ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

২৬ জেলায় পেট্রোল পাম্প ধর্মঘট দ্বিতীয় দিনে ॥ ভোগান্তি চরমে

প্রকাশিত: ২৩:৩৫, ২ ডিসেম্বর ২০১৯

২৬ জেলায় পেট্রোল পাম্প ধর্মঘট দ্বিতীয় দিনে ॥ ভোগান্তি চরমে

অনলাইন রিপোর্টার ॥ তেল বিক্রির কমিশন বৃদ্ধিসহ ১৫ দফা দাবিতে পেট্রোল পাম্প ধর্মঘটে টানা দ্বিতীয় দিনের মত রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগে জ্বালানি তেল বিক্রি বন্ধ রয়েছে। বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংক লরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ ও জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতির ডাকে ২৬ জেলায় অনির্দিষ্টকালের এই কর্মবিরতির কারণে তেলে চালিত যানবাহন একপ্রকার বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ জনগণ। আজ সোমবার ঢাকার সেগুনবাগিচায় পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংক লরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সাথে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছ। গত ২৬ নবেম্বর বগুড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ১ ডিসেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের এই ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছিলেন পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও ট্যাংক লরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় মহাসচিব ও রাজশাহী বিভাগীয় সভাপতি মিজানুর রহমান রতন। সে অনুযায়ী তিন বিভাগের সব জেলায় রবিবার সকাল থেকে পেট্রোল পাম্পে তেল বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পাশাপাশি পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা তেল ডিপোর শ্রমিকরা তেল উত্তোলন, বিপণন ও সরবরাহ বন্ধ রাখায় ২৬ জেলায় জ্বালানি তেল সরবরাহও বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিপাকে পড়েন গাড়ি চালকরা। পাম্পে এসে তেল না পেয়ে তাদের ফিরে যেতে হয়। পাম্পগুলোতে ১৫ দফা দাবি সম্বলিত পোস্টার টাঙিয়ে রাখতে দেখা যায়। তেল না পেয়ে রবিবার দুপুরের পর থেকেই উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলাগুলোতে যাত্রীবাহী বাসের সংখ্যা কমে যা্য়। বিভিন্ন পরিবহন সংস্থার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যেসব বাস গ্যাসে চলে কেবল সেগুলোই তারা চালাতে পারছেন। পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংক লরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ সূত্রে জানা যায়, তাদের ১৫ দফা দাবি পূরণ করতে সরকারকে ৩০ নবেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জ্বালানি মন্ত্রণালয় কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় তারা ধর্মঘটে যেতে ‘বাধ্য হয়েছেন’। তাদের ১৫ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- জ্বালানি তেল বিক্রিতে কমপক্ষে সাড়ে ৭ শতাংশ কমিশন দেওয়া, জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা কমিশন এজেন্ট নাকি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান- বিষয়টি সুনির্দিষ্ট করা, প্রিমিয়াম পরিশোধ সাপেক্ষে ট্যাংকলরি শ্রমিকদের জন্য ৫ লাখ টাকার দুর্ঘটনা বীমা, ট্যাংকলরির ভাড়া বৃদ্ধি, পেট্রোল পাম্পের জন্য কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের লাইসেন্স গ্রহণের নিয়ম বাতিল, পেট্রোল পাম্পের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্স নেওয়ার নিয়ম বাতিল, পেট্রোল পাম্পে অতিরিক্ত পাবলিক টয়লেট করা, জেনারেল স্টোর ও ক্লিনার নিয়োগের বিধান বাতিল করা, সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃক পেট্রোল পাম্পের প্রবেশ দ্বারের ভূমির জন্য ইজারা নেওয়ার নিয়ম বাতিল, ট্রেড লাইসেন্স ও বিস্ফোরক লাইসেন্স ছাড়া অন্য দপ্তর বা প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নেওয়ার নিয়ম বাতিল, আন্ডারগ্রাউন্ড ট্যাংক ৫ বছর অন্তর বাধ্যতামূলকভাবে ক্যালিব্রেশনের নিয়ম বাতিল, ট্যাংকলরি চলাচলে পুলিশি হয়রানি বন্ধ করা, সুনির্দিষ্ট দপ্তর ছাড়া ডিলার বা এজেন্টদের অযথা হয়রানি বন্ধ করা, নতুন কোনো পেট্রোল পাম্প নির্মাণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় জ্বালানী তেল মালিক সমিতির ছাড়পত্রের বিধান চালু করা, পেট্রোল পাম্পের পাশে যে কোনো স্থাপনা নির্মাণের আগে জেলা প্রশাসকের অনাপত্তিপত্র গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা এবং বিভিন্ন জেলায় ট্যাংকলরি থেকে চাঁদা গ্রহণ বন্ধ করা।
×