ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশকে ভুটানের স্বীকৃতি ॥ ৭ ডিসেম্বর ১৯৭১

প্রকাশিত: ০৯:৩০, ৭ ডিসেম্বর ২০১৯

 বাংলাদেশকে ভুটানের স্বীকৃতি ॥ ৭ ডিসেম্বর ১৯৭১

১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর দিনটি ছিল মঙ্গলবার। এই দিন কলকাতার থিয়েটার রোড, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র, বাংলাদেশ মিশন, শরণার্থী শিবির ও যুব অভ্যর্থনা কেন্দ্রের সব বাঙালী স্বাধীনতার সূর্যোদয়ের প্রত্যাশায় উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠিত ছিল। ঠিক সেসময় ভুটান স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। ইতোমধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতির বিবরণ দিয়ে জেনারেল নিয়াজি গোপন বার্তা পাঠিয়েছিলেন রাওয়ালপিন্ডি হেড কোয়ার্টারে। রিপোর্টে তিনি উল্লেখ করেন, ‘চারটি ট্যাঙ্ক রেজিমেন্ট সমর্থিত আট ডিভিশন সৈন্য নিয়ে আক্রমণ শুরু করেছে ভারত। তাদের সঙ্গে আরও আছে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৬০ থেকে ৭০ হাজার মুক্তিযোদ্ধা। তিনি আরও লিখেন, স্থানীয় জনগণও আমাদের বিরুদ্ধে। ‘গত নয় মাস ধরে আমাদের সৈন্যরা কার্যকর অপারেশন চালিয়েছে এবং এখন তারা তীব্র যুদ্ধে অবতীর্ণ। ‘সৈন্যরা দিনাজপুর, রংপুর, সিলেট, মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লাকসাম, চাঁদপুর ও যশোরে প্রবল চাপের মুখে রয়েছে। পরিস্থিতি নাজুক হয়ে উঠতে পারে। গত ১৭ দিনে যেসব খ-যুদ্ধ হয়েছে, তাতে জনবল ও সম্পদের বিচারে আমাদের ক্ষয়ক্ষতি বেড়ে গেছে। রাজাকারদের অস্ত্রসহ শটকে পড়ার সংখ্যা বাড়ছে। আমাদের নিজেদের ট্যাঙ্ক, ভারি কামান ও বিমান সমর্থন না থাকায় পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটছে।’ এ বার্তা পেয়ে হেড কোয়ার্টার থেকে সম্মুখ সমরের সৈন্যদের পিছিয়ে এনে প্রতিরোধ ঘাঁটিতে সমবেত করার পরিকল্পনা অনুমোদন করা হয়। তবে অনুমোদনের অপেক্ষায় বসে থাকেনি যশোর ক্যান্টনমেন্টের পাকিস্তানী সৈন্যরা। ঘাঁটি ছেড়ে তারা ৬ ডিসেম্বর রাতের অন্ধকারেই পালিয়ে যায়। একদল যায় ফরিদপুর-গোয়ালন্দের দিকে। বড় দলটি যায় খুলনার দিকে। ব্রিগেডিয়ার হায়াত তখন ঢাকার দিকে না গিয়ে বস্তুত খুলনার দিকে এক রকম পালিয়েই গিয়েছিলেন। এই দিন নিয়াজির সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী ‘দুর্গ’ যশোরের পতন ঘটে। বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ ভারতীয় নবম ডিভিশনের প্রথম কলামটি এক রক্তাক্ত যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে উত্তর দিক দিয়ে যশোর ক্যান্টনমেন্টের কাছে এসে পৌঁছায়। মিত্রবাহিনীর কলাম যতই এগিয়ে এলো ততই তারা আশ্চর্য হয়ে গেল। কেননা কোন প্রতিরোধ নেই। এর পরপরই তারা বুঝতে পারে যশোর ক্যান্টনমেন্ট ছেড়ে সব পাকসৈন্যরা পালিয়ে গেছে। পলায়নের সময় পাকবাহিনী বিপুল অস্ত্রশস্ত্র, রেশন এবং কন্ট্রোল রুমের সামরিক মানচিত্রও ফেলে রেখে যায়। বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ ও রসদ ভর্তি সুরক্ষিত বাঙ্কার সম্পূর্ণ জনশূন্য। চার ব্যাটালিয়ন সৈন্যের এইরূপ অকস্মাৎ অন্তর্ধানে দেশের পশ্চিমাঞ্চল কার্যত মুক্ত হয়। যশোর থেকে ঢাকা অথবা খুলনার দিকে বিক্ষিপ্ত পলায়নপর সেনারাই অন্যান্য স্থানে স্বপক্ষীয় সৈন্যদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করে, দুই-তিনটি স্থান বাদে সর্বত্রই পাকিস্তানীদের প্রতিরক্ষার আয়োজনে ধস নামে। এদিকে মিত্রবাহিনী সিলেটের নিকটবর্তী বিমানবন্দরে অবতরণ করার পর মুক্তিবাহিনীর সহায়তায় সিলেট শহর মুক্ত করে। ঝিনাইদহ ও মৌলভীবাজারও মুক্ত হয় এই দিনে। এই দিন যৌথবাহিনী চান্দিনা ও জাফরগঞ্জ অধিকার করে। অবশ্য কুমিল্লা ও লাকসামে তুমুল যুদ্ধ চলছে। বিকেলের দিকে বগুড়া-রংপুর সড়কের করতোয়া সেতুর দখল নিয়ে পাক ও যৌথবাহিনীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরু হয়। মেজর আফসারের বাহিনী ভালুকা থানা তিন দিক থেকে ঘেরাও করে শত্রুসেনাদের ওপর প্রচন্ড আক্রমণ চালায়। ভারতীয় বেতার কেন্দ্র থেকে পাকিস্তানী জওয়ান ও অফিসারদের উদ্দেশে শুরু হয় ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল মানেকশ’র মনস্তাত্ত্বিক অভিযান। রাত ১০টায় ভারতীয় বেতার কেন্দ্র আকাশবাণী থেকে হিন্দী, উর্দু ও পশতু ভাষায় জেনারেল মানেকশ বাংলাদেশে দখলদার পাক বাহিনীকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘তোমাদের বাঁচার কোন পথ নেই। মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনী বাংলাদেশকে মুক্ত করার জন্য তোমাদের ঘিরে রেখেছে। তোমরা যে নিষ্ঠুর আচরণ করেছ, তারা তার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। দেরি হওয়ার আগেই তোমরা আত্মসমর্পণ কর। তোমাদের যুদ্ধ করার ক্ষমতা ও যুদ্ধাস্ত্রের শক্তি অকেজো হয়ে গেছে। বাইরে থেকে বিমানের সাহায্য আসার সম্ভাবনা নেই। অতএব তোমরা অস্ত্র ত্যাগ কর। তোমাদের বাঁচার একমাত্র পথ হচ্ছে সম্মিলিত মানুষের কাছে আত্মসমর্পণ করা। যশোরের পতন পাকিস্তানের সামরিক প্রতিষ্ঠানের মূল কেন্দ্রকে নাড়া দেয় প্রবলভাবে। গবর্নর আবদুল মালেক পূর্বাঞ্চলের লে. জে. নিয়াজির অভিমত উদ্ধৃত করে এক বার্তায় ইয়াহিয়াকে জানান-যশোরের বিপর্যয়ের ফলে প্রদেশের পশ্চিমাঞ্চলের পতন প্রায় সম্পন্ন এবং মেঘনার পূর্বদিকের পতনও কেবল সময়ের ব্যাপার, এই অবস্থায় আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে যদি প্রতিশ্রুত বৈদেশিক সামরিক সহায়তা না পৌঁছায় তবে জীবন রক্ষার জন্য বরং ক্ষমতা হস্তান্তরের আলোচনা শুরু করা বাঞ্চনীয়। গবর্নর মালেকের এই বার্তা ইসলামাবাদের কর্তৃপক্ষের জন্য আরও বেশি দুর্ভাগ্যজনক ছিল এ কারণে যে, পশ্চিম পাকিস্তানের সীমান্ত থেকে ভারতের জম্মু কাস্মীরের দিকে তাদের আকাক্সিক্ষত অগ্রাভিযান তখনও কোন উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করতে পারেনি, একমাত্র ছম্ব এলাকায় কিছু অগ্রগতি ছাড়া। উত্তর-পশ্চিম ভারতের কোন বড় বা মাঝারি ভূখন্ড দখল করার আগেই পূর্ব বাংলায় তাদের সামরিক নেতৃত্ব যদি আত্মসমর্পণের জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়ে তবে সমূহ বিপর্যয়। কাজেই মালেকের দুর্গত বার্তা ওই সন্ধ্যাতেই ‘হোয়াইট হাউসে’ পৌঁছানো হয় সম্ভবত অবিলম্বে মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের জন্য মালেকের আবেদনকে আকুলতর করেই। পাকিস্তান যাতে পূর্বাঞ্চলে পরাজিত না হয় তৎমর্মে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পেন্টাগনের সুপারিশ কিসিঞ্জারের কাছে পৌঁছানোর কথা ছিল ওই দিনই। ফজল মুকিম খানের বর্ণনা অনুসারে এরও দুইদিন আগে অর্থাৎ ৫ই ডিসেম্বর থেকে নিয়াজির মনোবল ঠিক রাখার জন্য পাকিস্তানের প্রধান সেনাপতি আবদুল হামিদ আসন্ন চীনা হস্তক্ষেপের সংবাদ নিয়াজিকে দিয়ে চলেছিল। উত্তরের গিরিপথের প্রায় সব ক’টি তখনও বরফমুক্ত। কিন্তু সিংকিয়াং সীমান্তে সোভিয়েত স্থল ও বিমান বাহিনীর শক্তি বৃদ্ধির তাৎপর্য চীনের জন্য উপেক্ষণীয় ছিল না। যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে অর্থনৈতিক সাহায্যদান বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়। সোভিয়েত নেতা লিওনিদ ব্রেজনেভ কোন প্রকার বহিঃশক্তির হস্তক্ষেপ ছাড়া পাক-ভারত সংঘর্ষের একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানান। নিক্সন প্রশাসনের জন্যও সমস্যা তখন কম নয়। মার্কিন সিনেটের হাউস অব রিপ্রেজেন্টিটিভে ডেমোক্র্যাট দলীয় কোন কোন সদস্য পাকিস্তানী জান্তার গণহত্যা, নির্যাতন ও মানবতাবিরোধী নীতির প্রতি মার্কিন প্রশাসনের সমর্থন এবং জাতিসংঘের বিলম্বিত ও একদেশদর্শী ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন। মানবতাবাদী কারণ ছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরেট জাতীয় স্বার্থের হিসাব-নিকাশ থেকে উপমহাদেশের সংঘর্ষের জন্য ভারতকে এককভাবে দোষী করা, ভারতের উন্নয়ন বরাদ্দ বন্ধ করা প্রভৃতি বিষয়ে মার্কিন সরকারের গৃহীত ব্যবস্থার যৌক্তিকতা সম্পর্কে মার্কিন সংবাদ মাধ্যমগুলো নানা প্রশ্ন তোলে। জনমতের এই প্রচ- বিরুদ্ধতা দৃষ্টে এই দিন কিসিঞ্জার নিজেই এক অজ্ঞাতনামা ‘সরকারী মুখপাত্র’ হিসাবে আস্থাভাজন কিছু সাংবাদিকদের কাছে পরিবেশিত এক সমীক্ষার দ্বারা মার্কিন জনমত পরিবর্তনের চেষ্টা করেন। কিসিঞ্জারের এই বেনামি সমীক্ষা মার্কিন জনমতকে কতটুকু বিভ্রান্ত করতে সক্ষম হয়েছে তা অজ্ঞাত থাকলেও, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ উপমহাদেশের যুদ্ধ বন্ধ করার পক্ষে সেদিন যে রায় দেন, তা-ই মার্কিন সরকারের পরবর্তী কার্যক্রমের প্রধান মূলধনে পরিণত হয়। সাধারণ পরিষদ রাতে (উপমহাদেশে তখন ৮ ডিসেম্বর) অবিলম্বে যুদ্ধ বিরতি, উভয়পক্ষের সৈন্য প্রত্যাহার এবং শরণার্থী প্রত্যাবর্তনের জন্য রাজনৈতিক সমাধানের আহ্বান সংবলিত এক প্রস্তাব ১০৪-১১ ভোটে গ্রহণ করে। সোভিয়েত ইউনিয়ন, সমাজতন্ত্রী কয়েকটি দেশ, ভারত এবং বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানকারী দ্বিতীয় দেশ ভুটান বাংলাদেশের অভ্যুদয় রোধ করার জন্য এই আন্তর্জাতিক কূটবুদ্ধির বিজয়ের মুখেও অটল থাকে। বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী জাতিসংঘের ভূমিকা সম্পর্কে মুজিবনগর সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাখ্যা করে বলেন-বাংলাদেশের জণগণকে যখন নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছিল তখন জাতিসংঘ নিষ্ক্রিয় ছিল। আক্রমণকারী পাকিস্তানী সৈন্যদের হটিয়ে বাংলাদেশ যখন সাফল্যের পথে এগিয়ে যাচ্ছে তখন জাতিসংঘ কর্তৃক যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। পাকিস্তান আক্রমণের পর সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে ভারতের লোক সভায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শ্রী জগজীবন রাম তার বিবৃতিতে বলেন, পাকিস্তানের পূর্বপরিকল্পিত ভাবে আমাদের আক্রমণ করে ক্ষতিসাধন করার যে উদ্দেশ্য ছিল, তা ব্যর্থ হয়েছে। আমরা এখন পর্যন্ত ৫২টি পাকিস্তানী যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছি এবং খুব সম্ভবত আরও ৪টির ক্ষতি করেছি। ৩ জন পাকিস্তানী পাইলট আমাদের হেফাজতে আছে। আমাদের বিমানবাহিনীকে গত দুইদিন ধরে ফরোয়ার্ড পজিশনে জড়ো করা হচ্ছে এবং তারা গ্রাউন্ড পজিশনে দারুণ সহযোগিতা করছে। আমরা একই সঙ্গে পাকিস্তানের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করতে পেরেছি, তাদের সাপ্লাই ডাম্প এবং তেল সংরক্ষণাগারগুলোতেও সফলতার সঙ্গে হামলা চালিয়ে ছিন্নভিন্ন করেছি। সবমিলিয়ে আমরা ২২টি বিমান হারিয়েছি। আমরা এখন পর্যন্ত ৯৬টি পাকিস্তানী ট্যাঙ্ক ধ্বংস করেছি। পশ্চিমাংশে, আমাদের বাহিনী মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে একসঙ্গে যুদ্ধ করছে। আমাদের হামলায়, পাকিস্তানী বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছে। বাংলাদেশের আকাশ থেকে পাকিস্তানী বিমানবাহিনী সম্পূর্ণ মুছে ফেলে আমাদের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সাগর থেকে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন সরঞ্জাম চট্টগ্রাম, চালনা, মংলা এবং খুলনায় জড়ো করা হচ্ছে। পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে এখানকার পাকিস্তান বাহিনীর উপকূলবর্তী সবধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। দুইটি পাকিস্তানী যুদ্ধতরী ডুবিয়ে দেয়া হয়েছে এবং আমার বিশ্বাস আরও একটি প্রচন্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাদের নেভাল ফোর্স করাচী সমুদ্রসীমার ১৫ মাইল ভেতরে চলে গিয়েছে। তাদের প্রচন্ড গোলাবর্ষণে সমুদ্রে অবস্থানরত পাকিস্তানী নেভির ঘাঁটি ও তেলের ট্যাঙ্কগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে আমরা একটি পাকিস্তানী সাবমেরিন ডুবিয়ে দিয়েছি। বাংলাদেশে পাকিস্তানের দখলকৃত সমুদ্রসীমাগুলোতে ইস্টার্ন ফ্লিট অপারেশন চালাচ্ছে। তিন বাহিনীই গুরুত্বপূর্ণ অপারেশনে নিয়োজিত। প্রতিটি পরিকল্পনায় তাদের যে দক্ষতা এবং পারস্পরিক সহযোগিতা, তা সন্তোষজনক। আমি, সদস্যদের পক্ষ থেকে আমাদের বিরোচিত বাহিনীকে দেশরক্ষায় এই মহান অবদানের এবং শত্রুপক্ষকে পরাজিত করার জন্য অভিনন্দন জানাতে চাই। জাকার্তা থেকে ইন্দোনেশিয়া রাজা বলেন, চেষ্টা ব্যর্থ হলো এবং বন্দুক কথা বলল। পাকিস্তান ইন্দোনেশিয়ায় একজন বিশেষ দূত পাঠাচ্ছে, কিন্তু পুরো বিশ্ব দেখেছে পূর্ব পাকিস্তানে নিজেদের দেশের মানুষের ওপর কি অপচিকিৎসা চালানো হয়েছে। বিজয়ী আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করা হয়েছে, মুজিবুর রহমানকে জেলে ঢোকানো হয়েছে আর তার ফলোয়ারদের আটক করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের সরকারের অপকর্মের ফলে ভারতকে যে লাখ লাখ শরণার্থীর বোঝা বহন করতে হচ্ছে এমনটি পৃথিবীর ইতিহাসে অন্য কোন একক দেশকে বহন করতে হয়নি। পাকিস্তানকে বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছাকে সম্মান করতে হবে এবং তাদের ভুল সংশোধন করতে হবে। লেখক : শিক্ষাবিদ ও গবেষক [email protected]
×