ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্ব মানবাধিকার দিবস কেন

প্রকাশিত: ০৯:৩৮, ১০ ডিসেম্বর ২০১৯

বিশ্ব মানবাধিকার দিবস কেন

১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। ১৯৪৮ সালের এই দিনে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদে ‘মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণা’ (The Universal Declaration of Human Rights বা UDHR)) নামক একটি দলিল গৃহীত হয়। দিনটি বিশ্ব মানবাধিকার দিবস হিসেবে পালিত হয়। বাংলাদেশেও হয়। এতে ২৫টি আইনগত অধিকার ‘মানবাধিকার’ হিসেবে স্বীকৃত হয় (১৯টি বুর্জোয়া বা পুঁজিবাদী, ৬টি সমাজতান্ত্রিক)। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ গ্রহণ করে ‘মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণা’ (টউঐজ)। মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাটি ‘সকল জাতির এবং মানুষের অর্জনের সাধারণ মান’ হিসেবে গৃহীত হয়। যে দর্শনের ওপর ভিত্তি করে এটি গৃহীত হয় তা হলো ‘সকল মানুষই বন্ধনহীন অবস্থায় এবং সমমর্যাদা ও সমঅধিকার নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। তাদের বুদ্ধি ও বিবেক দেয়া হয়েছে এবং তাদের উচিত ভ্রাতৃসুলভ মনোভাব নিয়ে একে অন্যের প্রতি আচরণ করা।’ এটি টউঐজ-এর প্রথম অনুচ্ছেদের বক্তব্য। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে প্রণীত বাংলাদেশের ১৯৭২ সালের সংবিধান (বা বর্তমান সংবিধান) সর্বজনীন ঘোষণার মানবাধিকারগুলোকে ব্যাপকভাবে গ্রহণ করেছে। এ সংবিধানের ভিত্তি হলো বাংলাদেশের ১৯৭১-এর প্রথম সংবিধান ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র’, যা তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলার মুজিবনগরে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল গৃহীত হয়। এটি একাত্তরের ২৬ মার্চ থেকে কার্যকারিতা প্রাপ্ত সংবিধান। প্রথম সংবিধানেও মানবাধিকারের উপস্থিতি ছিল বাংলাদেশের জনগণের জন্য ‘সমতা’, ‘মানব মর্যাদা’ ও ‘সামাজিক ন্যায়বিচার’ নামক তিনটি প্রত্যয় রূপে। এ তিনটি প্রত্যয় মানবাধিকারেরই নির্দেশক। এগুলো বিস্তৃতরূপে বর্ণিত হয়েছে বর্তমানে প্রচলিত বাহাত্তরের সংবিধানের ৩য় ও ২য় ভাগে। সংবিধানের ৩য় ভাগে ‘মৌলিক অধিকার’ হিসেবে মোট ১৮টি মানবাধিকার স্থান পেয়েছে। এগুলো পুঁজিবাদী অধিকার। অপরদিকে ৬টি সমাজতান্ত্রিক মানবাধিকার সংবিধানের ২য় ভাগে ‘রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতি’ হিসেবে স্থান পেয়েছে। বিভিন্ন রাষ্ট্রের সংবিধান মানবাধিকার ঘোষণা দ্বারা এভাবে প্রভাবিত হওয়ায় ডক্টর আমবেদকারের নিম্নোক্ত মন্তব্য যথাযথ প্রমাণিত হয়েছে- The Declaration of the Rights of Man... has become part and parcel of our mental make up... these principles have become the silent immaculate premise of our outlook. এ ঘোষণার প্রভাবকে এখন আর এড়িয়ে যাওয়ার কোন পথ নেই। কারণ M. C. Chagla-এর ভাষায় এই ঘোষণা হলো- ’like a brave banner flying from the highest tower in the world which no one can ignore.’ লেখক : কলামিস্ট ও অধ্যাপক, আইন বিভাগ, সাবেক ডিন, আইন অনুষদ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
×