ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ব্যয় হবে ৯ হাজার ২৪১ কোটি টাকা

শাহজালাল সম্প্রসারণসহ একনেকে ৭ প্রকল্প অনুমোদন

প্রকাশিত: ১১:৩৩, ১১ ডিসেম্বর ২০১৯

শাহজালাল সম্প্রসারণসহ একনেকে ৭ প্রকল্প অনুমোদন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণসহ সাত প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এগুলো বাস্তবায়নে মোট খরচ ধরা হয়েছে ৯ হাজার ২৪১ কোটি ২৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে সরকারী তহবিল থেকে ৪ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৪ হাজার ৯২৬ কোটি ২৪ হাজার টাকা খরচ করা হবে। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক বৈঠকে এসব অনুমোদন দেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। অনুমোদন হওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রকল্পটিতে সবচেয়ে বেশি খরচ ধরা হয়েছে। প্রকল্পটির মূল ব্যয় ছিল ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। এখন ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়িয়ে মূল ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ২১ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকা। এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, বিমানবন্দর উন্নয়নে নেয়া প্রকল্পটি ২০১৬ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের কথা ছিল। সেটি না হওয়ায় এখন ২০২৫ সাল পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। ডিজাইন পরিবর্তন হওয়ায় প্রকল্পের খরচ বেড়েছে। অর্থাৎ আগে ভিভিআইপি টার্মিনাল আলাদা করার কথা ছিল। এখন সেটি বিমান বন্দরের মূল ভবনের সঙ্গেই হবে। এছাড়াও, আমদানি-রফতানি কার্গো হ্যান্ডলিং আগের ডিজাইনে এক সঙ্গে ছিল। নতুন ডিজাইনে এ দুটি আলাদা স্থানে হবে। প্রকল্পটির অনুশাসনে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, পুরনো রাস্তা সংস্কার এবং আন্তঃজেলা সড়ক চার লেন করার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। নতুন রাস্তা তৈরি নিরুৎসাহিত করতে হবে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়া অনুমোদিত অন্য প্রকল্প ও তার খরচের হিসাবগুলো হচ্ছে, পাকিস্তানের ইসলামাবাদে বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৭৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। ইসলামাবাদে ‘বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্প’ নিয়ে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় কর্মকর্তাদের অহেতুক বিদেশ সফরে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর এই বিরক্তি প্রকাশের কথা জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, প্রকল্পের আওতায় বার বার বিদেশ সফরে প্রধানমন্ত্রী বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। অনেক প্রকল্পে বিদেশ সফরের প্রয়োজন নেই, তবুও যাওয়া হচ্ছে। অনেক প্রকল্পে একই কাজে বার বার বিদেশ সফর করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী এমন অহেতুক বিদেশ সফর চান না বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী। বিদেশে বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজে সাধারণত তিন বার বিদেশ সফর করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। আলাদা আলাদা টিম করে বিদেশ সফরে যান সংশ্লিষ্টরা। প্রথম টিম প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য বিদেশ সফর করেন। দ্বিতীয় টিম চুক্তিসই ও তৃতীয় টিম বাস্তবায়ন কাজে বিদেশ সফর করে। একই কাজে তিনবার পৃথক পৃথক টিম বিদেশ সফর না করে সমন্বিত একটি টিম যেন বিদেশ সফর করে। একনেক সভায় এমন নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়াও কক্সবাজার জেলার রামু-ফতেখাঁরকুল-মরিচ্যা জাতীয় মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২৬৬ কোটি ১৭ লাখ টাকা। ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে মুন্সীগঞ্জ হাঁসাড়া পর্যন্ত জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৪০৯ কোটি ৫ লাখ টাকা। ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া-পাকশী- দাশুরিয়া জাতীয় মহাসড়ক-এর কুষ্টিয়া শহরাংশ ৪ লেনে উন্নীতকরণসহ অবশিষ্টাংশ যথাযথ মানে উন্নীতকরণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৫৭৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা। নাগেশ্বরী-কাশিপুর-ফুলবাড়ী-কুলাঘাট-লালমনিরহাট জেলা মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৯৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। ঢাকা, মাদারীপুর ও রংপুর জেলার ৩টি কলেজের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৮৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, কৃষিমন্ত্রী মোঃ আবদুর রাজ্জাক, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী সভার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, এসডিজি’র মুখ্য সমন্বয়ক, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যবৃন্দ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহের সচিব এবং উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×