ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

আগের নিয়মে ফিরে যাচ্ছে ফুটবল ফেডারেশন

প্রকাশিত: ১০:২৩, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯

আগের নিয়মে ফিরে যাচ্ছে ফুটবল ফেডারেশন

জাহিদুল আলম জয় ॥ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) বর্তমান সভাপতি কাজী মোঃ সালাউদ্দিন। ২০০৮ সাল থেকে চার বছর মেয়াদী কমিটিতে টানা তিনবার সভাপতি হয়ে হ্যাটট্রিক করেছেন দেশের কালজয়ী এই ফুটবলার। ২০২০ সালে হতে যাওয়া পরবর্তী নির্বাচনে তিনি টানা চতুর্থবারের মতো প্রার্থী হতে যাচ্ছেন। শুধু বাফুফে সভাপতি হিসেবে হ্যাটট্রিক নয়, সাউথ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের (সাফ) সভাপতি হিসেবেও হ্যাটট্রিক করেছেন সালাউদ্দিন। তবে আগের তিনবারের চেয়ে এবার বাফুফে নির্বাচনে তাকে বেশি কাঠখড় পোড়াতে হবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এর প্রধান কারণ সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে ইতেমধ্যে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন সর্বশেষ নির্বাচনে তার সঙ্গে কাজ করা চট্টগ্রাম আবাহনীর ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল এ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব তরফদার মোঃ রুহুল আমিন। আগের তিনবারই দেখা গেছে নির্বাচন ঘনিয়ে এলে সালাউদ্দিন বিরোধীরা একজন সভাপতি প্রার্থী সামনে এনেছেন। কিন্তু কোনবারই সালাউদ্দিনকে কাবু করতে পারেননি। কিন্তু এবার বেশ আগে থেকেই কোমর বেঁধে নেমেছেন তরফদার বাহিনী। যে কারণে উত্তাপটাও টের পাওয়া যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে কি হয় সেটা দেখতে আরও চার থেকে পাঁচ মাস অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু সময় যত ঘনিয়ে আসছে উত্তাপও বাড়ছে ততটা। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন নির্বাচন সামনে রেখে গঠনতন্ত্রে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। মূলত যত্রতত্র যে কেউ যেন নির্বাচন করতে না পারেন এ জন্যই পরিবর্তনটি আনার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এ লক্ষ্যে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে হতে যাচ্ছে বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম)। মূলত গঠনতন্ত্র সংশোধনীর জন্যই বসতে যাচ্ছে বিশেষ এই এজিএম। ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে শেষ হবে বাফুফের বর্তমান কমিটির মেয়াদ। এরপরই হবে বহু কাক্সিক্ষত নির্বাচন। গত শনিবার ইজিএম আয়োজন নিয়ে জরুরী সভায় বসেছিল বাফুফে। কাজী সালাউদ্দিনের সভাপতিত্বে জরুরী সভায় যত দ্রুত সম্ভব বাফুফের অধীনস্থ সংস্থাগুলোকে চিঠি দিয়ে ইজিএম-এর তারিখ ও তাদের প্রতিনিধির নাম প্রেরণের জন্য চিঠি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এবারের নির্বাচনের প্রেক্ষাপটটা ভিন্ন। অনেকের মতে, আগের তিনবার তেমন চ্যালেঞ্জ জানাতে না পারলেও এবার তরফদার রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে বর্তমান সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনকে। তবে ভোটের লড়াইয়ের অন্তত চার মাসে আগে গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন আনছে বাংলাদেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। মূলত আগামী নির্বাচনে কারা নির্বাচন করতে পারবেন আর কারা ভোট দিতে পারবেন আর, সেটি ঠিক করতে বাফুফে আয়োজন করতে যাচ্ছে বিশেষ এই সাধারণ সভা। সর্বশেষ ২০১২ ও ২০১৬ সালের নির্বাচনে যে কেউ মনোনয়নপত্র কিনেই করতে পেরেছেন নির্বাচন। সেক্ষেত্রে ভোটে দাঁড়াতে যোগ্যতা বলতে প্রয়োজন ছিল শুধু বাংলাদেশের নাগরিকত্ব। কিন্তু দুই মেয়াদ পর বাফুফে ফিরতে যাচ্ছে পুরনো নিয়মে। পুরনো নিয়মে তিনিই নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন, যিনি বাফুফের অধীনস্থ সদস্য ক্লাব বা সংস্থাগুলো থেকে প্রতিনিধি হয়ে আসবেন। ২০০৮ সালে এ নিয়মেই হয়েছিল বাফুফে নির্বাচন। কিন্তু পরের দুইবার (২০১২ ও ২০১৬) পরিবর্তন আনা হয় বাফুফে গঠনতন্ত্রে। এর ফলে এই দুই বছর কাউন্সিলর (ভোটার) হলেই যে কেউ নির্বাচন করতে পেরেছেন। অবাক ব্যাপার, এই দুই বছর আবার ভোটার হতে পারেননি বাফুফের নির্বাহী কমিটির কেউ। যে কারণে তাদের মধ্যে যারা ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন তারা ভোটও দিতে পারেননি। নির্বাচন করতে হলে ভোটার (কাউন্সিলর) হতেই হবে এই সংশোধনী আনলে তুলে দিতে হবে ‘কার্যনির্বাহী কমিটির কেউ ভোটার হতে পারবেন না’ সেই ধারাও। অর্থাৎ বাফুফে কার্যনির্বাহী কমিটির যারা আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান তাদের কাউন্সিলর হয়ে আসতে হবে।
×