ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ প্লাস্টিক দূষণ

প্রকাশিত: ১১:৩৮, ৫ ডিসেম্বর ২০১৯

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ প্লাস্টিক দূষণ

ঢাকাসহ বড় বড় নগরীতে শুধু নয়, দেশের সর্বত্রই এখন ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে প্লাস্টিকের বিভিন্ন পণ্য। বোতল, থালা-বাটি, গ্লাস, খেলনা, ফুল, আসবাবপত্র, গৃহসামগ্রী দরজা-জানালা, খাবার ও পণ্যের মোড়ক, মাদুর এমনকি পরিবেশ রক্ষাকারী গাছের গোড়ায়ও দেখা যায় প্লাস্টিকের টব। আমেরিকার ক্যান্সার ইনস্টিটিউট ক্যান্সারের যে আটটি কারণ উল্লেখ করেছে, প্লাস্টিক তার মধ্যে অন্যতম। আমাদের এই বাংলাদেশে নিয়মিত প্লাস্টিক পদার্থের ব্যবহার প্লাস্টিক দূষণের মাত্রাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে। প্লাস্টিকের এমন ব্যবহারে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকিও। পরিবেশবিদ ও চিকিৎসকরা বলেছেন, পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ প্লাস্টিক পণ্য। অসচেতনতা ও শিক্ষার অভাবের কারণেই মানুষ এগুলো দেদার ব্যবহার করেই যাচ্ছে। যতদূর জানা যায়, প্লাস্টিক পণ্য কোনদিন পুরোপুরি মাটির সঙ্গে মেশে না। না জেনে, না বুঝে এগুলো ব্যবহার করে মানুষ নিজে নিজেই নিজের সর্বনাশ ডেকে আনছে। ব্যবহারের পরে রাস্তাঘাটে, ড্রেনে, খালে, ডোবায়সহ এখানে সেখানে প্লাস্টিকের বোতল ও পলিথিন ছুড়ে মারছে। পাঁচতলায় বসে গৃহিণী প্লাস্টিকের বোতলের কোকটা খেয়ে অতঃপর খালি বোতলটা রাস্তায় ছুড়ে মারে। দেখা গেল, প্লাস্টিকের বোতলটা কারও মাথায় গিয়ে পড়ল। মানুষ নিকৃষ্ট হওয়ার কারণেই এমনটাই আজকাল করে যাচ্ছে। কেউ হয়ত জানেন, আবার কেউবা জানেনই না, রাস্তা, ফুটপাত, নর্দমা, ড্রেন হয়ে নদী-নালা ও সমুদ্রে এই প্লাস্টিকের বোতলসহ বিভিন্ন সামগ্রী ছড়িয়ে পড়ে জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করে দিয়ে যাচ্ছে। প্রতি বছর লাখ লাখ টন প্লাস্টিক সামগ্রীর পাশাপাশি পলিথিন বর্জ্য নদী ও সমুদ্রে চলে যাচ্ছে। প্লাস্টিক ও পলিথিন পানি, মাটি ও পরিবেশের ভয়াবহ ক্ষতি করছে। যেখানে সেখানে পলিথিন ও প্লাস্টিক পণ্য ফেলে মানুষ নিজেই নিজের বিপদ ডেকে আনছে- তা মানুষ একটিবারের জন্যও ভেবে দেখছেন না। কতটা নির্বোধ হতে পারে- তা ভাবতে গেলে কষ্ট লাগাই স্বাভাবিক! অতি সত্বর, প্লাস্টিকের দূষণ বন্ধ করা জরুরী প্রয়োজন। এ জন্য প্রথমে মানুষকে সচেতন করে তোলার জন্য বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচার করতে হবে - প্লাস্টিকের সামগ্রী ব্যবহার মানবদেহে কি কি ক্ষতি করে; পরিবেশ যে দূষণ করছে- এ লক্ষ্যে কাজ করে জনগণকে বোঝাতে হবে। তা না হলে প্লাস্টিকের ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের পরিবেশের ওপর। পরিবেশবান্ধব উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় দেশের সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে এটা সত্য, তবে তা নিশ্চিত করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা সবচেয়ে বেশি জরুরী। প্লাস্টিক ও পলিথিন ব্যবহারবিরোধী জন-সক্রিয়তা গড়ে তোলা সম্ভব হলেই প্লাস্টিক ব্যবহার প্রতিরোধ সহজ হবে এবং আমরা পরিবেশ দূষণ ও ক্ষতিকর দিক থেকে রক্ষা পাব। ঢাকা থেকে
×