ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

তিন বছর চাকরির পর স্থায়ী পদে অন্যজন!

প্রকাশিত: ০২:২৪, ৭ ডিসেম্বর ২০১৯

 তিন বছর চাকরির পর স্থায়ী পদে অন্যজন!

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ যবিপ্রবির স্থায়ী প্রকল্পে হিসাবরক্ষক পদে তিন বছর চাকরি করার পরও প্রকল্প রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের সময় মোস্তাফিজুর রহমানকে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এমনকি দুর্নীতির মাধ্যমে ওই পদে অন্য একজনকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছে মোস্তাফিজুর। এছাড়াও কর্মরত অবস্থায় নানা অবিচারের অভিযোগ এনেছেন তিনি। আজ শনিবার বেলা ১১ টায় প্রেসক্লাব যশোরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিটি অ্যাসিউরেন্স সেলের হিসাবরক্ষক খান মোস্তাফিজুর রহমান। এসময় তার সঙ্গে স্ত্রী জান্নাতুল হুসনা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘২০১৬ সালের ১ জুন থেকে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমি যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী প্রকল্পে হিসাবরক্ষক পদে কর্মরত ছিলাম। উপযুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে আমি ওই পদে নিয়োগ পাই। ২০১৯ সালে প্রকল্পটি রাজস্ব খাতে গেলে আমাকে স্থায়ীভাবে চাকরিতে বহাল করা হবে মর্মে আশ্বস্ত করা হয়। আমি সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ শুরু করি। এমনকি এই প্রকল্প বাদেও আমাকে দিয়ে অন্য প্রকল্পের হিসাবের কাজও বিনাপারিশ্রমিকে করানো হয়েছে। বিনা পারিশ্রমিকে অতিরিক্ত কাজ করানোর বিষয়ে আমাকে বলা হয়, এটা আমার কাজের দক্ষতা নির্ণয়ের পরিচয়। তিনি আরো বলেন, এরপর বর্তমান ভিসি ড. আনোয়ার হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব নেন। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর এক পর্যায়ে বলা হয়, আমাকে আমার প্রাপ্য বেতনের চেয়ে বেশি বেতন দেওয়া হয়েছে। তাই বাড়তি দেওয়া বেতন কর্তন করা হবে এবং সেটাই করা হয়। এই হিসাব কর্মকর্তা পদের ইউজিসি কর্তৃক যতগুলি ট্রেনিং করানো হয়েছে তার সবগুলোতেই আমি সফলতার সাথে অংশ নেই। প্রকল্প চলাকালীন অবস্থায় ২০১৮ সালের ১২ নবেম্বর প্রকল্পের পরিচালক ও অতিরিক্ত পরিচালকের পক্ষ থেকে পাঠানো স্থায়ী জনবল কাঠামোতে আমাকে স্থায়ীভাবে নেওয়ার জন্য একটি দরখাস্ত দেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমান ভিসি আমাকে নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সুষ্ঠু পরীক্ষার মাধ্যমে চাকরিতে স্থায়ীভাবে আসতে হবে। নতুনভাবে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় এবং আমি আমার কাজের প্রত্যয়নপত্রসহ সমস্ত কাগজপত্র জমা দেই। এ অবস্থায় ২৭ নবেম্বর নিয়োগ পরীক্ষার প্রবেশপত্র ইস্যু করা হয়। আমি জানতে পারি, আমার প্রবেশপত্র ইস্যু করা হয়নি। আমি জানতে পারি হিসাব কর্মকর্তার পরীক্ষা হবে ৪ ডিসেম্বর। আমি সরাসরি ভিসি স্যারের সাথে দেখা করি এবং আমার প্রবেশপত্র পাওয়ার জন্য জোড় হাতে প্রার্থনা করি। কিন্তু ভিসি স্যার আমাকে প্রবেশপত্র দেওয়া যাবে না বলে জানান। কারণ জানতে চাইলে উনি আমাকে বলেন, এই পদের শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং বয়স আমার নেই এবং সর্বশেষে তিনি বলেন, আমাকে যদি প্রবেশপত্র দেওয়া হয় আমি নাকি সেটা দিয়ে কেস করব। এরপর আমি ডাকযোগে লিখিতভাবে আমার প্রবেশপত্র চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর আবেদন করি এবং পরীক্ষার দিন ৪ ডিসেম্বর সকালে উপস্থিত হই। কিন্ত তবুও আমাকে প্রবেশপত্র দেওয়া হয়নি। আমি জানতে পেরেছি, আমার প্রাপ্য এই পদে অনেক টাকার বিনিময়ে অন্য একজনকে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। মোস্তাফিজুর রহমান আরো বলেন, নিজেকে ওই পদে অভিজ্ঞ এবং উপযুক্ত প্রার্থী হিসেবে দাবি করে তাকে অযোগ্য ঘোষণা করার প্রতিকার ও বিচার দাবি করে তিনি জানান ‘আমার স্ত্রী ও তিন বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। আমি ছাড়া আমার পরিবারে আয়েরও কেউ নেই। এ ব্যাপারে এই প্রকল্পের পরিচালক প্রফেসর ড. জিয়াউল আমিন বলেন, ‘নিয়োগের ব্যাপারে আমাদের কোনো ভূমিকা নেই। আমার সাথে কেন কর্তৃপক্ষ কথা বলতে বলবে? তবে সে (মোস্তাফিজ) তিন বছর কাজ করেছে, সে অভিজ্ঞতার সনদ আমি তাকে দিয়েছি।
×