ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাড়ে তিন বছরের আগের অবস্থানে ডিএসইর সূচক

প্রকাশিত: ০৮:৩৮, ৯ ডিসেম্বর ২০১৯

সাড়ে তিন বছরের আগের অবস্থানে ডিএসইর সূচক

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ অব্যাহত বড় দরপতনের কবলে পড়েছে দেশের পুঁজিবাজার। রবিবারের ধারাবাহিকতায় সোমবারও দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি সূচকের বড়পতন হয়েছে। টানা বড় পতনের ফলে প্রায় সাড়ে তিন বছর পূর্বের অবস্থানে ফিরে গেছে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক। সূচকের বড় পতনের সঙ্গে দেখা দিয়েছে লেনদেন খরাও। ফলে ডিএসইর লেনদেন আবারও ২০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে এসেছে। এর মাধ্যমে সোমবার প্রায় দুই মাসের মধ্যে বাজারটিতে সর্বনিম্ন লেনদেন হয়েছে। বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, সোমবার লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ে। এতে পুঁজিবাজারের ঊর্ধ্বমুখীতার আভাস দেখা যায়। লেনদেনের প্রথম ১০ মিনিটে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ২২ পয়েন্ট বেড়ে যায়। কিন্তু বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। কিছুক্ষণ পরই দেখা দেয় দরপতনের প্রবণতা। সেখানে লেনদেনে অংশ নেয়া একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমতে থাকে। ফলে আধাঘণ্টার মধ্যেই ডিএসইর প্রধান সূচক প্রায় ৩০ পয়েন্ট পড়ে যায়। দিনভর সেখানে দরপতনের এ প্রবণতা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। ফলে দিনভর ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া মাত্র ৬৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বেড়েছে। এর বিপরীতে দাম কমেছে ২৩৩টির। আর ৫৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৬২ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৫৩৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর মাধ্যমে টানা দুই দিনের পতনে প্রায় ১৫০ পয়েন্ট হারাল ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক। রবিবার এই সূচকের পতন হয় ৭৫ পয়েন্ট। টানা এমন বড় পতনের কারণে ডিএসইর প্রধান সূচক ৩ বছর ৩ মাস ৯ দিন বা ৩৯ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে গেছে। এর আগে ২০১৬ সালের ৩১ আগস্ট ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪ হাজার ৫২৬ পয়েন্টে ছিল। প্রধান মূল্য সূচকের পাশাপাশি বড় পতন হয়েছে অপর দুই সূচকের। এর মধ্যে ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ২১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৫৬১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক ১৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সূচকের বড় পতনের সঙ্গে দেখা দিয়েছে লেনদেন খরাও। প্রায় দেড় মাস পর ডিএসইর লেনদেন আবারও ২০০ কোটি টাকার ঘরে নেমেছে। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৭৫ কোটি ২৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৪৯ কোটি ১ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৭৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে ২৭ অক্টোবরের পর ডিএসইতে এটিই সর্বনিম্ন লেনদেন। লেনদেন খরার বাজারে এদিন ডিএসইতে টাকার পরিমাণে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার। কোম্পানিটির ৮ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৭ কোটি ৬২ লাখ টাকার। ৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ড্যাফোডিল কম্পিউটার। এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাক, ন্যাশনাল টিউবস, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, ব্র্যাক ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স এবং রেকিট বেনকিজার। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৫১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৮২৮ পয়েন্টে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৩৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৬০টির, কমেছে ১৪৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৯টির।
×