ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

কলাপাড়ায় ফ্রি স্টাইলে চলছে জাটকা শিকার ও বিক্রি

প্রকাশিত: ০৩:৩৭, ৯ ডিসেম্বর ২০১৯

কলাপাড়ায় ফ্রি স্টাইলে চলছে জাটকা শিকার ও বিক্রি

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী ॥ কলাপাড়ার গোটা উপকূলজুড়ে ফ্রি-স্টাইলে জাটকা ইলিশ ধরা ও বিক্রি হচ্ছে। পুলিশ, নৌ-পুলিশ, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, মৎস্যবিভাগ সবাই যেন ঘুমিয়ে আছে। অভিযোগ রয়েছে এদের যোগসাজশে একটি প্রভাবশালী মহল জাটকা ধরা থেকে বিভিন্ন রুটে চালান করা হচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে দেখার কেউ নেই। ট্রাক, পিকআপ, যাত্রীবাহী বাস এমনকি কাভার্ডভ্যানে করেও জাটকা ইলিশ চালান হচ্ছে বিভিন্ন মোকামে। এ ছাড়া সুক্ষফাঁসের জাল দিয়ে নদীতে মাছ ধরা হচ্ছে যে ইলিশসহ বিভিন্ন মাছের এক-দেড় ইঞ্চি পোনা পর্যন্ত মারা পড়ছে। সাগর, নদীতে নেই কোন কারও নিয়ন্ত্রণ। ফলে মৎস্য সম্পদে পরিপুর্ণ ভান্ডারখ্যাত বঙ্গোপসাগর মৎস্য শুন্য হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। উপজেলা মৎস্য বিভাগের এনিয়ে কোন অভিযান তো দুরের কথা নেই কোন পদক্ষেপ। যেন মাস শেষে বেতন নেয়া আর অফিসে আসা-যাওয়াই এ দফতরের কাজ। মৎস্য সম্পদ রক্ষায় নেই কার্যকর কোন পদক্ষেপ। অভিযোগ রয়েছে মাসোহারার বিনিময় সকল সেক্টর ঘুমিয়ে আছে চোখ মেলে। মা ইলিশ রক্ষার অবরোধের পরে মাসাধিককালে জাটকা ইলিশ রক্ষায় কোন অভিযান চলেনি। কুয়াকাটা, খাজুরা, খালগোড়া, মহিপুর, আলীপুর, ব্যুরোজালিয়া, গঙ্গামতি, ঢোস, লালুয়া, চারিপাড়াসহ অসংখ্য স্পটে জাটকা আহরণ শেষে বিভিন্ন স্থানে চালান হয়। এজন্য রুট ম্যানেজের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করা হয়। কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশসহ মৎস্য বিভাগের বিরুদ্ধে এ নিয়ে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। খোদ উপকূলীয় কলাপাড়া ট্রলার মাঝি সমিতির নেতারা জাটকার বিস্তারে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ বছরের মতো ফ্রি-স্টাইলে গত তিন/চার বছরে আর কখনও এতো জাটকা ইলিশ এই অঞ্চল থেকে বিভিন্ন মোকামে চালান হয়নি। প্রতিদিন অন্তত ২০০-৩০০ মণ জাটকা চালান হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন মাধ্যমে। গ্রামাঞ্চলে ফেরি করে জাটকা ইলিশ বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। সর্বোচ্চ এক-দুই শ’ টাকা কেজি দরে (৫-৭টি) জাটকা ইলিশ বিক্রি হয়। কলাপাড়া পৌর শহরের মাছ বাজার এবং চইয়াপাড়া চৌরাস্তার অবৈধ বাজারে খুব সকালে জাটকা পাইকারি বিক্রির হাঁট বসে। মৎস্য বিভাগের এতোটা দৈন্যদশা জাটকা নিয়ন্ত্রণে ইতোপূর্বে আর কেউ দেখেননি বলে বহু মাছ বিক্রেতারা পর্যন্ত মন্তব্য করেছেন। রবিবার সন্ধ্যায় কলাপাড়ার ইউএনও মো. মুনিবুর রহমান অভিযান চালিয়ে একটি ঢাকাগামী বাস থেকে চার মণ জাটকা ইলিশ এবং একটি কাভার্ড ভ্যান আটকে ১০ মণ জাটকা ইলিশ জব্দ করে বিভিন্ন এতিমখানায় বিতরণ করেন। জরিমানা করেছেন পরিবহন দু’টিতে। সচেতনমহলসহ খোদ জেলেরা পর্যন্ত এভাবে জাটকা শিকার ও খোলামেলা পরিবহনের কারনে উৎকন্ঠা প্রকাশ করেন। তারা জানান, যে হারে জাটকা শিকার ও বিক্রি চলছে তাতে আগামি ইলিশের মৌসুমে পরিণত ইলিশ পাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
×