প্লাস্টিক বর্জ্য পরিবেশে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করে। সাধারণত উদ্ভিদকুল, জলজ প্রাণী, দ্বীপ অঞ্চলের প্রাণীরা প্লাস্টিক বর্জ্যরে জন্য মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। প্লাস্টিক বর্জ্য ওই সব প্রাণীর বাসস্থান, খাদ্য সংগ্রহের স্থান ও উদ্ভিদের খাদ্য গ্রহণের পথে বাধার সৃষ্টি করে। শুধু উদ্ভিদ বা জলজপ্রাণী নয়, মানুষ প্লাস্টিক দূষণের কারণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। থাইরয়েডে হরমোনের অতিরিক্ত ক্ষরণের জন্য প্লাস্টিক দূষণ পরোক্ষভাবে দায়ী। শুধু আমেরিকাতে প্রতিবছর ৫ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহৃত হয়। এগুলোর মধ্যে মাত্র ২৪ শতাংশ পুনঃচক্রায়ন হয়ে থাকে। অন্য ৩.৮ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক বর্জ্য আকারে মাটিতে ফেলে দেয়া হয়। বর্তমানে বিভিন্ন দেশে প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার কমাতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশেও পলিথিন ব্যাগ ব্যবহারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
প্লাস্টিকের ক্ষতিকর প্রভাব জানার সঙ্গে সঙ্গে প্লাস্টিকের বিকল্প সন্ধান করা হচ্ছে। আদৌ প্লাস্টিকের উত্তম ও সহজলভ্য বিকল্প রয়েছে কি না, সে প্রশ্নও উঠছে। সুলভে সহজে পচনশীল প্লাস্টিকের উপযুক্ত বিকল্প পাওয়ার বিষয়ে অনেকের সংশয় রয়েছে। তবে একবার ব্যবহার উপযোগী ও সহজে ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের পচনশীল ও সস্তা বিকল্প পাওয়ার ব্যাপারে অনেকেই আশাবাদী। কাগজের তৈরি প্লেট, কাপ, গ্লাস, স্ট্র, বাক্স, মোড়ক এখন ব্যবহারও হচ্ছে। ইউরোপীয় দেশগুলোতে প্রচলিত প্লাস্টিক পণ্যের বিকল্প না পেলে বিদ্যমান প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার ২০২৫ সাল নাগাদ ২৫ শতাংশ সঙ্কুচিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন তার এলাকায় ২০২৫ সালের মধ্যে বর্জ্য প্লাস্টিক বোতলের ৯০ শতাংশ সংগ্রহ করে পুনরায় ব্যবহার করার জন্য নির্ধারণ করেছে।
প্লাস্টিক দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য গত বছর বিশ্ব পরিবেশ দিবসের থিমই ছিল ‘বিট প্লাস্টিক পলিউশন’। আয়োজক দেশ ছিল ভারত। সচেতনতার জন্য ৩ জুলাই দিনটি পালন করা হয় বিশ্ব প্লাস্টিক ব্যাগ মুক্ত দিবস হিসেবে। কিন্তু সত্যিই কতটা কমানো গিয়েছে বা যাচ্ছে প্লাস্টিক দূষণ?
হাছননগর, সুনামগঞ্জ থেকে
শীর্ষ সংবাদ: