ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা প্লাটুনের জয় ২৪ রানে

হেরেই চলেছে সিলেট থান্ডার

প্রকাশিত: ১১:১৫, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯

হেরেই চলেছে সিলেট থান্ডার

মিথুন আশরাফ ॥ বঙ্গবন্ধু বিপিএলে নিজেদের প্রথম ম্যাচে হোঁচট খাওয়ার পর জিতেই চলেছে ঢাকা প্লাটুন। শনিবার সিলেট থান্ডারকে ২৪ রানে উড়িয়ে দিয়ে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নেয় ঢাকা। এই জয়ে প্রথম পর্ব শেষে পয়েন্ট তালিকায় দ্বিতীয় স্থানেও উঠে গেছে ঢাকা। সিলেট টানা তিন ম্যাচে হেরেছে। হ্যাটট্রিক হার হয়েছে। পয়েন্ট তালিকায় সাত দলের মধ্যে সবার নিচে, তলানীতে আছে দলটি। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে প্রথম পর্বের শেষ ম্যাচে টস জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় সিলেট থান্ডার। আগে ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়ে ঢাকা প্লাটুন ভালভাবেই কাজে লাগায়। এনামুল হক বিজয়ের ৬২ ও তামিম ইকবালের ৩১ রানের সঙ্গে থিসারা পেরেরার অপরাজিত ২২, লরি ইভান্সের ২১, জাকের আলীর ২০ ও ওয়াহাব রিয়াজের অপরাজিত ১৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১৮২ রান করে ঢাকা। শুক্রবার কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের বিরুদ্ধে ১৮০ রান করেছিল ঢাকা। এ আসরে যা দলীয় সর্বোচ্চ রান ছিল। শনিবার নিজেদের রেকর্ডই ভেঙ্গে নতুন রেকর্ড গড়ে ঢাকা। এত বিশাল রানের টার্গেটে স্বাভাবিকভাবেই চাপে পড়ার কথা সিলেটের। তারা পড়েছেও। এমনই চাপ তৈরি হয়েছে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত (৬০*) ছাড়া আর কোন ব্যাটসম্যানই দলের হাল ধরার মতো ব্যাটিং করতে পারেননি। শেষপর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ১৫৮ রানের বেশি করতে পারেনি সিলেট। সিলেট থান্ডার কোনভাবেই জয়ের দেখা পাচ্ছে না। প্রথম ম্যাচেই চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের কাছে ধরাশায়ী হওয়ার পর রাজশাহী রয়্যালসের কাছে পাত্তাই পায়নি। এবার ঢাকার কাছেও হার মানে। জনসন চার্লস শুরুতেই টর্নেডো গতিতে ব্যাটিং করেন। ব্যাট হাতে নেমে পেরেরার প্রথম ওভারেই এক ছক্কা ও তিন চারে ১৮ রান নিয়ে নেন। তবে আর ১ রান নিতেই রান আউট হয়ে যান। দলের ৪৯ রানেই আন্দ্রে ফ্লেচার (১০), রনি তালুকদার (১৪), চার্লসকে (১৯) হারিয়ে খাদের কিনারায় পড়ে যায় সিলেট। দলের ৬১ রানের মধ্যে শফিকুল্লাহ শফিক (২) ও মোহাম্মদ মিঠুন (৮) আউট হয়ে যাওয়ার পর তো হারের পথ যেন নিশ্চিতই হয়ে যায়। বাকিটা সময়ে শুধু হারের ব্যবধান কমানোর চেষ্টা করা হয়। একদিকে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত চেষ্টা করে যান। দেলোয়ার হোসেনকে নিয়ে সপ্তম উইকেটে ৩৪ রানের জুটিও গড়েন। একাই লড়াই করেন মোসাদ্দেক। ৩৪ বলে ৫০ রানও করে ফেলেন। ৫৫ রানে থাকতে বোল্ড হন মোসাদ্দেক। কিন্তু ফ্রি হিট থাকায় আউট হননি। চেষ্টার কোন কমতি ছিল না। কিন্তু দলকে আর জেতাতে পারেননি। দল ১৫৮ রান করে। দুই ম্যাচ খেলে ঢাকার সমান ৪ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থানে থাকা রাজশাহী রয়্যালসের কাছে প্রথম ম্যাচে হারের পর এমনই সাবধান হন ঢাকা প্লাটুন ক্রিকেটাররা, এখন শুধু জয়ই মিলছে। কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সকে হারানোর পর এবার সিলেটকেও উড়িয়ে দিয়েছে। সেই জয়ও আসছে বড় ব্যবধানে। ব্যাটসম্যানরা এতটাই ভাল নৈপুণ্য দেখাচ্ছেন, স্কোরও অনেক বড় হচ্ছে। যে স্কোর অতিক্রম করা প্রতিপক্ষের সামনে পাহাড়সম হয়েই ধরা দিচ্ছে। দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও এনামুল হক বিজয় মিলেই আসলে ম্যাচে ঢাকাকে নিয়ন্ত্রণ এনে দেন। দুইজন মিলে ৮৫ রানের জুটি গড়েন। তাও আবার ১০ ওভারেই। দলের ৮৫ রানে যখন তামিম আউট হন, এরপর আর এমন বড় জুটির দেখা মিলেনি। তবে যে ব্যাটসম্যানই ব্যাট হাতে নেমেছেন, ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিং করে দ্রুত স্কোরবোর্ডে রান জমা করেন। এরপর আবার আউটও হয়ে যান। তামিম আউটের পর বিজয় আউট হওয়ার আগেই দলকে ১১০ রানে রেখে যান। এরপর জাকের, ইভান্স মিলে দলকে ১৪০ রানে নিয়ে যান। দলের ১৪০ রানে জাকেরের পর ১৫০ রানে ইভান্স আউট হলে আর কোন উইকেট হারায়নি ঢাকা। শেষে পেরেরা ও ওয়াহাব মিলে ব্যাটিং ঝড় তুলেন। দুইজন মিলে ১৬ বলেই ৩২ রান যোগ করে ফেলেন। দুইজনই আবার অপরাজিত থেকেও মাঠ ছাড়েন। সিলেটের সামনে জিততে ১৮৩ রানের বড় টার্গেট পড়ে। এই টার্গেটে দুমড়ে মুছড়ে যায় সিলেট। ঢাকার কাছে উড়ে যায় সিলেট। স্কোর ॥ ঢাকা প্লাটুন-সিলেট থান্ডার ম্যাচ-মিরপুর ঢাকা প্লাটুন ইনিংস ১৮২/৪; ২০ ওভার; তামিম ৩১, বিজয় ৬২, ইভান্স ২১, জাকের ২০, পেরেরা ২২*, ওয়াহাব ১৭*; মোসাদ্দেক ১/১৬। সিলেট থান্ডার ইনিংস ১৫৮/৭; ২০ ওভার; রনি ১৪, ফ্লেচার ১০, চার্লস ১৯, মিঠুন ৮, শফিক ২, মোসাদ্দেক ৬০*, নাঈম ১০, দেলোয়ার ১৭, সান্টোকি ৬*; হাসান ২/২৪। ফল ॥ ঢাকা প্লাটুন ২৪ রানে জয়ী।
×