ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শেয়ারবাজারে ক্রেতা সংকটের কারণে দরপতন

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ১৪ জানুয়ারি ২০২০

শেয়ারবাজারে ক্রেতা সংকটের কারণে দরপতন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আগের কয়েকদিনের ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবারও মূল্য সূচকের কাঁপন ধরানো পতনেই লেনদেন শেষ হয়েছে পুঁজিবাজারে। মঙ্গলবারের পতনে সূচক আরও তলানিতে নেমে গেছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৮৭ পয়েন্ট বা ২ শতাংশ কমেছে। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক সূচক কমেছে ২৬৯ পয়েন্ট বা ২ শতাংশ। উভয় বাজারে লেনদেনও কমেছে। সব ধরনের কোম্পানির দর কমলেও মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানির দর হারানোর কারণেই সূচকের বেশি পতন ঘটেছে। বাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েকমাস ধরে শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রবণতা থাকলেও চলতি বছরের প্রথম মাসে দরপতন বেশি মাত্রা পেয়েছে। তারল্য সংকট ও আস্থার অভাবেই এই দরপতন চলছে। অল্প শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে এই দরপতন ঘটানো হলেও সেই তুলনায় ক্রেতার সংখ্যা খুবই নগন্য। মূলত ক্রেতা সংকটের কারণেই সূচকের এই ভয়াবহ দরপতন। গ্রামীন ফোন, স্কয়ার ফার্মার সঙ্গে মৌলভিত্তিসম্পন্ন অন্যসব কোম্পানির শেয়ার বিক্রির চাপও বেশি পতন ঘটাচ্ছে। একইসঙ্গে আইসিবির মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর নিস্ক্রিয় আচরণ এবং এমডি পদে নিয়োগ নিয়ে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের মধ্যে অভ্যন্তরীন কোন্দলও নেতিবাচক ভুমিকা রাখছে। সব মিলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষরা কোনভাবেই বিনিয়োগকারীদের এই বার্তা দিতে পারছে না যে, শেয়ারবাজার আর পড়বে না। শেয়ার কেনার এখনই উপযুক্ত সময়, সেই বার্তা কাউকে দিচ্ছে ব্রোকারেজ হাউসের পক্ষ থেকেও। এছাড়া প্রশান্ত কুমার হালদার নামের আর্থিক খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিনিয়োগকৃত প্রতিষ্ঠানগুলোর নাজুক পরিস্থিতিও শেয়ারবাজার প্রভাবিত করেছে। সবমিলেও শেয়ারবাজরে হযবরল পরিস্থিতি এখনও কাটেনি। বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসই প্রধান বা ডিএসইএক্স সূচক ৮৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৩৬ পয়েন্টে; যা গত ৪ বছর ৭ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০১৫ সালের ৫ মে এই সূচকের অবস্থান ছিল ৪ হাজার ১৪ পয়েন্ট। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ২২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৯০৭ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ২৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৬১ পয়েন্টে। ডিএসইতে ২৬২ কোটি ৮১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা গত কার্যদিবস থেকে ২৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা কম। সোমবারে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২৮৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। ডিএসইতে ৩৫৫টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩২টির, কমেছে ২৯৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩০টির। ডিএসইর দরপতনের শীর্ষে রয়েছে এসএস স্টিল লিমিটেড। শেয়ারটির দর ১ টাকা ৯০ পয়সা বা ৯.৯৫ শতাংশ কমেছে। মঙ্গলবার কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ ১৭ টাকা ২০ পয়সা দরে লেনদেন হয়। এদিন কোম্পানিটি ১ হাজার ১১২ বারে ১৮ লাখ ৬৭ হাজার ৬৮২টি শেয়ার লেনদেন করেছে। যার বাজার মূল্য ৩ কোটি ২২ লাখ টাকা। দর হারানোর তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আল-হাজ্ব টেক্সটাইল লিমিটেড। শেয়ারটির দর ৩ টাকা ৪০ পয়সা বা ৯.৭৪ শতাংশ কমেছে। শেয়ারটি আজ সর্বশেষ ৩১ টাকা ৫০ পয়সা দরে লেনদেন হয়। দর হারানোর তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলো হচ্ছে - গ্লোডেন হার্ভেস্ট অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ, মেঘনা পেট, সমতা লেদার কমপ্লেক্স, এআইবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক, স্ট্যাইল ক্রাফট,বিকন ফার্মা ও নর্দার্ন জুট অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেড। অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৬৯ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১২ হাজার ৩০০ পয়েন্টে। সিএসইতে টাকার অংকে ৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
×