ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তিকে কোন ছাড় নয়, প্রতিরোধের আহ্বান

প্রকাশিত: ১০:০৯, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯

মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তিকে কোন ছাড় নয়,  প্রতিরোধের আহ্বান

মোরসালিন মিজান ॥ বাঙালীর শ্রেষ্ঠ অর্জনের দিনটি সমাগত। আগামী সোমবার উদ্যাপিত হবে মহান বিজয় দিবস। বড় উপলক্ষ সামনে রেখে অন্যরকম আবেগ আনন্দে ভাসছে দেশ। বিশেষ করে রাজধানী শহরে কত যে আনুষ্ঠানিকতা! তবে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের বিজয় উৎসব স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের। সাংস্কৃতিক আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দেয়া সংগঠকরা এ উৎসব আয়োজন করেন। বিভিন্ন পরিবেশনা নিয়ে অংশ নেন মুক্তিযুদ্ধ ও প্রগতির পক্ষে রাজপথে থাকা শিল্পীরা। শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে এবারের উৎসব। ২৯তম আয়োজনের স্লোগান- বিজয়ের অঙ্গীকার সাংস্কৃতিক অধিকার। বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বিজয় উৎসব ২০১৯-এর উদ্বোধন করা হয়। জাতীয় সঙ্গীত ও মুক্তিযুদ্ধের গান দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। শহীদ মিনারের খোলা প্রাঙ্গণে সবাই মিলে গায়- আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি...। একই সময় গণসঙ্গীতে দেশবোধের কথা বলেন বাংলাদেশ গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদের শিল্পীরা। ছিল নৃত্যায়োজনও। উদ্বোধনী নৃত্য পরিবেশন করে স্পন্দন। গত মঙ্গলবার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে দলটি নাচ পরিবেশন করে, সে একই নাচ নিয়ে তারা জোটের আয়োজনে ছিল। আনুষ্ঠানিকতার পাশাপাশি এদিন ছিল আলোচনাও। বর্তমান সময় পর্যবেক্ষণে নিয়ে বিশেষ বক্তৃতা করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার ও নাসিরউদ্দীন ইউসুফ। অন্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন ফকির আলমগীর, মান্নান হীরা, ঝুনা চৌধুরী প্রমুখ। এর আগে জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ। অনুষ্ঠানে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন আবৃত্তি শিল্পী আহকাম উল্লাহ। বক্তারা বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। এরপরও আমরা দেখছি, ওদের প্রেতাত্মারা বসে নেই। এখনও এরা দুঃসাহস দেখানোর চেষ্টা করছে। উদাহরণ দিয়ে তারা বলেন, কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। আদালতের রায় বলবত করেছে রাষ্ট্র। অথচ ঘাতকের প্রেতাত্মারা তাকে বলছে ‘শহীদ।’ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আদালতের বিরুদ্ধে এত বড় ঔদ্ধত্য দেখানোর পর তাদের আর কোন ক্ষমা করা চলে না। সম্মিলিতভাবে এ অপশক্তিকে প্রতিহত করার আহ্বান জানানো হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান থেকে। সব শেষে ছিল নাট্য পরিবেশনা। এদিন পথনাটক ‘বোধদয়’ পরিবেশন করে সুবচন। আয়োজকরা জানান, একই উৎসব আজ শনিবার থেকে ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর, রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ, মিরপুর ও দনিয়ায় মঞ্চে শুরু হবে। সব মিলিয়ে ১২৫টি সাংস্কৃতিক সংগঠনের আড়াই হাজার শিল্পী অংশ উৎসবে অংশ নেবেন। প্রতিদিনের আয়োজনে থাকবে সঙ্গীত কবিতা নৃত্য ও পথনাটকের পরিবেশনা। উৎসবে স্বাধীন বাংলা বেতারের শিল্পীরাও সঙ্গীত পরিবেশন করবেন। এর বাইরে প্রতিবছরের মতো এবারও বিজয় দিবসের দিন সকাল সাড়ে দশটায় ঢাকা শহীদ মিনার থেকে বের করা হবে বর্ণাঢ্য বিজয় শোভাযাত্রা। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেল চারটা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত পাঁচ মঞ্চে উৎসব চলবে।
×