ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পলাশবাড়ীতে শাওনকে হত্যার ঘটনায় মেজোভাই গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৯:০৬, ১৫ জানুয়ারি ২০২০

পলাশবাড়ীতে শাওনকে হত্যার ঘটনায় মেজোভাই গ্রেফতার

নিজস্ব সংবাদদাতা, গাইবান্ধা ॥ গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার ব্যবসায়ী শাওন আহমেদ (৩৫) হত্যা রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। নিহত শাওনের স্ত্রীর সাথে মেঝো ভাই তানজীর আহমেদের পরকীয়া প্রেমের কারণে পথের কাটা দুর করতে শাওনকে হত্যা করা হয়। উপজেলার বরিশাল ইউনিয়নের ভগবানপুর গ্রামের শাওন আহমেদ নামে এক ব্যবসায়ীর লাশ গত ৬ জানুয়ারি স্থানীয় এক বায়োগ্যাস প্ল¬ান্টের হাউজ (কুপ) থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পরদিন পলাশবাড়ী থানায় মামলা দায়ের হয়। হত্যার রহস্য উদ্ধারে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের বড়ভাই তানজীর আহমেদকে (৩৭) গত রোববার রাতে আটক করলে তার জবানীতেই বেরিয়ে আসে শাওন হত্যার রহস্য। গাইবান্ধার সহকারি পুলিশ সুপার মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, নিহত শাওনের স্ত্রী মোছাঃ রোজিনা বেগমের উপর কু-নজর পরে ভাসুর তানজীরের। প্রথমদিকে রোজিনা তার প্রস্তাবে রাজি হয়নি। কিন্তু মোবাইল ফোনে দিনের পরদিন তাদের প্রেমালাপ জমতে থাকে। এরপর রোজিনাকে আজীবন কাছে পেতে ছোটভাইকেই দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে তানজীর পরিকল্পনা করে। তারপর ওই গ্রামে আয়োজিত ওয়াজ মাহফিলের রাতে তানজীর ছোটভাইকে একটি মিথ্যা ঘটনার গল্পের ফাঁদে আটকান। তানজীর তার ছোটভাইকে বলেন, একটা মেয়ের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক হয়েছে। সেই মেয়েটা এখন তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে। মেয়েটি ঘটনার দিন (৬ জানুয়ারি রাতে) স্থানীয় একটি চাতালের পাশে তার সাথে দেখা করতে আসবে। তানজীর তার ছোট ভাইকে অনুরোধ করে সে যেন সেখানে যায় এবং মেয়েটিকে বুঝিয়ে বাড়ীতে ফেরত পাঠায়। বড় ভাইয়ের অনুরোধে নির্দিষ্ট সেই স্থানে যান শাওন। কিন্তু চাতালে গিয়ে অনেক অপেক্ষার পরও তিনি কোন মেয়ের দেখা পাননি। তখন শাওন বাড়ি ফেরার জন্য পা বাড়ান। এ সময় তানজীর সেখানে গিয়ে তার সঙ্গে থাকা ধারালো দা দিয়ে ছোটভাইকে পেছন থেকে মাথায় আঘাত করতে থাকে। উপর্যুপরি আঘাতে শাওন সেখানেই মারা যান। পরে তানজীর তার লাশ টেনে চাতাল সংলগ্ন বায়োগ্যাস প্ল্যান্টের হাইজে (কুপে) ফেলে দেয়। বস্তায় ইট ভরে তা লাশের উপর চাপিয়ে দেন। যাতে লাশ উপরে ভাসতে না পারে। কিন্তু পরদিন ঠিকই লাশ ভেসে ওঠে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ৬ জানুয়ারি ভগবানপুর গ্রামের একটি বায়োগ্যাস প্ল¬ান্টের হাউজ (কুপ) থেকে একই গ্রামের সাবু মিয়ার ছেলে ও স্থানীয় কোমরপুর বাজারের মুদি দোকানদার শাওনের লাশ উদ্ধার পুলিশ। সংসারে তার স্ত্রী ও চার বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। শাওন আগের দিন ৫ জানুয়ারি রাত ৯টার পর কোমরপুর বাজারে দোকান বন্ধ করে বাড়ী রওনা হন। কিন্তু তিনি আর বাড়ী পৌঁছাননি। পরিবারের লোকজন রাতে বিভিন্ন স্থানে খোঁজ খবর নিয়ে তার কোন সন্ধান পাননি। পরদিন মঙ্গলবার সকালে ভগবানপুর গ্রামের একটি বায়োগ্যাস প্লান্টের হাউজে (কুপে) শাওনের মরদেহ দেখতে পায় এলাকাবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠান। পলাশবাড়ি থানার ওসি মাসুদার রহমান জানান, গ্রেফতার তানজির আহমেদকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তানজির হত্যার সাথে জড়িত থাকার স্বীকারোক্তি দিয়েছে আদালতে।
×