ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দাবি গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলমের

জঙ্গীদের মাথায় আইএস টুপি এসেছে কারাগার থেকেই

প্রকাশিত: ১১:১৭, ৬ ডিসেম্বর ২০১৯

জঙ্গীদের মাথায় আইএস টুপি এসেছে কারাগার থেকেই

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ হলি আর্টিজানে জঙ্গী হামলায় মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামি জঙ্গী রাকিবুল হাসান ওরফে রিগ্যানকে আদালতে আনা-নেয়ার সময় তার মাথায় পরা আইএসের মনোগ্রাম সংবলিত টুপি আসার উৎসের ঘটনÑকার কথা সত্যি? কারাগার কর্তৃপক্ষের নাকি ডিএমপির? আইএসের টুপি কারাগার থেকেই এসেছে বলে বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপিতে সংবাদ সম্মেলনে বলেন ডিএমপির তদন্ত কমিটির প্রধান গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহাবুব আলম। এর আগে কারাগার থেকে ওই আইএস টুপি যায়নিÑ বলেছেন, কারাগার কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান কর্নেল আবরার হোসেন। কারাগার ও পুলিশের একে অপরকে দায়ী ও দোষারোপের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করায় প্রশ্ন উঠেছে -আসলে কার কথা সত্যি ? বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপিতে সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির তদন্ত কমিটির প্রধান গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহাবুব আলম বলেন, হলি আর্টিজানে হামলা মামলার রায়ের দিন কারাগার থেকেই আসামি জঙ্গীরা মোট তিনটি টুপি নিয়ে আসে। তিনি জানান, তিনটি টুপির মধ্যে দুটি ছিল কালো, অন্যটি সাদা। লাল টুপি দুটি রায় ঘোষণা শেষে আদালত থেকে বের হওয়ার সময় দুই জঙ্গীর মাথায় দেখা যায়। তিনি বলেন, আমরা ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখেছি, কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় তল্লাশি করা হয়েছে। তবে তাদের কাছে যে টুপি ছিল তা রেখে দেয়া হয়নি। বরং নির্বিঘেœ তাদের টুপি নিয়ে আসতে দেয়া হয়েছে। তবে কোন লোগো ফুটেজে ধরা পড়েনি। এক প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, কারারক্ষীরা হয়ত বুঝতেই পারেনি, এটা সিগনিফিকেন্স। টুপি তো নামাজের অংশ। তাই হয়ত তারা ছেড়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, জঙ্গীদের কাছে এভাবে একাধিক টুপি এসে থাকতে পারে। লোগো থাকতেও পারে, নাও পারে। তবে আমাদের তদন্তে ধরা পড়েনি। এমনও হতে পারে, তারা যে টুপি কারাগার থেকে এনেছিল, আদালতে রায় শোনার পর তা তারা উল্টে পরেছে। রিগ্যানের বিষয়ে মাহাবুব আলম বলেন, আইএস টুপি বিতর্কের পর তদন্তের স্বার্থে তাকে অনেক সংস্থাই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। রিগ্যান কারাগারে এক ধরনের বক্তব্য দিয়েছে, গোয়েন্দা পুলিশের কাছে আরেক ধরনের আবার আদালতে গিয়ে ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছে। আদালতের নিরাপত্তা বিষয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, সেদিন আদালতে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা জোরদার ছিল। এরপরও আদালতে রিগ্যান বলেছে, ভিড়ের মধ্যে কেউ একজন তাকে টুপি দিয়েছে। সেদিন পুলিশ, সাংবাদিক ও আইনজীবী ছাড়া কেউ ছিলেন না। সাংবাদিক ও আইনজীবীর বিষয়টি আদালতে একটা ফ্রেমে আনা দরকার। এমন কোন সিস্টেম দাঁড় করানো দরকার যাতে আইনজীবী তার পেশায় থাকতে পারেন, সাংবাদিক যাতে তার রিপোর্ট কাভার করতে পারেন। পুলিশ তার নিরাপত্তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারে। আইএস টুপি বিষয়ে তদন্তের জন্য ডিএমপির পক্ষ থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পান গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহাবুব আলম। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, কমিটি দু/এক দিনের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন কমিশনারের কাছে জমা দেবে। ডিএমপি কারাগার থেকে টুপি আনার কথা বললেও কারা অধিদফতরের তদন্ত কমিটি বলছে, জঙ্গী রিগ্যানের মাথায় লোগো সংবলিত যে আইএস টুপি দেখা গেছে, তা কারাগার থেকে যায়নি।
×