ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দিনাজপুরে লোহার খনির মজুত জানতে শুরু হয়েছে তৃতীয় ধাপের খনন

প্রকাশিত: ০৪:৫৫, ১২ জানুয়ারি ২০২০

দিনাজপুরে লোহার খনির মজুত জানতে শুরু হয়েছে তৃতীয় ধাপের খনন

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ দেশের প্রথম লোহার খনির মজুত ও ব্যাপ্তি নির্ণয় এবং কূপ খননের জন্য দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলায় আবিস্কৃত তৃতীয় পর্যায়ের খনন কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর (জিএসবি)। এদিকে লোহার খনির তৃতীয় পর্যায়ের খনন কাজ শুরু হওয়ায় আশায় বুক বেঁধেছে এলাকাবাসী। দ্রুত খনির বাস্তবায়ন চান তারা। বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর (জিএসবি) সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে হাকিমপুর উপজেলার আলিহাট ইউনিয়নের মুর্শিদপুর গ্রামে খনিজ সম্পদ অনুসন্ধানে কূপ খনন করে জরিপ কার্যক্রম চালায় জিএসবি। এসময় সেখানে লোহার আকরিকের সন্ধান পায় অনুসন্ধানকারী দল, যা ছিল বাংলাদেশে প্রথম। এর ওপর ভিত্তি করেই গত বছরের ১৯ এপ্রিল থেকে খনিজসম্পদ অনুসন্ধানে কূপ খনন করে দ্বিতীয় পর্যায়ের জরিপ কার্যক্রম চালায় অনুসন্ধানকারী দল। এ সময় অপেক্ষাকৃত কম গভীরতায় দেশের প্রথম লৌহজাতীয় খনির সন্ধান মিলে। ১ হাজার ৩শ’ ফিট থেকে শুরু করে ১ হাজার ৭শ’ ৫০ ফুট পর্যন্ত প্রায় চারশ’ ফিটের ওপরে লোহার আকরিকের স্তর পাওয়া যায়। এরসঙ্গে আরও অন্য পদার্থের সন্ধান মিলে। এ তথ্যের ভিত্তিতে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে একই ইউনিয়নের ভাটারা এলাকায় খনির মজুত ও ব্যাপ্তি নির্ণয়ে তৃতীয় পর্যায়ের ড্রিলিং কার্যক্রম শুরু করেছে জিএসবি। উদ্বোধনের পর থেকে ৩০ সদস্যের একটি দল তিনটি শিফটের মাধ্যমে দিন-রাত সমান তালে খনন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। জানা যায়, আগামী তিন থেকে চার মাস ধরে চলবে এই কার্যক্রম। এ ধরনের ১০ থেকে ১২টি খনন কার্যক্রম চালানো হবে বলেও জানিয়েছে জিএসবি কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় এলাকাবাসী আবুল কাসেম ও কুরবান আলী বলেন, খনিজসম্পদ অনুসন্ধানে ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর এরআগে একই এলাকার ইশবপুর গ্রামে অনুসন্ধান চালায়। এ সময় সেখানে লোহার খনির সন্ধান মিলেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। এরই অংশ হিসেবে এবার তৃতীয় পর্যায়ে ইশবপুরের পাশের ভাটারা এলাকায় খনিজসম্পদ অনুসন্ধানে জরিপ অধিদফতর কার্যক্রম শুরু করেছে। আমরা আশাবাদী ওই স্থানের মতো এখানেও লোহাসহ মূল্যবান পদার্থের সন্ধান মিলবে। খনি চালু হলে আমাদের এলাকার অনেক বেকার ও নি¤œ আয়ের মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। একই সাথে জায়গার দাম বাড়বে, সড়ক ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে। তাই আমরা চাই দ্রুত খনিটি চালু করা হোক। দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক বলেন, আমরা এখানে যে লোহার খনির সন্ধান পেয়েছি, তা নিশ্চিত করতে জরিপ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তৃতীয় পর্যায়ের খনন কাজ শুরু করা হয়েছে। আশা করছি আরও কয়েকটি জায়গায় জরিপের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে লোহার খনি বাস্তবায়নের জন্য যা যা তথ্য উপাত্ত দরকার হয় সে বিষয়গুলো পাবো। একই সঙ্গে খনি বিষয়ে চুড়ান্ত রিপোর্ট জমার পর এখানে কী কী সম্পদ রয়েছে, তার বিস্তারিত তথ্য দেশবাসীকে জানাবেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতরের পরিচালক মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন বলেন, গত বছর হাকিমপুর উপজেলার আলিহাট ইউনিয়নের ইশবপুরে যে লোহার খনির সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল, সেটি কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত ও কী পরিমাণ মজুত রয়েছে ত আমাদের যাচাই করতে হবে। এ জন্য আরো ১০ থেকে ১২টি খনন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। এর আগে সেরকমভাবে আমরা কিছু বলতে পারবো না, বা আমাদের বলার এখতিয়ার নেই। ৩ থেকে ৪ মাস অনুসন্ধান কার্যক্রম চালিয়ে সে অনুযায়ী প্রতিবেদন দেবো। এরপর সরকার পরবর্তীতে ঘোষণা দেবেন বা সিন্ধান্ত গ্রহণ করবেন।
×