ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাংকাররা সুবিধা নিলেও সুদহার কমাল না ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৩:১২, ৫ ডিসেম্বর ২০১৯

ব্যাংকাররা সুবিধা নিলেও সুদহার কমাল না ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী

অনলাইন রিপোর্টার ॥ সুদহার এক অংকে নামিয়ে আনার জন্য ব্যাংকাররা অনেক সুবিধা নিলেও সুদহার কমাল না বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বৃহস্পতিবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার বসুন্ধরায় তিনদিনব্যাপী সিরামিক এক্সপো বাংলাদেশ ২০১৯ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম, বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক ইফরান উদ্দিন প্রমুখ। টিপু মুনশি বলেন, ‘১২ থেকে ১৪ শতাংশ সুদে ঋণ নিয়ে ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে পারে না। এত সুদ হলে একটার পর একটা ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যাবে। ঋণ খেলাপির সংখ্যা বাড়বে। এ বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী ব্যাংক ঋণে সুদহার এক অংকে নামিয়ে আনার নির্দেশ দিলেন। এ জন্য ব্যাংকারদের নানা সুবিধা দেয়া হলো। ব্যাংকররা সুবিধাটা পুরোপুরি নিল। কিন্তু এক বছর পার হয়ে গেলেও সুদহার এক অংকে আনল না।’ তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রীও অনেকবার তাগাদা দিয়েছেন কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো প্রাইভেট ব্যাংক সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে আনেনি। আমাদের দেশেই পৃথিবীর ব্যতিক্রমই দেশ, যেখানে স্প্রেড অনেক হাই। অন্যান্য দেশে যেখানে স্প্রেড আড়াই থেকে তিন। আমাদের দেশে এটা ৬ শতাংশরও ওপরে। যেটা হওয়া উচিত নয়।’ বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি যা বলি তার উল্টোটা পত্রিকায় ছাপা হয়। সেদিন পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়ে বললাম যে, আমি পদত্যাগ করলে যদি পেঁয়াজের দাম কমে যায় তাহলে পদত্যাগ করাটা এক মিনিটের ব্যাপার। পরের দিন পেপারে খবর আসল যে, আমি পদত্যাগ করব। এটা আমাদের প্রবলেম। ব্যাংকারদের ক্ষেত্রেও একই কথা। তারা সুবিধা নিল, প্রধানমন্ত্রী বার বার বললেন তারপরও কাজের কাজের কিচ্ছুই হলো না।’ তিনি বলেন, ‘এই যদি অবস্থা হয়, তাহলে আমাদের অর্থনীতি, ব্যবসায়ীরা যাব কোথায়। এ ধরনের কথা বললে মনে হবে যে মন্ত্রী বলছে না, ব্যবসায়ীদের পক্ষে কোনো ব্যবসায়ী বলছে। কিন্তু আসল কথা হচ্ছে আমি একজন ব্যবসায়ী। তার জন্য আমার কথাবার্তা ব্যবসায়ীদের মতো। মন্ত্রীর মতো ভাব-টাব এখনও আসে না।’ ‘আমি অর্থমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে থাকি, আর অর্থমন্ত্রী আমার দিকে তাকিয়ে থাকেন। সুদহার এক অংকে নামিয়ে না আনলে কোনো ব্যবসা করা যাবে না। অন্তত জেনুইন ব্যবসা করা যাবে না। অন্য কিছু করা গেলে যাবে।’ টিপু মুনশি বলেন, ‘কয়েকদিন আগে অর্থমন্ত্রী ব্যাংকারদের নিয়ে বসেছিলেন। সম্ভবত জানুয়ারি থেকে সুদহার এক অংকে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। দেখি কী হয়, আমাদের ভরসা করা ছাড়াতো আর কিছু করার নেই।’ এনবিআরের রাজস্ব সংগ্রহ পদ্ধতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এনবিআর যে পদ্ধতিতে রাজস্ব সংগ্রহ করে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এ পদ্ধতিটা পরিবর্তন করা প্রয়োজন। বাংলাদেশে অনেক জনগণ আছে আয়কর দেয়ার যোগ্য। কিন্তু কয়জন দেয়। এই পরিধিটা যদি বড় না করে যারা দেয় তাদের ওপরই চাপ সৃষ্টি করা হয়, তাহলে যারা দেয় তাদের তো নাভিশ্বাস উঠে যাবে।’ ‘ট্যাক্স প্রদানকারীর সংখ্যা বাড়ছে না, যারা দিচ্ছে তাদের ওপরেই চাপ বাড়ছে। তাহলে ব্যবসার প্রসারটা হবে কীভাবে? তারপরও ব্যবসায়ীদের স্যালুট জানাই এসব প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে তারা দেশের বাণিজ্যকে বাড়িয়ে নিচ্ছে। আমি আগামীতে এনবিআরের সঙ্গে বসব। এ ব্যাপারে কথা বলব। ট্যারিফ কমিশন হচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিষ্ঠান। এনবিআরকে ট্যারিফ কামিশনের সঙ্গে বসে ট্যাক্স আরোপের বিষয়ে বলবো’,- যোগ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
×