ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট ড্রর আগে আবিদ আলির ইতিহাস

প্রকাশিত: ১০:২৭, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯

রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট ড্রর আগে আবিদ আলির ইতিহাস

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দীর্ঘ দশ বছর পর ঘরের মাটিতে টেস্ট প্রত্যাবর্তন। রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট ঘিরে তাই পাকিস্তানীদের মধ্যে ছিল অন্যরকম এক উন্মাদনা। তাতে বাদ সাধে বৃষ্টি। পাঁচদিনে ৪৫০ ওভারের মধ্যে খেলা হয়েছে মোট ১৬৭ ওভার। একদিন তো খেলা মাঠেই গড়ায়নি। আরেকদিন হয়েছিল ৬ ওভারের মতো। ম্যাচ ড্র হয়েছে অনুমিতভাবে। তবে রবিবার পঞ্চম ও শেষদিনে ড্র ম্যাচ রাঙিয়ে দিয়েছেন আবিদ আলি। ইতিহাসের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডে এবং টেস্ট- দুই ভার্সনেই নিজের অভিষেক ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে বিরল এক রেকর্ড গড়েছেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। তিনি অপরাজিত থাকেন ১০৯ রানে, ফর্মের তুঙ্গে থাকা বাবর আজম ১০২*। জোড়া সেঞ্চুরির সৌজন্যে মাত্র ৭০ ওভারেই ২ উইকেটে ২৫২ রান তোলে পাকিস্তান। তার আগে ৬ উইকেটে ৩০৮ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা। সফরকারীদের হয়ে সেঞ্চুরি পেয়েছেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা (১০২*)। বৃহস্পতিবার করাচীতে শুরু সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে প্রথমদিনে খেলা হয়েছিল ৬৮.১ ওভার। দ্বিতীয়দিনে ১৮.২ ওভার। তৃতীয়দিনে ৬ ওভার। চতুর্থদিনে একটি বলও মাঠে গড়ায়নি। সে হিসেবে নিশ্চিত ড্র দেখা ম্যাচের শেষদিন ছিল দারুণ। উৎসবমুখর। ৬ উইকেটে ২৮২ রান নিয়ে শুরু করা সফরকারী লঙ্কানরা ধনঞ্জয়ার (১০২*) সেঞ্চুরির পরপরই প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে। জবাবে দলীয় ৩ রানে শান মাসুদ (০) ও ৯০ রানে অধিনায়ক আজহার আলিকে (৩৬) হারানো পাকিস্তানের হয়ে চিত্তাকর্ষক ব্যাটিংশৈলী উপহার দেন আবিদ আলি ও বাবর আজম। তৃতীয় উইকেটে অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ১৬২ রান যোগ করেন দু’জনে। আবিদ ২০১ বলে ১১ চারে অপরাজিত ১০৯, বাবর ১০২*। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের স্বাদ পেতে পেতে বয়স ছিল ৩২ ছুঁইছুঁই। অনেক প্রতীক্ষার সেই অভিষেক রাঙিয়েছিলেন দারুণভাবে। গত মার্চে ওয়ানডে অভিষেকে করেছিলেন সেঞ্চুরি। সেই আবিদ এবার টেস্ট অভিষেকেও করলেন সেঞ্চুরি। গড়লেন এমন এক কীর্তি, ক্রিকেট ইতিহাসে যা করতে পারেননি আর কেউ। ১০৫টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলার পর টেস্ট অভিষেক। সেই টেস্টেও ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়েছেন পঞ্চমদিনে এসে। দীর্ঘ অপেক্ষা শেষেই এসেছে অনির্বচনীয় স্বাদ। প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দুটি সংস্করণে অভিষেকে সেঞ্চুরি। রাওয়ালপিন্ডিতে রবিবার শেষদিনের শেষ সেশনের শুরুর দিকে পেসার বিশ্ব ফার্নান্দোর বলে দুই রান নিয়ে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন ৩২ বছর বয়সী ডানহাতি ব্যাটসম্যান। তার নাম খোদাই হয়ে যায় ইতিহাসে। গত মার্চে দুবাইয়ে অভিষেক ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১১২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন আবিদ। একদিনের ক্রিকেটে অভিষেকে সেঞ্চুরি আছে আবিদসহ ১৫ জনের। টেস্ট অভিষেকে সেঞ্চুরির স্বাদ আবিদকে দিয়ে পেলেন ১০৬ জন। কেবল আবিদের নামই আছে দুটি তালিকায়। টি২০ অভিষেকে সেঞ্চুরি আছে তিনজনের। তাদের কারও দেশ টেস্ট খেলার ধারে কাছে নেই। তিনজনের দুইজন টি২০ ছাড়া অন্য কোন সংস্করণ খেলেননি। একজন ওয়ানডে খেললেও করতে পারেননি সেঞ্চুরি। দুটি সংস্করণে সেঞ্চুরির সবচেয়ে কাছে আগে যে দুইজন গিয়েছিলেন, তাদের কেউই সেঞ্চুরি করতে পারেননি একটিতেও। প্রথমজন নিউজিল্যান্ডের স্টিভেন ফ্লেমিং। ১৯৯৪ সালে টেস্ট অভিষেকে ভারতের বিপক্ষে ৯২ রানে আউট হওয়ার তিন দিন পর ওয়ানডে অভিষেকে আউট হয়েছিলেন ৯০ রানে। আরেকজন রিকি পন্টিং। ১৯৯৫ সালে টেস্ট অভিষেকে বিতর্কিত সিদ্ধান্তে এলবিডব্লিউ হয়েছিলেন ৯৬ রানে। ২০০৫ সালে টি২০ অভিষেকে অপরাজিত ছিলেন ৯৮ রানে। স্কোর ॥ শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংস- ৩০৮/৬ ডিক্লেঃ (৯৭ ওভার; করুনারতেœ ৫৯, ফার্নান্দো ৪০, কুসল ১০, ম্যাথুস ৩১, চান্দিমাল ২, ধনঞ্জয়া ১০২*, দিকওয়েলা ৩৩, দিলরুয়ান পেরেরা ১৬*; আব্বাস ১/৭২, শাহিন ২/৫৮, শিনওয়ারি ১/৫৪, নাসিম ২/৯২)। পাকিস্তান প্রথম ইনিংস- ২৫২/২ (৭০ ওভার; মাসুদ ০, আবিদ ১০৯*, আজহার ৩৬, বাবর ১০২*; রাজিথা ১/৫, লাহিরু ১/৪৬)। ফল ॥ টেস্ট ম্যাচ ড্র। ম্যাচসেরা ॥ আবিদ আলি (পাকিস্তান)।
×