ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিতর্কিতদের দলে টানবেন না ॥ ওবায়দুল কাদের

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ৩ ডিসেম্বর ২০১৯

বিতর্কিতদের দলে টানবেন না ॥ ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব সংবাদদাতা, নড়াইল ॥ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, “ বাংলাদেশ নেতা তৈরীর বিশাল কারখানায় পরিনত হয়েছে। কর্মী উৎপাদন কমে গেছে। আগে দলে কর্মীর সংখ্যা বেশি ছিল এখন সময় পাল্টে গেছে। এখন নেতার সংখ্যা বেশি হয়ে গেছে। যে সকল নেতারা নিয়োগ বানিজ্য করে তারাই কর্মীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে।” দুর্নীতিবাজরা আমাদের নজর দারিতে আছে। দলে শুদ্ধি অভিযান চলছে, দুর্নীতিবাজদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না। সময় মতো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। দলে সৎ ও ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সন্ত্রাস-দূর্নীতি,মাদক ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন। এ শুদ্ধি অভিযান সবাই মিলে সফল করতে হবে।দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক বলেন,দূর্নীতিকে না বলুন,সন্ত্রাসকে না বলুন,মাদককে না বলুন, টেন্ডারবাজিকে না বলুন, চাঁদাবাজিকে না বলুন। আজ মঙ্গলবার সাড়ে ১১ টায় নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সুলতান মঞ্চে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলন উপলক্ষে কলেজ মাঠের সুলতান মঞ্চ চত্বরে নৌকার আদলে সুদৃশ্য মঞ্চ তৈরি করা হয়। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিতর্কিতদের দলে টানবেন না। আওয়ামী লীগে হায়ার করা কর্মীদের আনার দরকার নেই। ত্যাগী নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে আত্মীয় স্বজনকে আওয়ামী লীগের কমিটিতে আনা চলবে না। ত্যাগী দলীয় নেতা-কর্মীদের কোনভাবেই কোনঠাসা করা চলবে না । দু:সময়ের কান্ডারী কর্মীদের যথাযথ মূল্যায়ন করে দলে তাদের যথযথ স্থানে ঠাঁই দিতে হবে। দলীয় সভা-সমাবেশে ব্যানার, পোষ্টার, ফেষ্টুন, তোরণ কম বানিয়ে সেই টাকা অসহায়-দু:স্থ নেতা-কর্মীদের পিছনে ব্যয় করার পরামর্শ দেন তিনি। আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক বলেন, দূরের স্বপ্নকে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা কাছে নিয়ে এসেছেন। পদ্মা সেতু নির্মাণ,ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ,রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপন, পায়রা সমুদ্র বন্দর স্থাপন, ঢাকায় মেট্রোরেল চালুর পদক্ষেপ, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ,সমুদ্র বিজয়সহ নানা উন্নয়ন এর প্রমাণ বহন করে। দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে পৌঁছে গেছে।তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন বলে উন্নয়নে বাংলাদেশ বিশ্বের রোল মডেল। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন বলে জাতির পিতার হত্যাকারীদের এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা সম্ভবপর হয়েছে। মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে সেদিন ভেবেছিল এদেশ থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলা যাবে। কিন্তু ঘাতকরা সেটা পারেনি। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে,ততদিন বঙ্গবন্ধু চিরভাস্বর হয়ে থাকবেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দলের দু:সময়ের সাহসী কান্ডারী বলে তিনি উল্লেখ করেন। সম্মানীত অতিথির বক্তৃতায় আওয়ামীলীগের যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, বিএনপি আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করলে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া হবে। নৈরাজ্য সৃষ্টি করে বিএনপি ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে। বিএনপি বিচার মানে না, আদালত মানে না। বিএনপি যদি রাজনৈতিকভাবে আন্দোলন করে, আমরা তা রাজনৈতিকভাবেই মোকাবেলা করবো। কিন্তু তারা যদি আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করে,তাহলে সমুচিত জবাব দেয়া হবে। জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য্য। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক আব্দুর রহমান। সম্মানীত বক্তা ছিলেন শেখ তন্ময় এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন জাতীয় সংসদের হুইপ, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, আওয়ামী লীগের কার্য্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এসএম কামাল হোসেন,পারভীন জামান কল্পনা। বিশেষ বক্তা ছিলেন নড়াইল-১ আসনের সংসদ সদস্য জননেতা কবিরুল হক মুক্তি,বাংলাদেশ ক্রিকেট ওয়ানডে দলের অধিনায়ক ও নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মোর্তজা। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাস, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌর মেয়র মো: জাহাঙ্গীর বিশ্বাস। সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন খান নিলু। সম্মেলনে সভাপতি পদে ৪৭ জন এবং সাধারন সম্পাদক পদে ৩০ জন দলীয় মনোনয়ন পত্র জমা দেন। সম্মেলন শেষে নতুন কমিটির সভাপতি হিসেবে বর্তমান সভাপতি এ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, সাধারন সম্পাদক হিসেবে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন খান নিলু, যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক হিসেবে পৌর মেয়র মো: জাহাঙ্গীর বিশ্বাস এবং আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কার্য্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে বর্তমান কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানের নাম ঘোষনা করেন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
×