ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর

প্রকাশিত: ১১:৩৮, ৫ ডিসেম্বর ২০১৯

জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর

এখন দেশের হাটে-ঘাটে-মাঠে-প্রান্তরে সর্বত্রই প্লাস্টিক ও পলিথিনের ব্যবহার হচ্ছে-দিনে দিনে এই ব্যবহার পরিমাণ বেড়েই চলেছে-এর যেন আর কোন শেষ নেই, ফলে মানুষের জীবনে নেমে এসেছে অপরিসীম দুর্ভোগ। যখন প্লাস্টিক ছিল না তখন মানুষের মাঝে এই দুর্ভোগ ছিল না। কিন্তু এখন এই প্লাস্টিক ও পলিথিনের ব্যবহার বেড়েছে বটে- তবে মানুষের জীবনে রোগ শোক ব্যাধি বেড়েই চলেছে আর সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশেরও মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। এখনই যত্রতত্র প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করা না গেলে জনজীবনে আরও দুর্ভোগ নেমে আসবে এবং মানুষ দিনে দিনে আরও অনেক দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে অকালে মৃত্যুবরণ করবে। প্লাস্টিকের ব্যাগসহ অন্যান্য প্লাস্টিক সামগ্রী এখন বর্জ্য হিসেবে পুকুর, নদী, সাগরে ফেলে দেওয়া হয় আর মাছ সেই সব বস্তু ভক্ষণ করে মাছের মাইক্রো প্লাস্টিকের জন্ম দেয়। আর মানুষ যখন সেই মাছ খায় তখন ক্যান্সারসহ আরও অনেক দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয় আর অকাল মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এখনই নদী পুকুর আর সমুদ্রে প্লাস্টিক বর্জ্য নিক্ষেপ বন্ধ করা না গেলে দেশের মানুষ ক্যান্সারসহ এ ধরনের দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে অকাল মৃত্যুবরণ করবে। তাই যেভাবেই হোক এই বর্জ্য পুকুর, নদী, নালা ও সাগরে নিক্ষেপ করা বন্ধ করতে হবে। কঠোর আইন প্রণয়ন করে সেই আইন ত্বরিত প্রয়োগ করে এই অনাচারের হাত থেকে দেশের সাধারণ নিরীহ মানুষকে রক্ষা করতে হবে। প্লাস্টিকের বর্জ্য অতিদ্রুত পরিবেশ নষ্ট করে, তাই পরিবেশ উন্নত করতে হলে প্লাস্টিকের এই অপব্যবহার বন্ধ করা ছাড়া আর উপায় নেই। গৃহস্থালি ও বাণিজ্যে কাজে যে প্লাস্টিক ব্যবহার করা হচ্ছে তার পরিবর্তে পাটের ব্যাগ তৈরি করে অনায়াসে প্লাস্টিকের ব্যাগের পরিবর্তে ব্যবহার করা যায়। আইন করে পাটের ব্যাগ ব্যবহারের জন্য সকলকে বাধ্য করতে হবে। দুঃখজনক হলেও সত্য, অতীতে এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেও তা বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। আইন কঠোরভাবে তৈরি করে অবিলম্বে আইন বলবৎ করলে এই অপরাধ কমতে থাকবে এতে কোন সন্দেহ নেই। দেশ এখন ভয়াবহ পরিবেশ দূষণের স্বীকার আর প্লাস্টিকের বর্জ্যই এই পরিবেশ দূষণের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী। শুধু আইন করেই এই অপকর্ম বন্ধ করা যাবে না, এর জন্য চাই গণসচেতনতা। দেশের মানুষ যদি সচেতন না হয়- সকলে একযোগে এই অপকর্ম বন্ধ করতে এগিয়ে না আসেন তাহলে প্লাস্টিকের অপব্যবহার বন্ধ করা যাবে না। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনী অপরাধ দমনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে থাকেন, তাই এই অপরাধ দমনে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতকে শক্ত করতে হবে। মিডিয়াতে প্লাস্টিকের দ্রব্যাদি ব্যবহারের অপকারিতার কথা প্রচার করতে হবে- বিশেষ করে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের মাঝে এই প্রচারণা চালাতে হবে। প্রচারণায় প্লাস্টিক ব্যবহারের কুফল সঠিকভাবে তুলে ধরতে হবে। তাই সমাজের সুশীল সমাজ এই কাজটি করার জন্য সকলের আগে এগিয়ে আসতে পারেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে পরিবেশ রক্ষা করার জন্য যে বা যারা জড়িত আছেন তাদের সকলকেই এ বিষয়ে গুরুত্বসহকারে এখনই নজর দিতে হবে। শুধু পাটের তৈরি জিনিসেই প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হবে এমন কোন কথা নেই অন্য উপায়ে তৈরি ব্যাগ যেমন- কাগজ, কাপড়, পারটেক্স ইত্যাদি দিয়ে তৈরি করা ব্যাগ ও ব্যবহার করা যায়- এতে পরিবেশ দূষণের মারাত্মক কুফল হতে দেশ বেঁচে যাবে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। কলাবাগান, ঢাকা থেকে
×