ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক শুরু

জলবায়ু অভিঘাত জীবন ও জীবনযাত্রা সঙ্কটাপন্ন করবে ॥ পরিবেশমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১১:২০, ১১ ডিসেম্বর ২০১৯

জলবায়ু অভিঘাত জীবন ও জীবনযাত্রা সঙ্কটাপন্ন করবে ॥ পরিবেশমন্ত্রী

কাওসার রহমান, মাদ্রিদ (স্পেন) থেকে ॥ জলবায়ু সঙ্কট সম্পর্কে জরুরী সতর্কবার্তা প্রদানের মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার জাতিসংঘের ২৫তম জলবায়ু সম্মেলনের হাইলেভেল সেগমেন্ট তথা মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক শুরু হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, চলমান সঙ্কট মোকাবেলায় যে কোন প্রকার বিলম্বের জন্য বিশ্ববাসীকে চরম মূল্য দিতে হবে। উদ্বোধনী দিনে বাংলাদেশের পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মোঃ সাহাব উদ্দিনও কার্বন দূষণকারী দেশগুলোকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, জলবায়ু সঙ্কট আমাদের মতো দেশগুলোর জন্যই হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। জোরাল অভিযোজন কার্যক্রম গ্রহণ করা না হলে জলবায়ু পরিবর্তনের তীব্র অভিঘাত বাংলাদেশের মানুষের জীবন ও জীবনযাত্রাকে সঙ্কটাপন্ন করে তুলবে। মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক শুরুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের ফোরামে যোগ দেন। নেদারল্যান্ডস আয়োজিত অভিযোজন বিষয়ক এক উচ্চ পর্যায়ের ফোরামে যোগ দিয়ে বাংলাদেশের পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ এমনিতেই বিশ্বের একটি অন্যতম বিপদাপন্ন দেশ। বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়ার কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে সক্ষমতা বৃদ্ধি ও অভিযোজন। আমরা বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেছি কৃষি, উপকূলীয় এলাকা ব্যবস্থাপনা, সক্ষম অবকাঠামো তৈরি এবং পানি ও ভূমি ব্যবস্থাপনায়। আমরা দেখিয়ে দিয়েছি, শক্তিশালী আগাম সতর্ক ব্যবস্থা এবং সমন্বিত উদ্যোগ কিভাবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বড় সাফল্য নিয়ে আসতে পারে। আমরা সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ, জনসচেনতা সৃষ্টি এবং দুর্যোগ পরবর্তী উদ্ধার কার্যক্রম উন্নয়নের মাধ্যমে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলাকে জোরদার করেছি। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে দুর্যোগের সংখ্যা বেড়ে গেছে। ঘন ঘন দুর্যোগ আমাদের জানমালের ওপর আঘাত হানছে। কিন্তু লাখ লাখ মৃত্যুর হারকে গত কয়েক বছরে শূন্যে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি।’ মন্ত্রী এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, ‘আমরা বৈশ্বিক এ্যাডাপটেশন কমিশনের অংশ হিসেবে নিজেকে ধন্য মনে করছি। আশা করছি, এ্যাডাপটেশন কমিশন জলবায়ু সঙ্কট মোকাবেলায় নতুন নতুন অভিযোজন পন্থা উদ্ভাবন করে আমাদের সহায়তা করবে। এ কারণে আমাদের প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় এ্যাডাপটেশন কমিশনের অফিস স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা এবং অঙ্গীকার দিয়ে এই অফিসকে সহায়তা করব।’ তিনি নেদারল্যান্ডস সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় নেদারল্যান্ড সরকারের সহায়তায় ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ তৈরি করেছে। এটি হচ্ছে বাংলাদেশের ব-দ্বীপ উন্নয়নে দীর্ঘ মেয়াদি একটি বাস্তবায়নধর্মী কৌশল। অভিযোজন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় এই পরিকল্পনা আমাদের সহায়তা করবে। এ বিষয়ে আমরা স্টেকহোল্ডার তথা সুবিধাভোগীদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছি। আমরা আশা করছি, আন্তর্জাতিক ভাল নিয়ম অনুসরণ এবং অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করে এই পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হব। মোঃ সাহাব উদ্দিন বলেন, ‘জলবায়ু সঙ্কট মোকাবেলায় এ বছর কাজ দেখানোর বছর। ঢাকাও এই জলবায়ু সঙ্কট মোকাবেলায় বৈশ্বিক কার্যক্রমের অবদান রাখতে চায়। আমরা সব সময় প্রস্তুত আমাদের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে বৈশ্বিক অভিযোজন কার্যক্রমে অবদান রাখতে।’
×