ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ

বনানীতে চীনা নাগরিক খুন, মাটি খুঁড়ে লাশ উদ্ধার

প্রকাশিত: ১১:২৯, ১২ ডিসেম্বর ২০১৯

বনানীতে চীনা নাগরিক খুন, মাটি খুঁড়ে লাশ উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর বনানীতে নিজ বাসায় খুন হয়েছেন চীনের এক নাগরিক। তার নাম জে জিয়াং ফিকে (৪৭)। বুধবার সকালে বাসার পাশে খোলা জায়গায় মাটি খুঁড়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বনানীর ২৩ নম্বর রোডের ৮২ নম্বর বাড়িটির পেছনে মরদেহটি মাটিচাপা দেয়া অবস্থায় ছিল। সেখান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা-তাকে শ্বাসরুদ্ব করে হত্যা করা হয়েছে। ব্যবসায়িক বিরোধের সূত্রধরে তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন গুলশান জোনের একজন পুলিশ কর্মকর্তা। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক ওই বাসার দারোয়ান, নিরাপত্তা কর্মী ও লিফটম্যানসহ অন্তত ৬ জনকে বনানী থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রাতে এ রিপোর্ট লেখার সময় বনানী থানার ওসি জানিয়েছেন- তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়- ঘটনাস্থলের বাড়িটি ৯ তলা। তিনি ওই ভবনের লেভেল-৬ বা ৭ তলায় থাকতেন। তিনি পদ্মা সেতুতে পাথর সরবরাহসহ সরকারের কয়েকটি মেগা প্রকল্পে কাজ করতেন। জে জিয়াং ফি মূলত পদ্মা সেতুতে পাথর সাপ্লাই দিতেন। এর আগে কাপড়ের ব্যবসা করতেন। ওই ভবনের ম্যানেজার বাপ্পি সিনহা সাংবাদিকদের জানান, এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে ওই বাসায় থাকতেন জে জিয়াং ফি। গত ২৩ অক্টোবর চীন থেকে ঢাকায় ফেরেন তিনি। আজ বৃহস্পতিবার তার স্ত্রী-সন্তানদের ঢাকায় আসার কথা রয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে বাপ্পি বলেন- গতকাল বিকেলেও তার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। কেন তাকে কারা হত্যা করেছে তা বলতে পারব না। রাতে কাউকে ওই বাসায় ঢুকতে দেখিনি আমি। এ বিষয়ে গুলশান জোনের উপ-কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী এই কথা জানান- ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব থেকে চীনা ব্যবসায়ী জে জিয়াং ফিকে (৪৭) শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে বাসায় ফেরেন তিনি। বুধবার সকাল ১১টার দিকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। বাড়ির পেছনের ফাঁকা জায়গায় তার মাটিচাপা দেয়া লাশ পাওয়া যায়। চুল ও পা বাইরে বেরিয়ে ছিল। কান ও মুখে রক্ত ছিল। গলায়ও দাগ আছে। বাসার ভেতরে একটি কক্ষে জুতার ওপর কয়েক ফোঁটা রক্তের দাগ পাওয়া গেছে। মূল দরজা খোলা ছিল। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ঘটনায় ড্রাইভার, সিকিউরিটি গার্ডসহ ৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ওসি নূরে আজম মিয়া জানান- মঙ্গলবার রাতে দায়িত্বে থাকা তিন নিরাপত্তাকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়। এছাড়া মঙ্গলবার ও বুধবার ভবনটিতে কে কে ঢুকেছে এবং বের হয়েছে সেগুলো জানার চেষ্টা করছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। তবে ওই বাসার সিসিটিভিতে ত্রুটি থাকায় কোন ফুটেজ পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থলে দুপুরে উপস্থিত থাকা একজন পুলিশ সদস্য বলেন- দিন বিশেক আগে ওই ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা চীনে গেছেন। বাসার কাজের লোকজন সকালে ভবনের পাশের খোলা জায়গায় কাজ করার সময় মাটিতে পোঁতা অবস্থায় লাশ পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। সিআইডির ক্রাইম সিন সদস্যরা এখন সেখানে কাজ করছেন জানিয়ে ওই পুলিশ সদস্য বলেন, ‘আসলে কী ঘটেছিল তা এখনও স্পষ্ট নয়। বনানী থানার ওসি নূরে আজম মিয়া জানিয়েছেন, চীন থেকে জিংয়া ফিকের পরিবার আসার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে ঢাকার চীন দূতাবাসের পক্ষ থেকে ক’জন কর্মকর্তা থানায় গিয়ে নিহতে মরদেহ পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা পুলিশের কাছে অবিলম্বে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে খুনীদেরকে চিহ্নিত করে শাস্তির দাবি জানান।
×