ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রচারযুদ্ধে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন চার মেয়র প্রার্থী

প্রকাশিত: ১১:২২, ১৫ জানুয়ারি ২০২০

প্রচারযুদ্ধে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন চার মেয়র প্রার্থী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এবার প্রার্থী হওয়ার আগে ঢাকা উত্তর সিটিতে মেয়র হিসেবে ৯ মাসের জন্য দায়িত্ব পালন করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম। নির্বাচিত হলে সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চান তিনি। এজন্য তিনি মঙ্গলবার প্রচারে নেমে ভোটারদের কাছে আর একটিবার এই পদে দায়িত্ব পালনের সুযোগ চান। অবশ্য তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বিএনপির তাবিথ আউয়ালের অভিযোগের শেষ নেই। মঙ্গলবার নির্বাচনী প্রচারে নেমে তিনি জানান কোথাও নির্বাচনের ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নেই। যেখানেই যাচ্ছি বাধার মুখে পড়ছি। তবে তিনি বলেন, যত বাধাই আসুক না কেন এখনও শান্ত আছি, শান্তিপূর্ণভাবেই থাকব। অপরদিকে ঢাকা দক্ষিণে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস প্রথম ৯০ দিনের মধ্যে নগরীর মৌলিক সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। বলেছেন, ’৪১ সালকে লক্ষ্য রেখে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। ঢাকা ঐতিহ্যবাহী বুড়িগঙ্গাকে দূষণমুক্ত করে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার কথা বলেন তাপস। বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন চান সুখে-দুঃখে মানুষের পাশে থাকতে। তিনি বলেন, প্রতিজ্ঞা করছি সুখে-দুঃখে মানুষের পাশে থাকব। এলাকার উন্নয়নে যা কিছু দরকার, রক্ত ঘাম ও পরিশ্রমের মাধ্যমে উন্নত ও দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ে তুলব। মঙ্গলবার সকাল থেকে যথারীতি নির্বাচনী প্রচার চালান প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকা আওয়ামী ও বিএনপির চার মেয়র প্রার্থী। মেয়র পদে ১৩ প্রার্থী থাকলেও এই চার প্রার্থীই মূলত মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। এর বাইরে প্রচারের পঞ্চম দিনের ঢাকা দক্ষিণের জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থীকে প্রচারে নামতে দেখা গেছে। এর পাশাপাশি দুই সিটিতে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীর পক্ষে কর্মী-সমর্থকরা ছিল সরব। পাড়া-মহল্লায় প্রার্থীর পক্ষে ঝুলেছে হাতপাখার পোস্টার। এর বাইরে অন্য কোন প্রার্থীর প্রচার চোখে পড়েনি। প্রচার যুদ্ধে আতিক ॥ মঙ্গলবার তালতলা আগারগাঁও থেকে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম। প্রচারে নামার আগে শতদল মাঠে সংক্ষিপ্ত পথসভা সেরে নেন। সেখানে দেয়া এক বক্তৃতায় বলেন, অল্প সময় মেয়রের দায়িত্ব পালনকালেই কীভাবে একটি আধুনিক ঢাকা গড়া যায় সে বিষয়ে শিখেছি। নয় মাস কঠিন অনুশীলন করেছি। চেষ্টা করেছি, কীভাবে এই শহরকে একটি আধুনিক, সুস্থ ও সচল শহর করা যায়। সামনে বড় চ্যালেঞ্জ ৩০ জানুয়ারির নির্বাচন। এলাকাবাসীকে অনুরোধ করব আমার জন্য সবার দ্বারে দ্বারে ভোট প্রার্থনায় যাওয়ার জন্য। সবাইকে উন্নয়নের কথা বলুন। তিনি বলেন, নির্বাচিত হলে তরুণদের মাদকের হাত থেকে রক্ষার উদ্যোগ নেয়া হবে। মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হবে। চেষ্টা করব প্রতিমাসে একটা সিটি হল মিটিং করার জন্য। ওই মিটিং হবে জবাবদিহির মিটিং। এতে বিভিন্ন ওয়ার্ডের সমস্যা প্রতিফলিত হবে। আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারব। আমরা চাই ওয়ার্ডভিত্তিক সমস্যার সমাধান করতে। শতদল কমপ্লেক্সের সভাশেষে ঢাকা ১৩ আসনের ২৮, ২৯, ৩০ ও ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের গণসংযোগ করেন আতিকুল ইসলাম। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে ছিলেন। তাপস ॥ বুড়িগঙ্গা পাড়ে জনসংযোগ করেন আওয়ামী লীগের ঢাকা দক্ষিণের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি কামরাঙ্গীর চর এলাকায় গণসংযোগ করেন। তার নির্বাচনী প্রচারে আওয়ামী লীগের হাজার হাজার কর্মী সমর্থক জড়ো হয়। এলাকায় প্রচারে অংশ নিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় তাপস বলেন, দুটি নদীর অববাহিকায় ঢাকার অবস্থান। এসব নদী সংরক্ষণের মাধ্যমে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সৌন্দর্য বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরা হবে। বুড়িগঙ্গার পাড় দিয়ে টমটম চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে। উন্নত ঢাকা গড়তে ৩০ বছর মেয়াদী মহাপরিকল্পনার আওতায় আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও বুড়িগঙ্গা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। নদী ও নদীর পাড় সংরক্ষণের মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করব। আমরা চাই বুড়িগঙ্গার পাড় দিয়ে যাতায়াত ব্যবস্থা, বিনোদনমূলক নান্দনিক পার্ক, হাঁটার ব্যবস্থা, খেলার মাঠ, সাইকেল চালানো ও ঘোড়ার গাড়ি চলার ব্যবস্থা করা হবে। বিএনপির প্রার্থীদের জনসংযোগ তাবিথ আউয়াল ॥ ঢাকা উত্তরের বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল সারাদিন রাজধানীর বাড্ডা নির্বাচনী জনসংযোগ করে কাটান। বাড্ডা ফুজি টাওয়ার থেকে লিংক রোড, মধ্য বাড্ডা বাজার, মেরুল বাড্ডা, ৩৭নং ওয়ার্ডের মোল্লাপাড়ার থেকে খিলবাড়িরটেক, নুরের চালা, বাজার মসজিদ, ভোটঘাট, বারিধারা মহিলা সমিতি হয়ে নুরের চালা পশ্চিম আশরাফিয়া মাদ্রাসা, কুলতান স্কুল, বারিধারা মা ও শিশু হাসপাতাল পর্যন্ত প্রচার চালান। ইসরাক হোসেন ॥ মঙ্গলবার রাজধানীর খিলগাঁও ত্রিমোহিনী বাজার এলাকায় নির্বাচনী প্রচারে নেমে ঢাকা দক্ষিণের বিএনপির প্রার্থী ইসরাক হোসেন। তিনি এ সময় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উত্থাপন করেন। তবে বলেন, যত বাধা আসুক সুখে-দুঃখে জনগণের পাশে থাকব। এ সরকার বলে তারা উন্নয়ন করছে। স্যাটেলাইট পাঠাচ্ছে, এগুলো সবই আসলে দুর্নীতির প্রজেক্ট। প্রত্যেকটা মেগা প্রজেক্ট থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে। আমি প্রতিজ্ঞা করতে চাই। যদি আগামী ৩০ তারিখ আপনারা ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করেন আপনাদের যে অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার আন্দোলন সেটিকে চূড়ান্ত রূপ দেয়া হবে।
×