ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপি দ্রব্যমূল্যের ওপর ভর করেছে ॥ কাদের

প্রকাশিত: ১০:৩৮, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯

 বিএনপি দ্রব্যমূল্যের ওপর ভর  করেছে ॥  কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত বর্তমান সরকারকে ব্যর্থ করতে চক্রান্তের পথ বেছে নিয়েছে। আমাদের বিরোধীরা চুপচাপ বসে নেই। সরকারকে বিপাকে ফেলতে দ্রব্যমূল্যের ওপর ভর করা ছাড়াও তারা নানামুখী তৎপরতা শুরু করছে। তাই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সর্বাত্মক প্রস্তুত থাকতে হবে। শুক্রবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে প্রত্যাগত প্রবাসী আওয়ামী ফোরামের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে বিপাকে ফেলার জন্য বিএনপি দ্রব্যমূল্যের ওপর ভর করেছে। দ্রব্যমূল্যের কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করতে বিভিন্ন সিন্ডিকেটের সঙ্গে তাদের যোগসাজশ রয়েছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। কিছু কিছু বিষয় আমরা জেনেছি বিরোধী দল থেকে উস্কানি দেয়া হচ্ছে পণ্যের দাম বৃদ্ধি করতে। পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারত সফর বাতিল প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটি বাতিলের কোন বিষয় নয়। ভারতের সঙ্গে কোন বিষয়ে আমাদের সমস্যা হলে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে আমারা সমাধান করব। জাতীয় স্বার্থের কোন বিষয় ক্ষুণ্ণ হলে সেটা পরস্পর আলাপ আলোচনা মাধ্যমে সমাধান করব। আমি যতটুকু জেনেছি, বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবসের ব্যস্ততার কারণে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারত সফর স্থগিত করেছেন। তারা পরে যাবেন। ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আছে, গঠনমূলক বন্ধুত্ব রয়েছে। এটা ক্ষুণœ হবে না। ওবায়দুল কাদের বলেন, এনআরসি ও ক্যাব ভারতের পার্লামেন্টে পাশ হয়েছে, তাদের লোকসভাতেও পাশ হয়েছে। সেটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এটা নিয়ে আমাদের মন্তব্য করা সমীচীন নয়। এ বিষয়ে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যে বক্তব্য রাখা হয়েছে। আমার কোন ভিন্ন মন্তব্য নেই। তবে আমি শুধু এতটুকু বলতে চাই, শেখ হাসিনা সরকারই হচ্ছে বাংলাদেশে ৭৫ পরবর্তী একমাত্র মাইনরিটিবান্ধব সরকার। গত ৪৪ বছরে বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অন্যন্য উজ্বল উদাহরণ হচ্ছে শেখ হাসিনার বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, মাঝে মধ্যে দুই-একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা হয়ত ঘটে। এত বড় দেশ, এত মানুষের বসবাস। এখানে ভাল মানুষের পাশাপাশি দুর্বৃত্তও আছে। দুর্বৃত্ত আছে বলেই শুদ্ধি অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। দুর্বৃত্তায়নের চক্র আমরা ভেঙ্গে দিতে চাই। দুর্বৃত্তের কোন দল নেই। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সংখ্যালঘু নির্যাতন বলতে যেটা বুঝায়, সেই নির্যাতনের দগদগে চিত্রটা পাওয়া যাবে ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর। এই দেশে হিন্দুদের ওপর, মাইনরিটিদের ওপর যে বর্বরতা, বিএনপির যে নির্যাতন সেটা কেবল একাত্তরের বর্বরতার সঙ্গে মিল রয়েছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব কোন মুখে বলেন, তাদের আমলে মাইনরিটিরা ভাল ছিল? স্বাধীন বাংলাদেশের ৪৭ বছর। ৪৭ বছরের ইতিহাসের মাইনরিটি নির্যাতনের নিকৃষ্টতম রেকর্ড হচ্ছে বিএনপির আমলে। ভারতের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক আছে, গঠনমূলক বন্ধুত্ব রয়েছে। এ সময় যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টরি নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি ও শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপ সিদ্দিক হ্যাট্রিক বিজয় অর্জন করায় শুভেচ্ছা জানান ওবায়দুল কাদের। একইসঙ্গে রুশনারা আলী, রূপা হক, আফসানা বেগম বাঙালী হিসেবে বিট্রিশ পার্লামেন্টে লেবার পার্টির হয়ে নির্বাচিত হওয়ায় তাদেরও অভিনন্দন জানান তিনি। সেতুমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের এবারের জাতীয় কাউন্সিল হবে সারা জাগানো শ্রেষ্ঠ সম্মেলন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের দেশ দিয়ে গেছেন, আদর্শ দিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু রাজনীতির রোল মডেল আর শেখ হাসিনা উন্নয়নের রোল মডেল। নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের পার্টি ঐক্যবদ্ধ, সুসংগঠিত, সুশৃঙ্খল একটা পার্টি। ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলে এবার সমাবেশও হবে ব্যাপক। এই মুহূর্তে আমাদের পার্টিতে শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নেই। সারা বাংলায় আমাদের নেত্রী জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয় নেত্রী। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর এ দেশে সবচেয়ে সত্য ও জনপ্রিয় নেতা আর একজনও নেই। নতুন এই সংগঠনের উদ্দেশ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রবাস থেকে প্রত্যাগত যারা, তারা একটা ফোরাম করেছেন। তাদের গঠনতন্ত্র হয়েছে কিনা এটা আমি কিছু জানি না। হলে ভাল কথা। আমাদের সরকারী দল আওয়ামী লীগ। সরকারী দলে থাকলে অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে ব্যাঙের ছাতার মতো। এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকা- লক্ষ্যণীয় নয়, মাঝে মাঝে- কিছু কিছু দিবস আসলে আলোচনা সভা করে, সভা-সমাবেশ করে। এটাতে খুব একটা রাজনৈতিকভাবে বেনিফিটেড হবে বলে আমার মনে হয় না। তিনি বলেন, ক্ষমতায় আসলে দেখা যায় অসংখ্য রাজনৈতিক দোকান। অনেকে দোকান খুলে বসে। তাদের সাইনবোর্ডও নেই। বাস্তবে এদের কার্যক্রম নেই। প্রবাসী আওয়ামী ফোরাম এদের থেকে ব্যতিক্রম হবে কিনা সেটা কাজে বোঝা যাবে। এটা যেন তথাকথিত সংগঠনের মতো না হয়। প্রত্যাগত প্রবাসী আওয়ামী ফোরামের আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপসহ সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা।
×