ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

হাজার কোটি টাকার জমি কাজে লাগাতে পারছে না বিমান ॥ বছরে বিপুল অর্থ আয়ের সুযোগ

প্রকাশিত: ১১:০০, ২৩ নভেম্বর ২০১৯

 হাজার কোটি টাকার  জমি কাজে লাগাতে পারছে না বিমান ॥ বছরে বিপুল  অর্থ আয়ের  সুযোগ

আজাদ সুলায়মান ॥ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ঠিক নাকের ডগায় বিমানের ১৫ একর জমি। বর্তমান বাজার মূল্যে তার দাম হাজার কোটি টাকা। সিভিল এভিয়েশনের কাছ থেকে এমন মূল্যবান জমি লিজ নিয়েছিল বিমান। কিন্তু বিমান টানা ২০ বছরেও ওই জমিতে কিছু করতে পারেনি। বিশ বছরেও এমন হীরের টুকরোর মতো জমি বিমান কাজে লাগাতে পারেনি। না পেরেছে হাউজিং করতে, না পেরেছে বাণিজ্যিকভাবে কোন স্থাপনা নির্মাণ করতে। অলস পড়ে থাকায় সিভিল এভিয়েশন তা ফিরিয়ে নেয়। এরপর যে যেভাবে পেরেছে- সেভাবেই ওই জমি ব্যবহার করেছে। বিমানের এমন হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি যুগ যুগ ধরে পড়ে আছে পরিত্যক্ত অবস্থায়। ঢাকার মতিঝিল, ফার্মগেট, ধানম-ি, সাভারের আশুলিয়া, খুলনায়, চট্টগ্রাম, যশোর ও সিলেটে রয়েছে শত শত কোটি টাকার জমি। এমন সব দামী জমি বাণিজ্যিকভাবে কাজে লাগাতে না পারায় অনেক ক্ষেত্রেই তা বেহাত হয়ে যাচ্ছে। উদাহরণ খোদ ধানম-ির ১৪ কাঠা জমি। যুগের পর যুগ ধরে এ জমি দখলদারদের অধীনে থাকলেও বিমান তা উদ্ধারে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। উপরন্তু মামলা মোকদ্দমা করে এমনভাবে আইনী লড়াই করেছে যাতে দখলকারীরাই সুবিধাভোগী হয়েছে। আইন শাখার অসাধু কর্তাদের যোগসাজশে যুগ যুগ ধরে মামলা করেও সফল হয়নি। শেষ পর্যন্ত বর্তমান বিমান সচিব মহিবুল হকের নির্দেশে বিমানের ম্যাজিস্ট্রেট গত সপ্তাহে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে তা উদ্ধার করেন। এমন আরও শত কোটি টাকা মূল্যের জমি সম্পদের সদ্ব্যবহার করতে পারছে না বিমান। সুষ্ঠু পরিকল্পনা, সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্বান্ত নিতে ব্যর্থতা ও দায়বদ্ধতার অভাবে বিমান গত চার দশকেও হীরের টুকরোর মতো দামী এসব জমির বাণিজ্যিক সুফল ভোগ করতে পারেনি। এ বিষয়ে সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ নাসির উদ্দিনের মতে, বিমানের নাকি তহবিল সঙ্কট লেগেই থাকে। অথচ বিমানের যেসব প্রপার্টি রয়েছে- সেগুলো যদি শুধু ভাড়া দেয়া কিংবা বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ করতে পারত, তাহলে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী এয়ারলাইন্সে পরিণত হতো বিমান। তবুও আশার উপায়- বিলম্বে হলেও বর্তমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী ও সচিব মহিবুল হক এমন একটি উপেক্ষিত বিষয়ে নজর দিয়েছেন। ইতোমধ্যে তারা ধানম-ির জায়গা উদ্ধার করে নাড়া দিয়েছেন। বিমান প্রশাসন শাখার একটি সূত্র জানায়, জমি-জমার দখল পাল্টা দখল নিয়ে মামলা মোকদ্দমা করেও বার বার হেরে যায় বিমান। অভিযোগ রয়েছে, বিমানের আইন শাখার একটি অসাধু চক্র যুগ যুগ ধরে মামলা নিষ্পত্তির চেয়ে জিইয়ে রাখে উভয়পক্ষের কাছ থেকে সুবিধাভোগী। তাদের কারণেই বার বার সব মামলায় হারে বিমান। বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরে সচিব মহিবুল হক এসব বেহাত জমি উদ্ধারের মিশনে মাঠে নামেন। তার সার্বিক নজরদারি ও তদারকিতে বিমান এ ধরনের সব জমি সম্পদ ও স্থাপনা উদ্বারে আরও কঠোর হবে বলে জানিয়েছেন। দৈনিক জনকণ্ঠকে তিনি বলেন, অপেক্ষা করেন। দেখতে পাবেন অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে এসব সম্পদ বাণিজ্যিকভাবে কাজে লাগানোর উপযুক্ত পদক্ষেপ। আশকোনায় হাজার কোটি টাকার জমি বেহাত হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাকের ডগায়, গোলচক্করের পূর্ব পাশে রেললাইন সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে ১৫ একর আয়তনের বিশাল সবুজ মাঠ। যার বর্তমান বাজারদর হাজার কোটি টাকার ওপর। জাতীয় পতাকাবাহী বিমানকে আরও শক্তিশালী ও মানসম্পন্ন করতে নব্বই দশকের শুরুতেই এমন হীরের ভা-ারসম সুবিশাল মাঠ ২০ বছরের জন্য লিজে দেয় সিভিল এভিয়েশন। বিমানকে এত সুদীর্ঘ সময় দেয়া হয় যাতে সুপরিকল্পিতভাবে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন কোন তারকা খ্যাতির হোটেল মোটেল, আবাসিক স্থাপনা বা অন্য কোন লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজে লাগাতে পারে। দুর্ভাগ্য বিমানের। সুদীর্ঘ বিশ বছরেও বিমানের সংশ্লিষ্ট কেউ ওই জমি নিয়ে কিছু করার পরিকল্পনা করা তো দূরের কথা-ভাবতেও পারেননি, এমন জমিতে কি করতে হবে। অথচ একজন রিক্সাচালকও ওই জমির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দেখে মন্তব্য করত এমন বিশাল মাঠ কেন এত বছর ধরে পরিত্যক্ত ফেলে রাখা হচ্ছে। কিছু করবে দূরের থাক- ওই জমির সুরক্ষাও করতে পারেনি। চারদিকে কচুরিপানা, জলাশয়, গরু-ছাগলের দৌড়াদৌড়ি আর রাতের আঁধারে অসামাজিক কার্যকলাপ ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়েনি। এ অবস্থায় পরিত্যক্ত এ জমির ওপর লুলুপ দৃষ্টি তো ছিলই দেশী-বিদেশী মাফিয়া চক্রের। বার বার প্রভাবশালী ভূমি দস্যুদেরও আগ্রাসন ছিল। তারপরও টনক নড়েনি বিমানের। লিজের মেয়াদ যখন শেষ হয়ে আসছিল তখন তাড়াহুড়ো করে বিমান মাঠের উত্তর পাশ ঘেষে দ্রুত কিছু আবাসিক কোয়ার্টার ও একটি মেডিক্যাল সেন্টার তৈরির উদ্যোগ নেয়। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। সিভিল এভিয়েশন শেষ পর্যন্ত ওই জমি ফিরিয়ে নেয়। এখন বিমান সেখানে মাত্র বিঘা চারেক জমি কোনক্রমে দখলে রাখতে পেরেছে। বাকি কিছু জমিতে দুটো খ্যাতিমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করেছে সরকারের অন্য একটি মন্ত্রণালয়। কিছু জমিতে সিভিল এভিয়েশন নিজেই এভিয়েশন ইউনিভার্সিটি নির্মাণের জন্য সুরক্ষিতকারে সাইনবোর্ড লাগিয়েছে। বাকি জমিতে চলে সারাবছর গান বাজনা, মেলা, ওরসসহ অন্যান্য কার্যক্রম। যে যেভাবে পারছে সেভাবেই ব্যবহার করছে। এত বিশাল আকারের জমি রাজধানীর কোথাও নেই বলে দাবি করে বিমানের একজন সাবেক পরিচালক বলেন, এখানে ইচ্ছে করলে একটা স্টেডিয়াম করার মতো জমি ছিল। কিন্তু বিমান সেটাকে না পেরেছে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করতে, না পেরেছে দখলস্বত্ব ধরে রাখতে। বিগত তিন দশকে বিমানের কেউ তা নিয়ে বিন্দুমাত্র চিন্তাও করেনি। যে কারণে বিশ বছর পর সিভিল এভিয়েশন ওই জমি ফিরিয়ে নিয়েছে। এটা যে কতটা ক্ষতিকর হয়েছে বিমানের জন্য এটাও বুঝতে পারছেন না কর্তা ব্যক্তিরা। এ সম্পর্কে বিমানের সাবেক এমডি শেখ নাসির বলেন, নিজস্ব তহবিল না থাকলেও দেশী-বিদেশী বিনিয়োগের সহায়তায় যৌথভাবে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হোটেল মোটেল ও শপিংমল করলেও যে আয় রাজস্ব আসত তা দিয়েই আকাশছোঁয়া বাণিজ্য করতে পারত বিমান। এই একটি প্রজেক্ট দিয়েই বিমান হতে পারত দক্ষিণ এশিয়ার শক্তিশালী এয়ারলাইন্স। দুর্ভাগ্য এখন জমি বেহাত হয়ে যাওয়ায় বিমান আফসোস ছাড়া কিছুই করতে পারছে না। আশুলিয়ায় দুই শ’ বিঘায় আলু পটোলের চাষ আশুলিয়ার গনকবাড়ি শিল্প এলাকায় যেখানে শিল্প পুলিশের ইউনিট ঠিক তার নাকের ডগায় রয়েছে বিমানের প্রায় দুই শ’ বিঘা জমি। ওই এলাকায় এত বড় জমি আর চোখে পড়ে না। শিল্প প্লট হিসেবে এরও বাণিজ্যিক মূল্য প্রায় হাজার কোটি টাকা। দুর্ভাগ্য বিমানের। বিপুল বাণিজ্যিক সম্ভাবনার এমন জমিটুকুর সঠিক সদ্ব্যবহার করতে পারছে না বিমান। বিমান এখানে গড়ে তোলে পোল্ট্রি ফার্ম। যার জন্য কোন মেধাবী প-িত বা জ্ঞানীর দরকার পড়ে না। এখানে চলে গরু-ছাগল আর মাছ-মুরগি ও আলু পটোলের চাষ। যা রহিম আলী আর করিম আলীরাই পারে। বিমান তাতেই খুশি। এত বিশাল জমি ব্যবহার করে বিমান বর্তমানে বছরে মাত্র ৩ কোটি টাকা আয় করছে। অথচ হাজার কোটি টাকার এ জমির উপযুক্ত বাণিজ্যিক ব্যবহার করা গেলে বিমানের হাজার কোটি দেনা এক মাসেই পরিশোধ করা সম্ভব। এ নিয়ে বিমানের কারোর মাথা ব্যথা নেই। যে কারণে বিভিন্ন সময় অগণতান্ত্রিক সরকারের আমলে বিভিন্ন সংস্থার লুলুপ দৃষ্টি পড়ে এ জমির ওপর। এ জমিকে সোনার খনির সঙ্গে তুলনা করে এখানকার সাবেক উপ-মহাব্যবস্থাপক জহিরুল হক বলেন, বিমান চাইলে এক বছরেই এখানে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলে বছরে শত শত কোটি টাকা আয় করতে পারে। একবার থাইল্যান্ডের একটি বহুজাতিক কোম্পানি এমন একটি কিছু করার আগ্রহ প্রকাশ করলেও বিমান তা নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। শুধু আলু পটোল আর লেবু চাষ করেই যেন বিমান বড্ড খুশি। ফার্মগেটের জমিও অলস রাজধানীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও দামী এলাকা ফার্মগেটে বিমানের নিজস্ব ৩ বিঘা জমি রয়েছে। এখানে আগে ছিল একটা মেডিক্যাল সেন্টার। সেটা আশকোনায় সরিয়ে নেয়ার পর এখন শুধু আছে একটা প্রিন্টিং প্রেস- যেখানে বিমানের নিজস্ব ছাপাখানা হিসেবে অফিসিয়াল কাজ সম্পন্ন করা হয়। এ জমির মূল্যও পাঁচ শ’ কোটি টাকার মতো। এত দামী জায়গায় শুধু একটা ছাপাখানায় ব্যবহার করা হচ্ছে। বিজনেস প্রোডাকটিভিটি বলতে যা বুঝায় তা নেই। ব্যবসায়ীদের মতে, এখানে সুউচ্চ বহুতল ভবন নির্মাণ করে ভাড়া দিলেও যা আয় হতো তা দিয়েই বিমানের এক বছরের বেতন হয়ে যেত। বিমানের নজর নেই সেদিকে। কর্তৃপক্ষের এমন উদাসীনতায় ওই জমির সামনের প্রবেশ পথের কিয়দংশ দখল করে নিয়েছে পাশের এক বাড়িওয়ালা। বিমান তাতে বাধাও দেয়নি প্রতিবাদও করেনি। এ বিষয়ে বিমানের ওয়ার্কস বিভাগে কর্মরত এক সময়ের ম্যানেজার ফজলুর রহমান বলেন, শুধু দূরদর্শিতা আর বিজনেস পলিসির কারণে বিমান এত দামী জমিও কাজে লাগাতে পারছে না। এর চেয়ে আর দুর্ভাগ্য কি হতে পারে। যদি আমাকেও দায়িত্ব দেয়া হতো তাহলেও এ জমি কাজে লাগিয়ে গোটা বিমানের বেতন ভাতাদি পরিশোধ করার মতো অবস্থায় নিয়ে যেতে পারতাম। ধানম-ির জমি উদ্ধার বিস্ময়কর ধানমন্ডিতে বিমানের ১৪ কাঠা জমি বিগত তিন দশক ধরেই সুযোগ সময় মতো যে যেভাবে পেরেছে দখলে নিয়ে ব্যবসা করেছে। বিমান মামলা মোকদ্দমার নামে ভানুমতির খেলা খেলেছে। অভিযোগ আছে আইন শাখার অসাধু ব্যক্তিদের কারসাজিতে বিমান জিততে পারেনি। এত দামী জমির এমন বেহাল অবস্থা দেখে সচিব মহিবুল হক বিস্মিত হয়ে বিমানের পরিচালক প্রশাসন জিয়াউদ্দিনকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে জমি উদ্ধারের নির্দেশ দেন। এরপর এ মাসের শুরুর দিকে ওই জমি উদ্ধার করে বিমানের হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়। বিমান চল্লিশ বছরে যা পারেনি- সচিব মহিবুল হক এক দিনেই তা পুনরুদ্ধার করে দেখালেন। মতিঝিলের জমি থেকেও তেমন রাজস্ব নেই রাজধানীর মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকার জমি সবচেয়ে দামী। এখানে এক কাঠা জমি ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকায় বিক্রি হয়। দাম দিলেও জমি মিলে না। এমন এলাকায় বিমানের রয়েছে ১৮ কাঠার জমির ওপর সামান্য একটা ভবন। যার সামান্য কিছু অফিসিয়াল কাজে আর বাকিটুকু ভাড়া দিয়ে সামান্য কিছু আয় করছে বিমান। এ জমিতে বহুতল ভবন করা গেলে প্রতিমাসে শত শত কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের বিরল সম্ভাবনা রয়েছে। তারপরও এটা বিমান উপলব্ধি করতে পারছে না। যে কারণে অতীতে সংশ্লিষ্ট কেউ এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ বা পরিকল্পনা নেয়নি। এত দামী জমির সদ্ব্যবহার করতে না পারাটা একটা দুর্ভাগ্য বলে মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী। তিনি বলেন, শুধু মতিঝিলের জমি ব্যবহার বা ভাড়া দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করে বিমানের তহবিল শক্তিশালী করা সম্ভব। বিমান সেটাও করছে না। খুলনা যশোরের জমিও পরিত্যক্ত দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম বাণিজ্যিক নগরী খুলনা ও যশোরে রয়েছে বিমানের বিঘা চারেক জমি। দুই শহরেই গুরুত্বপূর্ণ লোকেশনে এ দুটো জমি থাকলেও সেখান থেকে কোন বাণিজ্যিক ফায়দা লুটতে পারছে না বিমান। দুই জায়গাতেই পুরনো দুটি ভবন বিমানের বাণিজ্যিক অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বাকি জমিটুকু রয়েছে পরিত্যক্ত অবস্থায়। এ দুটি জমির বাণিজ্যিক ব্যবহার করার জন্য অনেকের আগ্রহ থাকলেও বিমানের কারোর কোন নজর নেই এদিকে। সরকারী চাকরির মতোই বিমানের হর্তাকর্তারা নয়টা পাঁচটা অফিস করে ঘরে ফেরেন। কোন জমি কিভাবে কাজে লাগিয়ে বিমানের রাজস্ব আদায় করে লাভজনক করা যায় এমন চিন্তা নেই ও দায়বদ্ধতা নেই কোন কর্তার। ফলে দুর্বৃত্ত আর ভূমিদস্যুরা বার বার এ দুটি জমি দখলের চেষ্টা চালায়। এতে এই দুটো জমির ভবিষ্যতও অনিশ্চিত। এত সব ঘটার পরও বিমান তার সঠিক সদ্ব্যবহার করতে পারছে না। যশোরের পুকুরের স্থানীয় সন্ত্রাসীরা একচেটিয়া মৎস্য চাষ করে লাভবান হচ্ছে। সিলেটেরও একই দূরবস্থা। বিমানবন্দর থেকে শহরে যাওয়ার পথে প্রাইম লোকেশনে বিমানের রয়েছে নিজস্ব কিছু পরিমাণ জমি। যেখানে বর্তমানে নামকাওয়াস্তে বিমানের একটা অফিস রয়েছে। এ জমির বাণিজ্যিক ব্যবহারে জন্য অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করলেও কর্তৃপক্ষের কোন চিন্তা নেই। এ নিয়ে চলছে ক্ষোভ আর ক্ষোভ। এ সব বিষয়ে জানতে চাইলে সচিব মহিবুল হক বলেন, অতীতে কোন কাজই হয়নি। এখন আমরা মাঠে নেমেছি বিমানের জমি সম্পত্তি উদ্ধারে। যেখানে যত বড় প্রভাবশালীই হোক- না কেন, এ জমি উদ্ধার করে সঠিক বাণিজ্যিক ব্যবহারই করা হবে। অপেক্ষায় থাকুন সবই দেখতে পাবেন।
×