাহিদা অনুযায়ী ফল না পেলে পরবর্তীতে তাদের আগ্রহ কমে যায়। কিন্তু এখন বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতা ও উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের গবেষণার ফলে কৃষকরা সব ধরনের ফসল চাষাবাদে আগ্রহী হচ্ছে। উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের কারণেই দেশের কৃষকদের এত সফলতা।’ তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭১ এ জাতির পিতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলাম। মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার সময় কখনও ভাবিনি আমরা আবার মায়ের কোলে ফিরে আসতে পারব। জাতির পিতার সেই আহ্বান এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম; তুমি কে আমি কে বাঙালী, বাঙালী; তোমার আমার ঠিকানা পদ্মা, মেঘনা, যমুনা আমরা যদি এই বিষয়টাকে পুঁজি করেই দেশকে ভালবাসতাম আর যদি আমাদের দেশপ্রেম ঠিকমতো থাকত তাহলে এই বাংলাদেশ আরও আগেই স্বপ্নের সোনার বাংলা হয়ে যেত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় চেষ্টা করেন সৎ থেকে দেশের প্রতিটা জায়গার উন্নয়ন ও দুর্নীতিমুক্ত করার। দেশের উন্নয়নের জন্যে তিনি একাই যে পরিমাণ চিন্তা করেন, তা আমাদের মতো হাজার হাজার মানুষের পক্ষেও সম্ভব না।’ অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বলেন, ‘প্রকৃতির গুরুত্বপূর্ণ অবদান হলো উদ্ভিদ। গত ছয় বছরে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে পাঁচ হাজারের মতো গাছ লাগিয়েছি। কিন্তু শুধু গাছ লাগালেই হবে না সেটাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য তার যতœ নেয়া প্রয়োজন। এছাড়া আমাদের পরিকল্পিতভাবে গাছ লাগানো উচিত যাতে ভবিষ্যতে সেই গাছগুলো কেটে না ফেলতে হয়। এ বিষয়ে আমাদের অধিক সচেতন হতে হবে।’ এ সময় সরকারী কর্ম কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক জেড এন তাহমিদা বেগম, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোঃ আমির হোসেন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নুরুল আলম, বাংলাদেশ বোটানিক্যাল সোসাইটির (বিবিএস) সভাপতি অধ্যাপক এম আবদুল গফুর, বার্ষিক উদ্ভিদ বিজ্ঞান সম্মেলনের আহ্বায়ক অধ্যাপক ফিরোজা হোসেন ও সদস্য সচিব অধ্যাপক এম মাহফুজুর রহমান এবং জাবি উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোঃ নুহু আলম উপস্থিত ছিলেন। এর আগে শনিবার সকাল সাড়ে নয়টায় বাংলাদেশ সরকারের খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এ বার্ষিক উদ্ভিদবিজ্ঞান সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। দিনব্যাপী এই সম্মেলনের মূল বিষয়বস্তু ছিল ‘নভেল এ্যাপ্রোচ এ্যান্ড রিসেন্ট ডেভেলপমেন্ট ইন প্লান্ট সায়েন্স’। সম্মেলনে বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্যে ছিল পোস্টার সেশন, প্ল্যানারি সেশন, সায়েন্টিফিক সেশন, বিজনেস সেশন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
×