ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চুয়েটের সুবর্ণজয়ন্তীতে তথ্যমন্ত্রী

শিক্ষিত সন্তান বাবা-মাকে ওল্ডহোমে রেখে আসবে এমন উন্নয়ন চাই না

প্রকাশিত: ১০:৩০, ৭ ডিসেম্বর ২০১৯

  শিক্ষিত সন্তান বাবা-মাকে ওল্ডহোমে রেখে আসবে এমন উন্নয়ন চাই না

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আমাদের বস্তুগত উন্নয়নের পাশাপাশি উন্নত জাতি গঠন করতে হবে। আর এই উন্নয়নের জন্য প্রতিটি নাগরিকের আত্মিক উন্নয়ন ঘটাতে হবে। এমন উন্নয়ন চাই না, যেখানে শিক্ষিত সন্তান-সন্ততিরা বড় হলে তাদের বাবা-মাকে ওল্ডহোমে রেখে আসে। আমরা চাই উন্নত দেশ গঠনের পাশাপাশি উন্নত জাতি গঠন করতে। এ জন্য মেধা, মূল্যবোধ, দেশাত্মবোধ ও মমত্ববোধের সমন্বয় ঘটাতে হবে। আত্মকেন্দ্রিকতা থেকে দূরে সরে আসতে হবে। শুক্রবার বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ৫০ বছর পূর্তিতে এ আয়োজন ছিল অত্যন্ত বর্ণাঢ্য। চুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। এ উৎসব আয়োজনে চুয়েট পরিবারের বর্তমান ও প্রাক্তন মিলে প্রায় ১০ হাজার মানুষের মিলনমেলা ঘটে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। মাত্র সাড়ে ১০ বছরে যে পরিমাণ জিডিপি বেড়েছে তা সত্যিই বিস্ময়কর। এই উন্নয়ন ও অগ্রগতি প্রকৌশলীদের অবদান ব্যতীত সফল হতো না। প্রত্যেকেটা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রকৌশলীদের ভূমিকা অপরিসীম। চুয়েট বিগত ৫১ বছরের পথচলায় বহু প্রকৌশলী তৈরি করেছে, যারা দেশের উন্নয়নে অবদান রাখার পাশাপাশি বিদেশেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। তারাও দেশের উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। তিনি আরও বলেন, আমরা বাঙালীরা বৈশ্বিকভাবে হয়ত ধনী নই। কিন্তু মেধার দিক দিয়ে আমরা অনেক দেশ থেকে এগিয়ে। সাহিত্য, অর্থনীতি, প্রকৌশল ও স্থাপত্য ক্ষেত্রে আমরা অনেক এগিয়ে আছি। শুধুমাত্র বস্তুগত উন্নয়নের মাধ্যমে উন্নত দেশ গঠন করা সম্ভব নয়। দীর্ঘতম সেতু, নদীর তলদেশে টানেল কিংবা ফ্লাইওভার নির্মাণের মতো বস্তুগত উন্নয়ন দিয়ে দেশ উন্নত হয়। কিন্তু এ রকম উন্নয়ন দিয়ে বেশিদূর এগিয়ে যাওয়া যায় না। আমাদের উন্নত জাতি হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চসিক মেয়র জনাব আ.জ.ম. নাছির উদ্দিন বলেন, চুয়েটের প্রকৌশলীরা দেশে-বিদেশে সুনামের সঙ্গে উন্নয়ন কর্মকা-ে অবদান রাখছেন। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রকৌশলীরা দেশের সবচেয়ে মেধাবী ছাত্র। তারা তাদের মেধাকে দেশের কল্যাণে আরও বেশি ব্যবহার করে যাবেন বলে আমি প্রত্যাশা করি। সভাপতির বক্তব্যে চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, চুয়েট দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে প্রকৌশল শিক্ষা ও গবেষণার অন্যতম সেরা বিদ্যাপীঠ। চুয়েটের গৌরবময় পথচলায় প্রায় ১২ হাজার এ্যালামানাই রয়েছে, যারা দেশে-বিদেশে সুনামের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। চুয়েটের অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করতে সকল এ্যালামনাইয়ের কাছে সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি। এ সময় সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন-২০১৯ এর নির্বাহী কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ সাইফুল ইসলাম ও সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মশিউল হক, প্রাক্তন ছাত্র সমন্বয় ও র‌্যালি উপ-কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. কাজী দেলোয়ার হোসেন ও সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. জি.এম. সাদিকুল ইসলাম, চুয়েট এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রকৌশলী কবির আহমদ ভুঁঞা, সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মোঃ নাছির উদ্দিন ও অর্থ কমিটির সভাপতি প্রকৌশলী ফিরোজ খান নুন ফারাজী, সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন পরিষদ চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সভাপতি প্রকৌশলী মোহাম্মদ হারুন ও সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী প্রবীর সেন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. সজল চন্দ্র বনিক, পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. আয়শা আখতার ও যন্ত্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ সানাউল রাব্বী।
×