ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলার তাজমহল

প্রকাশিত: ০৯:৩৭, ৭ ডিসেম্বর ২০১৯

 বাংলার তাজমহল

দেশী-বিদেশী পর্যটকদের পদচারণায় সর্বদাই এখন মুখর থাকে বাংলার তাজমহল ও পিরামিড এলাকা। নিদর্শনগুলো রাজধানী ঢাকা থেকে ২০ মাইল উত্তর-পূর্বে প্রাচীন বাংলার রাজধানী সোনারগাঁয়ের পেরাব গ্রামে ভারতের মুঘল সম্রাট শাহজাহান তার প্রিয়তমা স্ত্রী আরজুমান্দ বানু বেগম যিনি মুমতাজ মহল নামে পরিচিতি তার স্মৃতির উদ্দেশে এই অপূর্ব সৌধটি আগ্রায় যমুনার তীরে নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে এটি আগ্রার তাজমহল হিসেবে বিশ্বব্যাপী সুখ্যাতি অর্জন করে। সেই আগ্রায় তাজমহলের হুবহু নকল বা অবিকল প্রতিরূপ নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের পেরাব এলাকায় নির্মাণ করা হয়েছে বাংলার তাজমহল। এদিকে তাজমহলের ২শ’ গজ পূর্বে মিশরের প্রচীনতম পিরামিডের হুবহু নকশায় নির্মাণ করা হয়েছে বাংলার পিরামিড। যা বর্তমানে এ দেশের- বিদেশী পর্যটকদের কাছে এক দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। দেশী-বিদেশী পর্যটকদের পদচারণায় সর্বদাই এখন মুখর থাকে বাংলার তাজমহল ও পিরামিড এলাকা। নিদর্শনগুলো রাজধানী ঢাকা থেকে ২০ মাইল উত্তর-পূর্বে প্রাচীন বাংলার রাজধানী সোনারগাঁয়ের পেরাব গ্রামে। এখানেই ছায়া ঢাকা নিরিবিলি পরিবেশে গড়ে তোলা হয়েছে বাংলার তাজমহল ও পিরামিড। প্রথমে ৯ বিঘা জমির ওপর তাজমহল নির্মিত হলেও পর্যায়ক্রমে এর পরিধি বর্তমানে ১৮ বিঘায় উন্নীত করা হয়েছে এবং পিরামিডটি ৫২ বিঘা জমির ওপর নির্মাণ করা হয়েছে। আগ্রার তাজমহল ও মিসরের পিরামিডের হুবহু অনুকরণে নির্মিত বাংলার তাজমহল ও পিরামিডটি খুব অল্প সময়েই দেশী-বিদেশী পর্যটকদের মন কাড়তে সক্ষম হয়েছে। বাংলার তাজমহল ও পিরামিড দেখার জন্য দেশী-বিদেশী দর্শনার্থীরা প্রতিদিন ছুটে আসেন পেরাব গ্রামে। তবে শিক্ষার্থী ও তরুণ-তরুণীদের সমাগম লক্ষণীয়। তাজমহলের ইনর্চাজ দেওয়ান মোঃ এলাহী জানান, দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে তাজমহলের ভিতরে মনোরোম পরিবেশে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত একটি আধুনিক চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ও ২ হাজার লোকের ধারণক্ষমতা সম্পূর্ণ কনভেনশন সেন্টার নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এবং সপ্তাহ ৭ দিন দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে। জনপ্রতি প্রবেশ মূল্য ১৫০ টাকা দিয়ে এক সঙ্গে বাংলার তাজমহল ও পিরামিড দেখতে পারবেন। ঢাকা থেকে সরাসরি তাজমহল ও পিরামিডে আসার একাধিক পথ রয়েছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ডেমরা ব্রিজ হয়ে রূপগঞ্জের বরপা ও গাউছিয়া গোলাকান্দাল হয়ে মাত্র ১৫ কিলোমিটার পথ। এছাড়াও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মদনপুর হয়ে এশিয়ান হাইওয়ে সাইদুল মার্কেট হয়ে তাজমহল ও পিরামিডে। পর্যটকদের সুবিধার্থে যানবাহন পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রেখেছে তাজমহল ও পিরামিড কর্তৃপক্ষ। বাংলার তাজমহল ও পিরামিডের প্রতিষ্ঠাতা মুক্তিযোদ্ধা ও ধনবান চলচ্চিত্র নির্মাতা আহসানুল্লাহ মনি জানান, ১৯৮০ সালে সপরিবারে প্রথম ভারতের আগ্রার তাজমহল দেখতে যাই এবং এর স্থাপত্য শৈলীর কারুকার্যে মুগ্ধ হই। তখন মাথায় আসে আমার দেশের বেশিরভাগ মানুষ ভারতে গিয়ে প্রকৃত নিদর্শন দেখার সামর্থ্য নেই তারা যেন হুবহু তাজমহল দেখার স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন তাই নিজের জম্মভূূমি সোনারগাঁওয়ে পেরাব গ্রামে ২০০৩ সালে বাংলার তাজমহলের নির্মাণ কাজ শুরু করে ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে নির্মাণ কাজ শেষে করে বাংলার তাজমহল দর্শনার্থীদের জন্য উম্মুক্ত করে দেয়া হয়। এদিকে মিসরের পিরামিড দেখেও আমি মুগ্ধ হই তাই মিসরের পিরামিডের হুবহু নকশায় একই সঙ্গে পিরামিডের কাজও শুরু করে ২০১৬ সালে দর্শনার্থীদের জন্য উম্মক্ত করে দেই। এখানে ঘুরতে আসা পর্যটকদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা রয়েছে। -ফারুক হোসাইন, সোনারগাঁ থেকে
×