ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা শুরু হচ্ছে ১ জানুয়ারি

প্রকাশিত: ১০:২০, ৯ ডিসেম্বর ২০১৯

 ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা শুরু হচ্ছে ১ জানুয়ারি

এম শাহজাহান ॥ ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় এবার বিদেশীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। কয়েক বছর ধরে বেচাবিক্রিতে ভাল করছে বিদেশী স্টল ও প্যাভিলিয়ন। সীমিত লাভে মানসম্মত পণ্য বিক্রি করায় সহজেই বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রেতাদের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। অন্যদিকে গলাকাটা দামের কারণে দেশী প্রতিষ্ঠান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে ক্রেতারা। এবারের ২৫তম বাণিজ্যমেলায় অংশগ্রহণের জন্য ৩০ দেশের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে। ৫৫ স্টল ও প্যাভিলিয়ন চেয়ে এই আবেদন করা হয়। কিন্তু জায়গা সঙ্কুলান না হওয়ায় দেশগুলোর চাহিদামতো স্টল ও প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। যাচাই-বাছাইয়ের পর ৫৫ আবেদনের বিপরীতে ২৬ স্টল ও প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। নববর্ষের প্রথম দিন (১ জানুয়ারি) থেকে শেরেবাংলা নগরে শুরু হতে যাচ্ছে ২৫তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা-’২০। বরাবরের মতো এবারও বছরের প্রথম দিন আনুষ্ঠানিক বাণিজ্যমেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ লক্ষ্যে মেলার যাবতীয় প্রস্তুতি এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী সামনে রেখে এবারের মেলা আরও আকর্ষণীয় করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। মেলাকে দৃষ্টিনন্দন করতে প্রধান গেটে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর ছোঁয়া থাকছে। মেলায় ঢুকেই বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন দেখতে পাবেন দর্শনার্থীরা। ওই প্যাভিলিয়নে বঙ্গবন্ধুর সুদীর্ঘ কর্মময় জীবনের ইতিহাস তুলে ধরা হবে। থাকবে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও ঐতিহ্য। দর্শনার্থীরা যাতে পরিবার-পরিজন নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে ঘোরাঘুরি করতে পারে সেজন্য মেলায় পর্যাপ্ত জায়গা রাখা হবে। আর মেলার দুই প্রান্তে দুটি শিশুপার্ক, দুটি দৃষ্টিনন্দন ফোয়ারা, একটি ইকোপার্ক, একটি মা ও শিশুকেন্দ্র, একটি বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন ও একটি ইপিবির তথ্যসেবা কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। থাকছে ডিজিটাল এক্সপেরিয়েন্স সেন্টার (ডিজিটাল টাচ স্ক্রিন প্রযুক্তি), যার মাধ্যমে ক্রেতা ও দর্শনার্থী নির্দিষ্ট স্টল ও প্যাভিলিয়ন অতিসহজে খুঁজে বের করতে পারবেন। এদিকে, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এবারের মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের বিশেষ সেবা প্রদানে সরকারী নির্দেশনা দেয়া হবে। বিশেষ করে মেলায় পণ্য বিক্রিতে বিশেষ ছাড় দেবে স্টল ও প্যাভিলিয়ন। এছাড়া মেলায় খাবারের দাম নিয়ে ক্রেতা-দর্শনার্থীর অভিযোগের শেষ নেই। এবার ন্যায্য ও স্বল্প দামে খাবার বিক্রি করার ঘোষণা দেয়া হবে। দাম বেশি নেয়া হলে তাৎক্ষণিক জেল-জরিমানা করা হবে। খাবারের রেস্তরাঁগুলো সর্বক্ষণিক তদারকি করবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। এছাড়া পণ্যের দাম বেশি নেয়া হলেও শাস্তি দেয়া হবে। ক্রেতা-দর্শনার্থীর নিরাপত্তায় র‌্যাব-পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন সর্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবে। মেলা প্রাঙ্গণ সিসি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইপিবি। ফার্মগেট থেকে আগারগাঁও প্রধান সড়কও সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হবে। মেলা প্রাঙ্গণে এবার ছোট ছোট স্টল বরাদ্দ কমানো হয়েছে। তবে বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলোর আগ্রহ রয়েছে ইপিবির। দেশী বড় বড় প্রতিষ্ঠান মেলায় স্টল ও প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ পাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালক অভিজিৎ চৌধুরী জানিয়েছেন, অন্য যে কোন বারের চেয়ে এবার মেলা আরও আকর্ষণীয় করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী সামনে রেখে মেলা আয়োজনের বিষয়টি ঢেলে সাজা হচ্ছে। তিনি বলেন, মেলার প্রধান আকর্ষণ ক্রেতা-দর্শনার্থী। এ কারণে ক্রেতা-দর্শনার্থীর নিরাপত্তা থেকে শুরু করে কেনাকাটায় স্বস্তি দেয়া হবে। শুধু তাই নয়, মেলার প্রধান ফটক থেকে শুরু করে সর্বত্র বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর ছোঁয়া থাকবে। সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকা-ের বিভিন্ন থিম থাকবে মেলাজুড়ে।
×