ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাধারণ বিনিয়োগকারীর ভূমিকায় আইসিবি

প্রকাশিত: ০৮:০৭, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯

 সাধারণ বিনিয়োগকারীর ভূমিকায় আইসিবি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ শেয়ারবাজারের মন্দাবস্থায় সঠিক দায়িত্ব পালন করছে না বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)। শেয়ারবাজারকে সাপোর্ট দেয়া অন্যতম কাজ হলেও অন্যসব সাধারণ প্রতিষ্ঠানের ন্যায় ভূমিকা পালন করছে আইসিবি। যা নিয়ে অসন্তোষ বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। অন্যদিকে অর্থমন্ত্রণালয়ও আইসিবি বিকল্প হিসেবে বিডিবিএলকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে শেয়ারবাজারে আইসিবির বিনিয়োগের যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন ছিল। ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারে প্রতিষ্ঠানটি থেকে নামসর্বস্ব কোম্পানির শেয়ার কেনা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া বাজারের প্রয়োজনে সঠিক ভূমিকা পালন করে না বলে অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) এক কমিশনার বলেন, আইসিবির মূল কাজ শেয়ারবাজারকে সাপোর্ট দেয়া। শেয়ারবাজারে চাহিদা বাড়লে শেয়ার বিক্রি ও সরবরাহ বাড়লে ক্রয়ের মাধ্যমে আইসিবি সাপোর্ট দেবে। কিন্তু বাস্তবে এমনটি দেখা যায় না। তারা নিজেদের ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। এছাড়া যেনতেন শেয়ার কিনছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারে বড় ধস হয়েছে। ওই সময় দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মূল সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১৫৭ পয়েন্ট। যে পতন সূচককে ৪১ মাস আগের অবস্থানে নিয়ে গেছে। এছাড়া গত সপ্তাহে ডিএসইতে আর্থিক লেনদেন ৭৩৭ কোটি টাকা বা ৩২ শতাংশ কমেছে। সূচক ও লেনদেনের এই পতন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করে। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতেও আইসিবির কার্যকরী ভূমিকা ছিল না। দেখা গেছে, অন্যান্য সময়ের ন্যায় গত সপ্তাহেও আইসিবির ভূমিকা ছিল গতানুগতিক। ওই সময় আইসিবি সিকিউরিটিজ ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে ৭২ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট কেনা হয়। আর বিক্রি করা হয় ৬৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকার। অর্থাৎ বিক্রির থেকে ৬ কোটি ৮২ লাখ টাকার বেশি কেনা হয়েছে। যা গত সপ্তাহের বড় ধস মোকাবেলায় ছিল নামমাত্র। গত ৮ ডিসেম্বরে আইসিবি কিনেছে ১৭.৩০ কোটি টাকার শেয়ার এবং বিক্রি করেছে ১১.৮১ কোটি টাকার। ৯ ডিসেম্বরে ১৭.৮৮ কোটি টাকা কেনার বিপরীতে বিক্রি করেছে ১৩.২৪ কোটি টাকার, ১০ ডিসেম্বরে ১৫.৪০ কোটি টাকা কেনার বিপরীতে বিক্রি করেছে ১২.২২ কোটি টাকার। এছাড়া ১১ ডিসেম্বর ৯.১৮ লাখ টাকা কেনার বিপরীতে বিক্রি করেছে ১৭.৫৪ কোটি টাকার। ১২ ডিসেম্বরের ১২.০৪ কোটি টাকা কেনার বিপরীতে বিক্রি করেছে ১০.৭৮ লাখ টাকার শেয়ার। অর্থাৎ ৫ দিনে মোট ৭২.৪০ কোটি টাকা কেনার বিপরীতে বিক্রি করেছে ৬৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকা শেয়ার। অর্থাৎ মাত্র ৬.৮২ কোটি টাকার নিট বিনিয়োগ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। উল্লেখ্য, গত ১৪ অক্টোবর আইসিবি শেয়ারবাজারকে সাপোর্ট দেয়ার জন্য সোনালী ব্যাংক থেকে আমানত হিসেবে নেয় ২০০ কোটি টাকা। যার পুরোটাই সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেয় প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। এছাড়া একই উদ্দেশে ওই সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ১ হাজার কোটি টাকা এবং অগ্রণী, জনতা, রূপালী এবং বিডিবিএল ব্যাংকের কাছে ২ শত কোটি করে আরও ৮০০ কোটি টাকার জন্য আবেদন করে। এর আগে গতবছরের ১৭ জুলাই শেয়ারবাজারকে সাপোর্ট দেয়া মূল লক্ষ্য রেখে আইসিবিকে ২ হাজার কোটি টাকার বন্ড ইস্যুর অনুমোদন দেয় বিএসইসি। এর মধ্যে গত ১২ অক্টোবর পর্যন্ত দেড় হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে।
×